বিজ্ঞান পরতে বোড়িং বোধ করে না এমন শিক্ষার্থী খুবই কম আছে। স্কুলের ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের কাছে বিজ্ঞান একটা আতংকের বিষয়। কিন্তু ছোট বন্ধু ‘কথা’ এর কাছে বিজ্ঞান প্রিয় বিষয়। সে ক্লাসে তার বন্ধুদের প্রায় ই বিজ্ঞান নিয়ে বিভিন্ন জাদু দেখায়। কথা’র কিন্তু আরেকটি ভালো গুন আছে, সে খুব সুন্দর অভিনয় করতে পারে।
ক্লাসের বন্ধুরা তাকে প্রাই মজা করে ড্রামা কুইন ডাকে। তোমাকে ক্লাসে তোমার বন্ধুরা কি নামে ডাকে তা জানিয়ে দিতে পারো কমেন্ট করে আমাদের। গত শনিবার কথা তার বান্ধবীর জন্মদিনে নিজের হাতে তৈরি লাভাল্যাম্প উপহার দিয়েছিল। ক্লাসের সবাই দেখে অবাক হয়েছিল। তার বন্ধরা তার এই লাভাল্যাম্পটি কিভাবে বানাতে পারবে,তা জানতে চেয়েছিল৷ তখন কথা খেলতে খেলতে বিজ্ঞানের এই আশ্চর্য লাভাল্যাম্প টি সবাইকে বানিয়ে দেখালো।
উপকরণ সমুহঃ
লাভাল্যাম্প টি বানাতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন তা তুমি তোমার ঘরে খুজলেই পেয়ে যাবে,আশা করছি। উপকরণ গুলো হলোঃ
১.একটি পাত্র (তুমি চাইলে কোনো সুন্দর পানির বোটল ব্যবহার করতে পারো)
২.পানি
৩.সয়াবিন তেল
৪.ফুড কালার (বাসায় না থাকলে বাজারের দোকানে লাল,নীল যেকোনো রঙের পেয়ে যাবে)
৫.ভিটামিন-সি ট্যাবলেট (যেকোনো ফার্মাসিতে পেয়ে যাবে)
তৈরির প্রকৃয়াঃ
উপকরণ তো জোগার হলো,চলো এখন দেখে নেই কথা কিভাবে লাভাল্যাম্প তৈরী করেছিল।
প্রথমে একটি পাত্রে কিছুটা পরিষ্কার পানি নিয়েছিল। পাত্রের পানির পরিমানের চেয়ে তিন গুন বেশি সয়াবিন তেল ঐ পাত্রে নিলো। তুমি নিশ্চয়ই জানো, তেল আর পানি কখনো মিশে যায় না। আবার তেলের ঘনত্ব পানির চেয়ে কম অর্থাৎ তেল পানির চেয়ে হালকা। তাই পানিতে ভেসে থাকে৷ এখানেও তাই দেখা যাচ্ছে৷ পানির উপরে তেল ভেসে আছে। এরপর সেই পাত্রে কয়েক ফোটা ফুড কালার যোগ করে দিলো।
ফুড কালার এর ঘনত্ব আবার তেলের চেয়ে বেশি তাই ফুড কালার পাত্রের পানির উপরে ভেসে থাকা তেল কে ভেদ করে সোজা নিচে পানিতে পড়ে গেছে। তুমি আবার কথা’র বন্ধুদের মতো ভেবো না যে, ফুড কালার তেলের মতো পানিতে মিশে না। পাত্রের পানির সাথে ফুড কালার সম্পূর্ণ মিশে গিয়েছে। তোমাকে তো বলাই হয় নি, কথা কোন রঙের ফুড কালার ব্যবহার করে ছিল। কথা’র প্রিয় রং ছিলো লাল। তাই সে লাল রঙের লাভাল্যাম্প তৈরী করেছিল। তুমিও চাইলে তোমার পছন্দের রং এর ফুড কালার ব্যবহার করতে পারবে।
এইবার খুব শীগ্রই দেখতে পাবে আশ্চর্য সব বুদ বুদ। পানির মধ্য থেকে লাল রঙের বাবল পানি থেকে উপরে তেল ভেধ করে উড়ে চলে যাচ্ছে। কথার বন্ধুরা তো সবাই অবাক। করতালিমুখর পরিবেশ ক্লাসে। সবাই ক্লাসে কথা’র প্রশংসা করছে। তুমি নিশ্চয়ই ভাবছো কিভাবে কি হলো। তোমার পাত্রে কেনো লাভার বুদবুদ সৃষ্টি হলো না৷ আরে বোকা, আমি তো এখনো তোমাকে বলিই নি, কথা কিভাবে এই লাভার বুদবুদ সৃষ্টি করেছিল। ধৈর্য্য হচ্ছে না, তাই না। আচ্ছা বলছি, কথা শেষ মুহূর্তে কি এমন করেছিল।
কথা পাত্রের মধ্যে ভিটামিন-সি ট্যাবলেট টি ছেড়ে দেয়। আর ট্যাবলেট টি পাত্রের মধ্যে উপরের তেল কে ভেধ করে তখন পানির মধ্যে পাত্রের তলায় চলে যায় ও তৎক্ষনাৎ ট্যাবলেট টি ক্ষয় হয়ে পানিতে কিছু গ্যাস সৃষ্টি করছে। যা বুদবুদ হয়ে পানির উপরের তেল ভেধ করে উড়ে চলে যায়। তাহলে, এইবার তো তুমি লাভার বুদবুদ এর মতো একটা লাভাল্যাম্প বানাতে পারবে।
ভাবছো কিভাবে এই লাভার বুদবুদ সৃষ্টি হলো। তোমার মতো কথা’র বন্ধুদের ও এই প্রশ্ন ছিলো। তখন কথা কিভাবে তার বন্ধুদের উত্তর দিয়েছিল,জানতে চাও। আমি আগেই বলেছিলাম কথা খুব ভালো অভিনয় পারে৷ তাই সে তার বন্ধুদের ক্লাসে ম্যাডামের ভঙ্গিতে অভিনয় করে বললো, “এটা সম্পূর্ণ বিজ্ঞান। তোমারা যদি আনন্দের সাথে উপভোগ করে বিজ্ঞান বই পড়তে তাহলে তোমরাও আমার মতো এই লাভাল্যাম্প অনেক আগেই তৈরী করতে পারতে৷ এখানে আমি ভিটামিন-সি ট্যাবলেট ব্যবহার করেছি। যাতে অ্যাসকরবিক এসিড ও কার্বনেটের বিক্রিয়া হয়ে পানিতে কার্বনডাই-অক্সাইড গ্যাস সৃষ্টি করে।
এই কার্বনডাই-অক্সাইড গ্যাস বুদবুদ আকারে উড়ে চলে যায়। তাই এখন থেকে মনোযোগ সহকারে আনন্দের সাথে বিজ্ঞান পড়বে৷” তার কথা শুনে তার বন্ধুরা সবাইক হেঁসে তাকে ড্রামা কুইন বলে আবার ডাকলো।
কি?? ভালো লাগলো এই লাভাল্যাম্প৷ তাহলে তুমিও তোমার বন্ধুদের চমক দিতে পারো এই লাভাল্যাম্পটি বানিয়ে।
আরও পড়তে পারোঃ
Comments are closed.