মালয়েশিয়ার টুইনটাওয়ারের উপর লাল সবুজের পতাকা ওড়ানোর পর এবার ইরানের আকাশেও উড়লো লাল সবুজের পতাকা। পতাকা উড়িয়ে দেশকে আরো একবার সম্মানিত করলো একদল কিশোরী যাদের বয়স পনের বছরের নিচেয়। হ্যা ফুটবলের যাদুতে মুগ্ধ করে মালয়েশিয়াকে গোল খাইয়ে এবার ইরানকেও গোল বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশের মেয়েরা। হংকংয়ে অনুষ্ঠিত চার জাতি জকি ক্লাব মহিলা ফুটবলের দ্বিতীয় ম্যাচে ইরানের বিরুদ্ধে ৮-১ গোলের ব্যবধানে জয় পেয়েছে তারা।
ম্যাচের তখন একমিনিট পেরিয়েছে অমনি পতপত করে উড়লো লাল সবুজের পতাকা। প্রথম মিনিটেই তহুরা খাতুনের গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশের মেয়েরা। ১৩ মিনিটে আবারো গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন তাহুরা। এবার ২৯ মিনিটে গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে আমাদের এই কিশোরী বন্ধু। ম্যাচের ৩২ মিনিটে অ্যানি মগিনি ও প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে শামসুন্নাহার গোল করলে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এবং সেই বিরতীটা ছিল স্বস্তির এবং আনন্দের। ততোক্ষণে জয়ের সুবাশ পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ শিবির।
বিরতির পর তাহুরা খাতুনের মতো নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে আমাদের আরেক কিশোরী বন্ধু শামসুন্নাহার।ওরা যেন পণ করেছিল গন্ডায় গন্ডায় গোল দিবে। শামসুন্নাহার ম্যাচের ৬৩ মিনিটে দ্বিতীয় ও ৬৭ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করে। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে মগিনি। ম্যাচের শেষ সময়ে একটি গোল শোধ করে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে ইরান। তবে পরাজয়তো রুখতে পারেনি। আশার কথা হলো ইরানের মেয়েরা যে ফুটবল খেলার সুযোগ পেয়েছে সেটাই বিশ্বের কাছে বিস্ময়কর।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ১০-১ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে আগামী রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় স্বাগতিক হংকংয়ের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। চার দলের টুর্নামেন্টের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল হবে চ্যাম্পিয়ন। আমরা খুব স্বাভাকি ভাবে আশা করতেই পারি বাংলাদেশ দলই শীর্ষ দল হবে এবং চ্যাম্পিয়ন খেতাব নিয়ে দেশে ফিরবে। এই কিশোরীদের ফুটবল দক্ষতা সারা বিশ্ব দেখেছে এবং তাদের গোল করার ক্ষমতা এবং প্রতিটি সুযোগ যেভাবে তারাকাজে লাগিয়েছেতা সত্যিই বিস্ময়কর। এভাবে এগোতে থাকলে বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
আমাদের দেশ ফুটবল প্রেমী ক্রিকেট প্রেমীদের দেশ। কদিন পর বিশ্বকাপ শুরু হলে বাংলার আকাশ ছেয়ে যাবে আকাশী সাদা কিংবা সবুজ হলুদ লাল নীল আরোকত পতাকায়। সেই সোনার দেশের স্বর্ণকিশোরীরা যে স্বপ্ন বুনে দিয়েছে এবং যে উল্লাসের জন্ম দিচ্ছে তার জন্য তাদেরকে অভিনন্দন।
—