spot_img
More
    Homeশিশু অধিকারসন্তানের অভিভাবকত্ব

    সন্তানের অভিভাবকত্ব

    লেখকঃ জাজাফী

    সামাজিক জীবনে বেঁচে থাকতে গেলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সেই সমস্যার সমাধান করতে হয় আলোচনার মাধ্যমে। কখনো কখনো দাম্পত্য জীবনে নানামুখী সমস্যার কারনে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে প্রধান যে সমস্যা দেখা যায় তা হলো সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে। আমাদের দেশে এ ব্যাপারে যতটুকু আইন আছে তা আসলে কতটা কার্যকরী এবং বাস্তব বান্ধব সেটা ভেবে দেখার সময় এসেছে। বলা হচ্ছে সন্তানের অভিভাবকত্ব মায়ের থাকবে। আবার কারো কারো মতে সন্তানের অভিভাবকত্ব থাকবে বাবার। কেননা বাবাই তার সন্তানের জন্য সবচেয়ে ভাল অভিভাবক। প্রচলিত আইনে বলা হচ্ছে মায়ের অভিভাবকত্বে থাকলেও বাবা তার যাবতীয় খরচ বহন করবে।

    সন্তানের অভিভাবকত্ব বাবা বা মা যে কেউ পেতে পারবে কয়েকটা শর্ত পুরণের মাধ্যমে। যুক্তিতে বলে মা সন্তানের সবচেয়ে ভাল বন্ধু এবং ভাল দেখা শুনা করতে পারে তাই মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া উচিৎ। এ কথাটা যুক্তি যুক্ত। তবে দেখতে হবে সন্তানের অন্ন,বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার যাবতীয় প্রয়োজন মা মিটাতে সক্ষম কিনা। দেখা গেল এ ক্ষেত্রে সন্তানের যাবতয় সুবিধা বাবার কাছে বিদ্যমান তাহলে সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তার অভিভাবকত্ব বাবাকে দিতে হবে। আর যদি দেখা যায় মায়ের কাছে এগুলো পাবে তাহলে মায়ের কাছেই সে থাকবে। এর পর দেখতে হবে চারিত্রিক এবং মানবীয় গুনাবলীতে কে ভাল। কার কাছে থাকলে সন্তান সত্যিকার অর্থে ভাল মানুষ হয়ে উঠবে তার কাছেই সন্তান থাকবে। কেননা চারিত্রিক অবক্ষয় সম্পন্ন কারো অভিভাবকত্বে সন্তান থাকলে তার চরিত্র সেরকম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে। আর হ্যা সন্তান যার কাছেই থাকনা কেন তারা দুজনই যে তার বাবা মা এটা যেন আজীবন তারা অনুভব করতে পারে। নিজেদের ভুলের কারনে সে কেন কষ্ট ভোগ করবে। পৃথিবীতে সেতো একা একা আসেনি। বাবা মায়ের মাধ্যমেই তারা এসেছে। সুতরাং বাবা মা যাকে এই পৃথিবীতে আসতে সাহায্য করেছে তার সব ধরনের কল্যান বাবা মাকেই নিশ্চিত করতে হবে। তাদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা টেনে এনে তাদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবেনা।

    অন্য দিকে সন্তান দত্তক নেওয়ার একটি বিষয় সামনে চলে আসছে।আমাদের দেশে এ ব্যাপারে তেমন কোন আইন আছে বলে আমার জানা নেই। আর ইসলাম ধম্যেও এ ব্যাপারে বলা হচ্ছে কোন কিছু বলা নেই। অনেকেই সন্তান ধারনে অক্ষম হওয়ায় অন্যের সন্তান দত্তক নেওয়ার মাধ্যমে মাতৃত্ব বা পিতৃত্বের অভাব কিছুটা লাঘব করতে পারতো কিন্তু ইসলামে কোন বিধান নেই বা দেশে কোন আইনের স্পষ্ট বিধি নিষেধ না থাকায় তাতে জটিলতা দেখা যাচ্ছে।

    সন্তান দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট বিধান বা আইন থাকা জরুরী। উন্নত বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এ বিষয়ে নির্ধারিত আইন আছে। আমাদের দেশেও এ আইন করার মাধ্যমে যেমন সন্তানহীন দম্পত্তি সন্তানের অভাব মেটাতে সক্ষম হবে তেমনি এমন অনেক পরিবার আছে যেখানে তাদের সন্তান অতি দারিদ্রতার মধ্যে মানুষ হবে কষ্টে ক্লিষ্টে নানা অধিকার বঞ্চিত হবে। অথচ দত্তক নেওয়ার বিধান থাকলে ঐ সন্তানটাই ভাল ভাবে মানুষের মত মানুষ হতে পারবো।

