spot_img
More
    Homeশিশু শিল্পীতাওহীদুল ইসলাম তাইফ

    তাওহীদুল ইসলাম তাইফ

    টিভি খুলতেই মিষ্টি একটা কন্ঠ ভেসে আসে। সেটা কানে যেতে না যেতেই রান্না ঘর থেকে ছুটে আসে মা। তখন হয়তো চুলায় তরকারি পুড়ে যাচ্ছে। সেদিকে কি আর মন দেওয়ার সময় আছে? যে মিষ্টি কন্ঠ বেরিয়ে আসছে তার কাছে আর সব তুচ্ছ। ছোট্ট একটা রাজপুত্র মিষ্টি করে বলছে

    “বাবা বলে বেশি বেশি পানি খাও, সব পানি না। পানিতে জীবাণু থাকলে অতুক হয়। আম্মু ফুটানো পানি খেতে দিতো। তার পর এটা লাগিয়েছে।এখন আমার অতুক হয় না। তোমাদের বাসায় এটা লাগাও আর অতুক হবে না।”

    এই মিষ্টি কন্ঠের ছেলেটির নাম তাইফ। পুরো নাম তাওহিদুল ইসলাম তাইফ। পরিবারের তৃতীয় রাজপুত্র সে। তার আরো দুজন বড় ভাই আছে মুশফিক আর তাশদীদ।তৃতীয় রাজপুত্র হলে কি হবে সেই পরিবারের সব থেকে বড় আনন্দের উৎস। সবাইকে মিষ্টি কথায় আর দুষ্টুমীতে মাতিয়ে রাখে। বর্তমানে বাংলাদেশের নাটক ও বিজ্ঞাপনে যে সব ক্ষুদে অভিনেতা অভিনেত্রী মডেল আছে তাদের মধ্যে অন্যতম সেরা তাইফ। তাইফকে সবাই খুব ভালোবাসে ওর অসাধারণ কন্ঠস্বর আর সুন্দর চুলের জন্য। শ্যুটিং সেটে গেলে তাইফ সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

    জন্ম ও বেড়ে ওঠাঃ

    জনপ্রিয় এই ক্ষুদে মডেল অভিনেতার জন্ম ২০১৫ সালের ৪ মার্চ রাজধানী ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা নিউমার্কেটের সন্নিকটে একটি বেসরকারী হাসপাতালে। বাবা মা ও দুই ভাইকে নিয়ে থাকে মিরপুরের কাজী পাড়ায়। সেখানেই সে হাসি আনন্দে বেড়ে উঠছে। সে বলে আমিতো বড় হয়েই গেছি। যদিও তার বয়স সবে মাত্র পাঁচ।

    তাইফেরা তিন ভাই। বড় ভাই মুসফিকুর আলম হৃদয়,ঢাকা সিটি কলেজে পড়ে ইন্টার মেডিট সেকেন্ড ইয়ারে। আর মেজ ভাই তাসদিদুল ইসলাম তাসদিদ ( অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে ) মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে (তৃতীয় শাখায়) তাইফ এখন প্লে গ্রুপে পড়ে। ওর স্কুলের নাম গ্রিন ইন্টার ন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। প্লেতে পড়লেও সে এখন সুপারস্টার। দেশের অলিতে গলিতে বিলবোর্ড পোষ্টারে তার ছবি দেখা যায়। টিভি খুললেই তাকে দেখা যায় এমনকি ক্যালেন্ডারের পাতায় পাতায়ও তার ছবি।

    তাইফের স্কুলের শিক্ষকেরা ওকে খুব আদর করে। তার ক্লাসে একজন ক্ষুদে সেলিব্রেটিকে পেয়ে তারা খুব খুশি।

    তাইফের বাবা মো: রফিকুল ইসলাম শরিফ একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী করছেন। এবং মা মমতাজ ইয়াসমিন তানিয়া একজন হাউজ ওয়াইফ। যদিও তিনি হাউজ ওয়াইফ তবে তার আর বাসায় থাকার সুযোগ হয় না। শ্যুটিংএর জন্য তাইফকে নিয়ে সারাদিনই বাইরে ছোটাছুটি করতে হয়।

    ক্যারিয়ার ও অন্যান্যঃ

    তাইফের মিডিয়াতে কাজ করার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান তার মায়ের। আম্মুর সাহায্য না থাকলে হয়তো তাইফ এতো অল্প সময়ে মিডিয়াতে কাজ করতে পারতো না।, এতো নামি দামি আর্টিস্টদের সাথে কাজ করতে পারার যে সৌভাগ্য হয়েছে তা মায়ের জন্যই। বাংলাদেশের অনেক নামি দামি পরিচালকরা তাইফকে নিয়ে কাজ করেছেন। যেমন অমিতাভ রেজা, হিমেল আশরাফ এবং বর্তমানের মাবরুর রশিদ বান্নাহ সহ আরও অনেকেই। মাবরুর রশিদ বান্নাহকে তাইফ মামা বলে ডাকে। তাইফের তাইফ হয়ে ওঠার পিছনে যারা অবদান রেখেছে তাদের সবার প্রতি তাইফ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চায়।

    তাইফের একজন বন্ধু আছে,বড় ভাইয়ের মত সে তাইফকে খুব ভালোবাসে। তাইফকে সে মজা করে বলে আমি হলাম মোবাইল আর তুমি হলে কারেন্ট। তুমি যখনই আমার সাথে কথা বলো আমি সাথে সাথে চার্জ হয়ে যাই। এটা শুনে তাইফ হাসে। সেই হাসির মুর্ছনা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। একবার তাইফের একটি ইন্টারভিউ ছাপা হলো দৈনিক ইত্তেফাকের কচিকাচার আসর পাতায়। সেখানে তাইফের বড় একটি ছবিও ছাপা হলো। এই ইন্টারভিউটা করেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং লেখক মুনতাসির সিয়াম, সহযোগিতা করেছিল জাজাফী।

    কাজের পরিব্যাপ্তীঃ

    ক্রিকেট ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসান সেঞ্চুরী করে আর ছোট্ট তাইফ করে মডেলিং আর অভিনয় দিয়ে। এই পযর্ন্ত কাজের সংখ্যা সব মিলিয়ে সেঞ্চুরী হবে। এর মধ্যে টিভি বিজ্ঞাপন আছে। নাটক আছে, মিউজিক ভিডিও আছে, র‌্যাম্পের কাজ আছে এবং ফটোসেশনের কাজ তো আছেই।

    তাইফ বর্তমানে “রবি” তে তিন বছরের এগ্রিমেন্টে আছে এবং সেইলরের মতো ব্রান্ডের একজন মডেল হিসেবে কাজ করছে। তাইফকে অনেকেই একজন ষ্টাইলিষ্ট মডেল হিসেব জানে। তাইফের চুলের প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ। তাইফের সুন্দর চুলের জন্য আলাদাভাবে ভালোবাসে সবাই।

    পছন্দ অপছন্দ, সখ ও অন্যান্যঃ

    তাইফ খুব খেতে ভালোবাসে। সেই যে বিজ্ঞাপনে যেমন বলেছিলো যে সে পানি না ঠিক তেমনি যে সে খাবার সে খায় না। তাইফের প্রিয় খাবার বিরিয়ানি আর গ্রিল এবং নান। এর বাইরে সে রানিং ফুড,চকলেট আর আইসক্রিমের ভীষণ ভক্ত। স্ট্যাইলিশ এই ক্ষুদে তারকা জিন্স আর টিশার্ট পরতে বেশি পছন্দ করে। তার প্রিয় রং লাল এবং কালো।

    RELATED ARTICLES

    Most Popular