বাংলা ভাষা আমাদের প্রাণের ভাষা।এই ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে শহীদ হয়েছিলেন রফিক,শফিক,সালাম,বরকত,জব্বার প্রমুখ।আমরা প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি এলে তাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদীতে ফুল দেই।পৃথিবীতে একমাত্র জাতি হিসেবে আমরাই ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি এবং সেটাকে সম্মান জানিয়ে এখন সারাবিশ্বে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।সারা বছর আমরা যাই করিনা কেন ফেব্রুয়ারিতে অন্তত আমাদের মনের মধ্যে ভাষার প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়।এই সব কথা বিবেচনা করে ভাষা নিয়ে ছোটদের মাঝে চর্চার সুযোগ করে দিতে শুরু হয়েছিল ভাষাপ্রতিযোগ।আনিসুজ্জামান স্যারের সেই স্বপ্ন ও ভালোবাসার সাথে মিশে প্রথম আলোর আয়োজনে এবং এইচএসবিসির সহযোগিতায় এবার ১৪ তম বারের মত আয়োজিত হলো ভাষাপ্রতিযোগ জাতীয় উৎসব। এর আগে দেশের দশটি অঞ্চলে আয়োজিত হয়েছিল ভাষাপ্রতিযোগের আঞ্চলিক উৎসব।
রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজ শুক্রবার এইচএসবিসি-প্রথম আলো ভাষা প্রতিযোগের ১৪তম জাতীয় উৎসবের আসর বসেছিল।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণ ও মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় উৎসবে দেশের ১০ অঞ্চলের ছয় শতাধিক প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলো। সাথে ছিলো অগণিত উৎসাহী অভিভাবকেরা। দিনভর এ উৎসবে দেশের বরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও ভাষাবিদেরা উপস্থিত থেকে ভাষাপ্রেমীদের উৎসাহ দিয়েছেন।
সকালে বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। উদ্বোধনী পর্বে অংশ নেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস। এরপর হয় নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা।
উৎসবে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনের সঙ্গে ছিল উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ‘বানান বীর’ প্রতিযোগিতা। ১০ অঞ্চলের বিজয়ী ১০ প্রতিযোগী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বানান বীরের এ আয়োজন এবার তৃতীয় বর্ষে পড়েছে। প্রতিযোগিতাটি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। উৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের।
উৎসবে সংগীত পরিবেশন করে ব্যান্ড দল চিরকুট। আরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় তাসকিন আহমেদ ও টেন মিনিটস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আইমান সাদিকের।
আমাদের ছোট্ট বন্ধু সুদুর মানিকগঞ্জ থেকে আসা অনন্য যারিফ আকন্দ আঞ্চলিক উৎসবে বিজয়ী হয়ে এসেছিল জাতীয় উৎসবে অংশ নিতে এবং বরাবরের মতই আরসব প্রতিযোগিতার মত অনন্য তার অনন্য প্রতিভা দেখিয়ে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছে।
বিজ্ঞান গণিত আর ভাষা থেকে শুরু করে গানেও অনন্য সত্যিই অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়ে চলেছে। অনন্য যারিফ আকন্দের মত আরো অগণিত ক্ষুদে বন্ধুদের পদচারণায় ভিকারুননিসা নুন স্কুল মাঠ পরিপুর্ণ হয়ে ছিল।
দিন শেষে কেউ বিজয়ের হাসি হেসে ফিরেছে আর কেউ শপথ নিয়েছে আগামীতে নিশ্চই বিজয়ী হবো। এই সব আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।আমরা ছোটদেরবন্ধু পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজনের সাথে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানাই এবং অভিভাবকদের বলতে চাই আপনারা আপনাদের সন্তানকে মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশ নিতে সুযোগ দিন এবং সহযোগিতা করুন। এতে করে তাদের মেধা বৃদ্ধি পাবে এবং বিজয়ী হওয়ার জন্য লড়াই করতে শিখবে।
Comments are closed.