spot_img
More
    Homeবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিজ্ঞানের গপ্পোঃ হাতির টুথপেস্ট তৈরী

    বিজ্ঞানের গপ্পোঃ হাতির টুথপেস্ট তৈরী

    মেঘলা আকাশ, কিছুক্ষণ আগেও যেখানে আকাশটা পরিষ্কার ছিল। অথচ, হটাৎ করে আকাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেছে। জিহাদের আর বাইরে গিয়ে ক্রিকেট খেলা হলো না। তাই মন খারাপ করেই টিভি দেখছিল ৷ জিহাদের ডিস্কোভারি চ্যানেল টা অনেক প্রিয় ছিল। বড় বোন কথা’র সাথে বাসায় বসে তাই টিভি দেখে সময় কাটাচ্ছিল জিহাদ। টিভিতে হাতি দেখে জিহাদ হটাৎ প্রশ্ন করে তার আপুকে। “হাতির এতো বড় সাইজের দুটি দাঁত। যদি হাতির দাঁত মাঝানো হতো, তাহলে কি পরিমাণ টুথপেস্ট লাগবে আর টুথব্রাশ টা কি আমার থেকেও বড় হবে।” এমনই অদ্ভুত প্রশ্নে হেঁসে অদ্ভুত উত্তর দিয়েছিল কথা। হাতির জন্য টুথব্রাশ বানানো হলে তা তো্র থেকে বড় হবে নিশ্চয়ই। কিন্তু তুই কি রাজার হাতির টুথপেষ্ট দেখেছিস।

    মজার ছলে হাতির টুথপেষ্ট নতুন শব্দটি শুনে তা জানতে চায় জিহাদ, কারণ জানে তার আপু বিজ্ঞানের ফেরিওয়ালা। সব প্রশ্নের উত্তর তার ঝুলিতে পাওয়া যায়। কথা বললো,”চল তো, তোর মন খারাপ টাকে বিদায় জানাতে আজ আমি তোকে হাতির টুথপেষ্ট বানিয়ে দেখাবো।”

    এই হাতির টুথপেষ্ট বানাতে আমাদের যেসব উপকরণ গুলো লাগবে তা হলোঃ
    ১. ঘন হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড (১০-৩০%)
    ২. পটাশিয়াম আয়োডাইড
    ৩. ফুড কালার
    ৩. ২টি বিকার
    ৪. হ্যান্ড গ্লাভস
    ৫. চোখে গগলস

    যেহেতু আমার কাছে এখন এইসব উপকরণ নেই তাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে যেসব উপকরণ গুলো দিয়ে হাতির টুথপেষ্ট বানানো যাবে তা হলোঃ
    ১. শুকনো ইস্ট (এক ধরণের ছত্রাক যা মূলত পাউরুটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়)
    ২. লিকুইড সাবান
    ৩. ঘন হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড (২-৩%)
    ৪. ফুড কালার (লাল বা নীল খাবার রঙ)
    ৫. স্বচ্ছ কাঁচের পাত্র অথবা বোতল
    ৬. হালকা গরম পানি
    ৭. চা চামচ

    আরও পড়ুন

    উপকরণ জোগাড় শেষ, “এখন কিভাবে করবো ?” জানতে চাইলো জিহাদ। কথা বললো, “আমি কি কি করছি তা দেখতে থাকো, তাহলেই বুঝবে।”

    Elephant Toothpast তৈরির ভিডিও

    প্রথমে স্বচ্ছ কাঁচের পাত্রে কিছু পরিমাণের হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড নিবো আমরা। আমি এখানে এক গ্লাস পরিমাণ হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড নিলাম। এরপর কিছু পরিমাণে লিকুইড সাবান ভালমতো মেশাবো হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের সাথে। জিহাদ তোর প্রিয় রঙের নীল ফুড কালার কয়েক ফোটা তুই এই পাত্রে দে, যাতে এই হাতির টুথপেস্টটা দেখতে সুন্দর হয়। যেহেতু আমাদের কাছে পটাশিয়াম আয়োডাইড নেই, তাই আমরা শুকনো ইস্ট ও লিকুইড সাবান ব্যবহার করছি, বললো কথা। এবার, গরম পানিতে ইস্ট ঢেলে আরেকটি মিশ্রন তৈরি করি ছোট বাটিতে। একটু দূরে সরে দাড়াও, এখনি আমি দেখাতে যাচ্ছি রাজার হাতির টুথপেষ্ট।
    প্রথম পাত্রের হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, লিকুইড সাবান ও নীল খাবার রঙ মিশ্রিত পাত্রে তরল ইস্ট ঢেলে দেওয়ার সাথে সাথে মিশ্রনটি ফুলে ফেঁপে উঠে পাত্রের মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়লো। এটাই হলো রাজার হাতির টুথপেষ্ট, বললো কথা।

    জিহাদ অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে বললো, এতো ফেনা কিভাবে হলো আর এটা দিয়ে কি সত্যিই হাতির দাঁত মাজানো হয়?

    কথা হেঁসে উত্তর দিলো, আরে বোকা তুই যা ভাবছিস এমনটা কিছু না। যদিও জিনিসটা পেস্ট নয় তবে দেখতে টুথপেস্ট এর মতো আর ফেনার পরিমাণ সাধারণত একটি হাতির দাঁত ব্রাশ করার জন্য যথেষ্ট বলে মজা করে এর নাম দেওয়া হয় হাতির টুথপেস্ট বা Elephant Toothpaste

    সবচেয়ে বড় হাতির টুথপেষ্ট

    এটি একটি রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার ফলাফল যা প্রচুর পরিমাণে ওজন ফেনা তৈরি করে। লিকুইড সাবান ফেনার সৃষ্টি করে যা মূল পরীক্ষায় হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড এর সাথে ইস্টের মিশ্রণে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। ইস্ট হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড থেকে দ্রুত গতিতে অক্সিজেন মুক্ত করেছে। আর এই অক্সিজেন পাত্র থেকে বের হওয়ার সময় সাবান এবং খাবার রঙ থাকার কারণে রঙিন ফোম তৈরি করেছে।

    RELATED ARTICLES

    24 COMMENTS

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Most Popular