লেখাঃ জাজাফী
দাবা বোর্ডের সামনে চিন্তিত মুখে বসে আছেন এক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জিল্লুর রহমান।তার বিপরীতে যে ছোট্ট মেয়েটি খেলছে ওর বয়স মাত্র আট বছর। বর্তমানে সে ওয়াই ডব্লিউ সি এ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের গ্রীনরোড শাখায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ছে।প্রফেসর সাহেব নিয়মিতই ওর সাথে দাবা খেলেন।সন্ধ্যার পর টিভির রিমোর্ট নিয়ে যখন সোফাতে বসেন তখন পাশে বসে থাকে ছোট্ট মেয়েটি।টিভি পর্দাতেও তখন তাকে দেখা যায়! প্রফেসর সাহেব অবাক চোখে একবার পাশে বসে থাকা ছোট্ট মেয়েটির দিকে তাকান আরেকবার টিভি পর্দায় তাকান।টিভির মধ্যে দুরন্ত মেয়েটিই যে তার পাশে বসে থাকা দৃতি।প্রফেসর সাহেবের একমাত্র মেয়ে! ওহ তোমাদেরকে তো বলাই হয়নি আমাদের এই ক্ষুদে বন্ধুটির নাম দৃতি হুমায়রা মৌ সত্যিকারের রূপাঞ্জেল।সে একাধারে অভিনয়,চিত্রকলা,নাচ,সঙ্গীত সহ নানা বিষয়ে পারদর্শীতা অর্জন করেছে।বর্তমানে টিভিতে তার অনেকগুলো বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে এবং প্রচারিত হচ্ছে টিভিসিরিজ।
জন্ম-১৭-১০-২০১০
বর্তমান বয়স-৮বছর।
পড়াশোনাঃ ২য় শ্রেণী(ওয়াই ডব্লিউ সি এ উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।গ্রীণ রোড, ঢাকা।
বাবাঃ জিল্লুর রহমান(এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর,ঢাকা কলেজ) ।
মাঃ মৌসুমি(গৃহিণী)
অভিনয় জীবনঃ
দৃতি ২০১৮ সালে প্রথম অভিনয় জীবনে পা রাখে। এথিনা মডেল মেনেজমেন্টের মাধ্যমে তার পথচলা শুরু। প্রথম কাজ হিসেবে ২০১৮ সালে সে নবরূপা হাউসের ফটোশ্যুটে অংশ নেয়। এর পর একই বছর দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ব্র্যাক ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং এর জন্য টিভি বিজ্ঞাপনে কাজ করে।
দৃতির উল্লেখযোগ্য কাজ হলোঃ
- দ্যা পিস (ওয়েব সিরিজ)
- লাইফবয়-ওভিসি স্কয়ার গ্রুপ –(রাধুনি)
- ব্র্যাক ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং (টিভিসি)
- লা মেরিডিয়ান (টিভিসি)
- বাবু ল্যান্ড (টিভিসি)
- প্রিয় রাশু (শর্ট ফ্লিম)
- সিনে স্পোর্টস (অনলাইন এন্টারটেইনমেন্ট)
- ডেইলি স্টার-আনন্দধারা ম্যাগাজিনের ফটোশ্যুট।
- চ্যানেল আইয়ের ম্যাগাজিনে ফটোশ্যুট।
ছোট্ট দৃতি বর্তমানে শিশু একাডেমীর নাট্যকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এছাড়াও তার অনেক গুণ রয়েছে। সে গ্রীণ আর্ট একাডেমীতে জল রং ক বিভাগের ছাত্রী।আলোহা মেন্টাল ম্যাথ ক্লাসের জুনিয়র সেকশান শেষ করে এখন সিনিয়র ক্লাসের ছাত্রী।গান শেখা,মঞ্চনাটকে অভিনয়েও তাকে নিয়মিত দেখা যায়।
দৃতির কাছে জানতে যখন প্রশ্ন করা হলো তুমি প্রথম সম্মানীর টাকা দিয়ে কি করেছিলে সে জানালো সে তা দিয়ে গিফ্ট কিনে দিদাকে গিয়েছিলো।ক্যামেরার সামনে দাড়াতে ও মোটেও ভয় পায় না বরং যখনই ক্যামেরার সামনে দাড়ায় ও মনে মনে পণ করে যেন কাজটা পারফেক্ট হয়। লোড হওয়া সীনটা দেখার পর যদি কখনো মনে হয় নাহ মনের মত হয়নি তখন আবার সেটা শ্যুট করতে আগ্রহী হয়।ওর এই দায়িত্বশীলতা দেখে পরিচালকের মুগ্ধতা বহুগুন বেড়ে যায়।
অভিনয় ভালো লাগার পাশাপাশি দৃতি মজা পায় ডাবিং এর সময়।নিজের হাতে ছবি একে কমিক তৈরি করা দৃতির ভীষণ পছন্দের কাজ। ছবি একে এরই মধ্যে সে অনেক ক্রেস্ট আর সার্টিফিকেট পেয়েছে।আলোহা জুনিয়র ম্যাথ থেকে ছয়টি লেভেলের প্রতিটিতেই সে ক্রেস্ট পেয়েছে এবং শতভাগ নাম্বর সহ কোর্স শেষ করেছে।কার্ড খেলায় নতুন নতুন ট্রিক শিখতে ও ভালোবাসে।
ছোটদেরবন্ধুতে যখন ইশাল মাহমুদকে নিয়ে ফিচার ছাপানো হলো তখন দৃতি সেটা পড়ে মুগ্ধ হয়েছে। আমাদের ইশাল মাহমুদ মেনসার সদস্য হয়েছে শিরোণামের সেই লেখাটি দৃতিকে আরও বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছে। দৃতিও চায় ইশাল মাহমুদ কিংবা শেরউইনের মতই মেনসার সদস্য হতে।আমরা জানি আমাদের চারপাশে অসংখ্য ইশাল মাহমুদ কিংবা ফাতিহা আয়াত লুকিয়ে আছে দৃতিদের মাঝে।কেবল স্বপ্নগুলো ওদের মধ্যে বপন করতে পারলে এবং সঠিক পরিচর্যা করতে পারলেই তা ফলবান হবে।আমরা বিশ্বাস করি দৃতিরা এগিয়ে যাবে। দৃতি আরো বেশি আলো ছড়াক।আমরা প্রতিনিয়ত সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখি।