আর্জেন্টিনার কয়েকটি ক্লাব থেকে খালি হাতে ফিরে এসে ১১ বছরের ছেলেকে গ্রোথ হরমোন ডিফিসিয়েন্সি রোগ থেকে বাঁচানোর জন্য বাবা পারি দেন স্পেনে।কারণ ঐ রোগের মাসিক চিকিৎসার খরচ ছিল ৭৫০০০ টাকা,যা মেসির বাবার পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব ছিলনা।
বার্সেলোনার ন্যু ক্যাম্পে মাত্র ১৩ মিনিটের ট্রায়াল দিয়ে ক্লাব কর্মকর্তাদের চোখের ভ্রু কুঁচকে দেন ছোট্ট মেসি।সাথে সাথে মেসির জীবন অন্য মোড় নেয়।ক্লাব কর্মকর্তারা তার চিকিৎসা ও অন্যান্য খরচের দায়িত্ব নিয়ে নেন।
অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে ১৩ মিনিটের ট্রায়ালে বাজিমাত!আবার ১৩ বছর বয়সেই বার্সার স্পোটিং ডিরেক্টর কার্লোস রেক্সাস তার খেলায় মুগ্ধ হয়ে তার সাথে একটি টিস্যু পেপারে চুক্তি সই করেন।কারণ কার্লোসের যে আর তর সইছে না তাকে বার্সেলোনায় খেলানোর জন্য!
মেসি হেড দিয়ে গোল করতে চাইতেন না বলে কোর্স মার্কোনি চকোলেট বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে হেড দিয়ে গোল করাতেন মেসিকে।কারণ মেসি যে চকোলেট বিস্কুট খুবই ভালোবাসত।
মেসি প্রতিবার গোল করে আকাশের দিকে দুই হাত উঁচু করেন তার দিদা সেলিয়া কে সম্মান জানাতে।কারণ দিদা মেসির ফুটবল খেলার নৈপুণ্য দেখে মেসিকে একটা ফুটবল উপহার দিয়েছিলেন এবং মেসির যখন ১০ বছর বয়স তখন তিনি মারা যান।
আপনারা যারা বলেন মেসি স্বার্থপর!এই তথ্যাটা তাদের জন্য।মেসি এতদিনে বিশ্বকাপ জয়ীদের একজন হতে পারতো!কারণ মেসিকে যে স্পেনের জাতীয় দলে খেলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।যা তিনি নিজ দেশের জাতীয় দলে খেলার জন্য প্রত্যাখান করে দেন।
চিকিৎসার অভাবে যে ছোট্ট শিশুটির হাঁটতে পারা নিয়ে সন্দেহ ছিল!সে আজকের মেসি হয়ে বল নিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় মাঠে।পায়ের নৈপুণ্য দেখিয়ে জায়গা করে নিয়েছে কোটি ভক্তের হৃদয়ে।ভালোবাসার কান্ডারী হয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক কল্যাণ মূলক প্রকল্পে।দাঁড়িয়েছে চিকিৎসার অভাবে ধুকতে থাকা হাজারো শিশুদের পাশে।
লিওনের মেসি এমনই এক মানুষ যাকে ভালোবাসে হাজার কোটি মানুষ।যার হৃদয় ভরা শিশুদের জন্য মমতা ভালোবাসা।খেলার মাঠে কিংবা খেলার মাঠের বাইরে তিনি খুবই বিনয়ী এবং কখনো বলেন না যে তিনিই সেরা।বিশ্বের প্রায় সব খেলোয়াড় যখন নিজেকেই সেরা বলে দাবী করেন সেখানে মেসি অনন্য হয়েও নিজেকে সেরা দাবী করেন না।তিনি মনে করেন বিশ্ববাসী নিশ্চই জানে পৃথিবী নামক গ্রহে কে সেরা ফুটবলার।
লেখকঃ হিমু চন্দ্র শীল
Comments are closed.