    দত্তকের সংজ্ঞা কি সেটা আমাদের জানা উচিৎ। নিজের ব্যতীত অন্যের সন্তানকে নিজের পরিবারের সাথে নিজের সন্তানের সব সুযোগ সুবিধা দিয়ে লালন পালনের নামই দত্তক। সুতরাং ইসলাম অবশ্যই দত্তক নেয়া সমর্থন করে। যদি সমর্থন না করতো তাহলে নবী সাঃ এ ব্যাপারে মত প্রকাশ করতেন। বলা হয়ে থাকে নবী সাঃ এর কোন বিষয়ে মৌনতাও সম্মতি। এ ব্যতীত নবী সাঃ তার দুধ মাতাকে অত্যন্ত সম্মান করতে এবং কুরআনে যে ১৪ জন মানুষের মাঝে বিবাহ বন্ধন নিষিদ্ধ তার মধ্যে দুধ মাতা এবং তার সন্তানগণ অর্ন্তভুক্ত। তাই ইসলাম কখনোই এটার বিরোধিতা করেনা। এ ব্যাপারে আইন প্রণয়ন করে সন্তানহীন দম্পত্তির ঘরে সন্তানের হাসি ফিরিয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।

    বর্তমান সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ একটা অতি পরিচিত বিষয় হয়ে গেছে। এর মুলে রয়েছে দাম্পত্য কলহ এবং পরস্পরের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি। একে অন্যের প্রতি বিশ্বাস না থাকা। ফলে সহজেই ভেঙ্গে যাচ্ছে সুখের কোন সংসার। আর এর কুপ্রভাব আমাদের ছোটদের ওপর বর্তাচ্ছে। বড়দের সমস্যায় ছোটরা কষ্ট ভোগ করবে এটা কারো কাম্য হতে পারেনা। আর হ্যা যদি দাম্পত্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব নাই হয় তবে তখন বিবাহ বিচ্ছেদ হতেই পারে । তাই এ ব্যাপারে কিছু বিধি নিষেধ থাকতেই হবে। যার বিনিময়ে সন্তান,স্ত্রী এবং স্বামী সকলেই নিজ নিজ অধিকারটুকু নিশ্চিত হতে পারে।

    পৃথিবীর নানা দেশেই বহু বিবাহ প্রচলিত আছে। কোন কোন দেশে এ ব্যাপারে আইন রয়েছে আবার কোন কোন দেশে আইন নেই। আমাদের দেশে তেমন কোন আইন নেই বললেই চলে। আর তাছাড়া আমাদের দেশে বহু বিবাহ রীতিও তেমন প্রচলিত নয়। উন্নয়নশীল অতি জনবহুল একটা দেশে বহু বিবাহ কখনোই সুফল বয়ে আনতে পারেনা। তাই এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিৎ।

    বলা হয়ে থাকে নারী সব কিছু ছেড়ে দিতে পারে শুধু স্বামীর অধিকার ছাড়তে পারেনা। সে কাউকেই তার স্বামীর অধিকার দিতে রাজি নয়। এ ক্ষেত্রে আমি অনেক নারীর সাথে কথা বলেছি যারা মনে করে স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহ বা বহু বিবাহ হচ্ছে নারীর জন্য সবচেয়ে বেদনা দায়ক।স্বামীকে অন্য স্ত্রীর সাথে দেখার চেয়ে তাদের কাছে বিবাহ বিচ্ছেদের কষ্ট অনেক কম।বহু বিবাহের ফলে স্বামী স্ত্রীর বিবাদ তৈরি হচ্ছে যার ফলশ্রুতিতে সন্তানেরা বিপদে পড়ছে।তারা অনেকটাই অভিভাবকহীন হয়ে পড়ছে।তাই সন্তানের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করতে বাবা মাকে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেকটুকু ভাবতে হবে।

     

    যে সন্তান তাদের ভালবাসার ফসল হয়ে পৃথিবীতে এসেছে তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবেনা এবং একই ভাবে সন্তান দত্তক নিলে তাকেও দিতে হবে পুর্ন অধিকার।আমরা চাই পৃথিবীর প্রতিটি শিশু কিশোর কিশোরীর জীবন আলোকিত হোক।তারা তাদের অভিভাবকদের ছায়ায় নিরাপদে বেড়ে উঠুক।

    –উত্তরা,ঢাকা-১২৩০

     

    ছোটদেরবন্ধু
    ছোটদেরবন্ধুhttps://www.chotoderbondhu.com
    সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখতে দেখতে জীবনের এক একটি দিন পার করা।সেই ধারাবাহিকতায় ছোটদেরবন্ধু গড়ে উঠছে তিল তিল করে।
    RELATED ARTICLES

    1 COMMENT

    1. Replacement windows tender more than natural light and different air. You’ll be suffering with a windows replacement [url=https://www.provenexpert.com/en-us/aspect-montage-inc/ ]Aspectmontage[/url] Boston hard period decree a accommodations project that brings as divers benefits as brand-new windows. Here are some benefits you’ll start enjoying from daytime one.

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Most Popular