ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? এমন প্রশ্নে হরহামেশাই সবাই ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার,পাইলট হতে চায়।খেলাধুলার দিকে খুব বেশিমানুষ আগ্রহী নয় এর কারণ কি?ক্রিড়াক্ষেত্রে সুযোগ কম এমন একটি বিষয় নজরে আসে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশুনা করে একটা মেডিকেল না হলে ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডমিশন দিব এমন ধারণা থাকে প্রায় সবার।ওখানকার পড়াশুনা শেষ করে ডাক্তার নাহলে ইঞ্জিনিয়ার হব। লাইফ সেটল্ড! আজকালকার বেশিরভাগ, বলতে গেলে সিংহভাগ কিশোরকিশোরীকেই এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে এর বাইরে উত্তর পাওয়া যাবে না।তারা কেউ এখন আর ক্রীড়াক্ষেত্রে বিখ্যাত হতে চায় না।পাব্লিসিটির দিন শেষ হয়ে গেছে, এখন সবার টাকার প্রয়োজন, সেই সাথে প্রয়োজন একটা নিশ্চিত কর্মক্ষেত্র!
আমাদের দেশের ক্রীড়াক্ষেত্র সেটির যোগান খুব ভালভাবে দিতে পারে না জন্যেই আজ এই বেহাল দশা।অবস্থা এমন যে তুমি সাকিব-তামিম হলে “স্বাগতম” আর নাহলে নিজের রাস্তা নিজে দেখ বাপু! উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছেন আমাদের নাসির হোসেন।যাকে একসময় বাংলাদেশের পরবর্তী সাকিব আল হাসান ভাবা হত, সেই এখন দলের বাইরে।বিবিসি একাডেমির বাইরে বললেও ভুল হবে না।আর প্রতি সিরিজেই অভিষেকের ছড়াছড়ি। ক্রিড়াক্ষেত্রে স্বচ্ছতার মাধ্যমে নবীনদের সুযোগ দিতে হবে তাহলেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ পাবে দারুন কিছু সাফল্য।
আমরা যদি সাম্প্রতিক সময়ের বাংলাদেশ দলের পারফর্মেন্স দেখি তাহলে কি দেখতে পাই?
•শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টি-টোয়েন্টিতে ৬ জন ক্রিকেটারের অভিষেক হয়েছে।
• টেস্ট সিরিজের জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার আগেই ডেকে আনা হয়েছিল নাঈম হাসানকে।
• ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা চিন্তা করেই তরুণদের সুযোগ দেওয়ার চিন্তা বোর্ডের।
* অবশ্য অভিষেক পর্যন্তই তাদের খুশি থাকতে হচ্ছে! তারপরে ওই যে একই নিয়মঃনিজের রাস্তা নিজে মাপ বাপু! আর ফুটবলের তো যাচ্ছেতাই অবস্থা। ভুটানের কাছে হারার পরে আড়াই বছরের জন্য নির্বাসিত ছিলাম আমরা।তবুও আশার বাতি যুব টুর্নামেন্টগুলোতে একটু একটু করর জ্বলতে দেখা যাচ্ছে! আর এসব দেখে অনেকেই তাদের আজন্ম লালিত স্বপ্ন গুলোকে বিসর্জন দিচ্ছে। সম্মান না আমাদের এখন সম্মানীর দরকার বেশি করে! আমাদের এসব থেকে বেরিয়ে আশা উচিত।এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে “বিকেএসপি“।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু খেলোয়াড় তৈরি করে ক্ষান্ত থাকলেই চলবে না।তাদের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা লাগবে! কিন্তু দুখের বিষয় হচ্ছে দুই একটা টুর্নামেন্ট ছাড়া আর কিছুর আয়োজন করাই হয় না আমাদের দেশে! আর সে জন্যেই দেশের মানুষ এত ক্রীড়াবিমুখ। অথচ পাশের দেশ ভারতের জাতীয় দলের বাইরে খেলোয়াররা টুর্নামেন্ট খেলতে খেলতে হাপিয়ে ওঠে! তাই আমাদের পার্থক্যটা বুঝতে হবে। ক্রীড়া অনুরাগীদের এ ক্ষেত্রে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। আর ক্লাব পাড়া গুলোর শুদ্ধি অভিযান চলমান রাখতে হবে। এবং একই সাথে এগুলোর কাঠামোগত পরিবর্ত এনে যোগ্য লোকদের হাতে দায়িত্ব বুঝে দিতে হবে। তাহলেই হয় তো বা একদিন ছেলেমেয়েদের জিজ্ঞেস করলে কেউ একজন বলে উঠবে ” পরবর্তী বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ঝান্ডা হাতে নিতে চাই!”
লেখকঃ শিক্ষার্থী
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ।