অদ্বিতীয়া রাজকন্যা সিমরিন লুবাবা

23
1146

রুপকথার গল্পে তোমরা অনেকেই রাজকন্যা,রাজপুত্রর গল্প শুনে থাকবে। সেই রাজকন্যা আকাশ থেকে নেমে আসে। কিন্তু তোমাদেরকে আজকে আমরা এক সত্যিকারের রাজকন্যার কথা বলবো। তার মুখে সারাক্ষণ মিষ্টি হাসি লেগেই থাকে।আমরা তাকে আদর করে বলি অদ্বিতীয়া রাজকন্যা।রুপকথার রাজকন্যাদের কিন্তু তেমন কোন গুণ থাকে না । তারা শুধু দেখতে সুন্দর হয় অথবা তাদের ইয়া লম্বা চুল থাকে। কিন্তু আমাদের এই রাজকন্যার অনেক গুন আছে। সে গান গাইতে পারে,আবৃত্তি করতে পারে আর অভিনয় করতে পারে। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি তুমিও এই রাজকন্যাটিকে টিভিতে দেখেছ।

কিন্তু তোমরা তো জানতেই না যে এই রাজকন্যাটির নাম কী!আমাদের এই রাজকন্যার নাম সিমরিন লুবাবা।এরই মধ্যে সে অনেকগুলো কাজ করে ফেলেছে। তার মধ্যে রাজকন্যাদের গুণাবলীও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।সে মানুষের দুঃখ দেখলে তাদের পাশে দাড়াতে চেষ্টা করে। এই যে সারা পৃথিবীতে করোনা ভাইরাস যখন আক্রমন করে সবাইকে ঘায়েল করে ফেলেছে তখন কত মানুষ অনাহারে থেকেছে। ছোট্ট সিমরিন মনে করলো ওই সব মানুষের জন্য কিছু করা উচিত। সেই ভাবনা থেকে সে নিজের আয় করা টাকা থেকে খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিষ কিনে গরীবদের মাঝে বিতরণ করেছে। তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে সিমরিন অনেক খুশি।তোমরা হয়তো বলতে পারো এই রাজকন্যার রাজত্ব কোথায়? কোন রাজ্যের রাজকন্যা সে? সে হলো হৃদয় রাজ্যের রাজকন্যা। মানুষের হৃদয়ে সে বসবাস করে সারাক্ষণ।

ভালো রাজকন্যাদের যা কিছু সুন্দর গুনাগুণ আছে তার সবটাই আছে সিমরিন লুবাবার মধ্যে। তোমাদের জন্য আমি যখন এই লেখাটি লিখছি তখন সিমরিন লুবাবা নামের এই ছোট্ট রাজকন্যার জন্মদিন আসি আসি করছে।দরজায় বার বার নক দিচ্ছে আসবো বলে কিন্তু আমি বলেছি একটু থামো আমি এখন রাজকন্যাকে নিয়ে লিখছি ওর বন্ধুদের জন্য। বন্ধুরাতো সবাই অপেক্ষা করছে আগে ওদেরকে রাজকন্যার গল্প শোনাই তার পর জন্মদিন তুমি এসো। সেই থেকে জন্মদিন আসি আসি করতে করতে দরজায় দাড়িয়ে আছে।লুবাবার জন্মদিনকে আমরা আমন্ত্রণ জানাবো ১৬ই আগষ্ট। হ্যা ঠিকই ধরেছ এই ছোট্ট রাজকন্যার জন্মদিন ১৬ আগষ্ট।

তোমরা নিশ্চই জানো আগষ্ট শোকের মাস। ১৯৭৫ সালে এই মাসের ১৫ তারিখে আমরা হারিয়েছিলাম আমাদের প্রিয়বন্ধু প্রিয় মানুষটিকে।যিনি আজীবন লড়াই করে রক্ত দিয়ে আমাদের জন্য একটি স্বাধীন দেশ, একটি লাল সবুজের পতাকা, আর একটি গর্বকরার মত মানচিত্র এনে দিয়েছিলেন। সেই মানুষটি আমাদের সবার প্রিয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু কিছু খারাপ মানুষ তাকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল।শোকের এই মাস, তার উপর করোনায় চারদিকে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে এতো সব ভেবে ছোট্ট রাজকন্যা সিমরিন লুবাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে জন্মদিনে কোন পার্টি দিবে না বরং পার্টি দিতে যে টাকা খরচ হতো তা থেকে গরীব দুঃখীদের জন্য কিছু করবে।এখন বুঝেছ সত্যিকারের রাজকন্যাটা কত্ত ভালো?আমরাও চাই এই ছোট্ট রাজকন্যা সিমরিন লুবাবার এই মহৎ কাজ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, আর এভাবেই সিমরিনের এবারের জন্মদিনটা আলোয় আলোয় ভরে উঠুক।ও আরেকটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছি সেটা হলো সিমরিনের রাজত্বে তার এক হীরের মুকুট পরা মহারাজা আছেন যিনি সিমরিনকে খুউউউব ভালোবাসেন এবং তার থেকেইতো সিমরিন নামের ছোট্ট রাজকন্যাটি অনুপ্রেরণা পায়।

সেই মহামান্য রাজা হলেন সিমরিন লুবাবার দাদু। বিখ্যাত অভিনেতা আবদুল কাদের।নাম আব্দুল কাদের হলেও বাংলাদেশের টেলিভিশন দর্শকদের কাছে তিনি বদি নামেই পরিচিত।আজ থেকে ২৬ বছর আগে কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে তিনি বদি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।দুই দশক পরেও সেই নাম এখনও দর্শকদের মন থেকে মুছে যায়নি। নাম বলার সাথে সাথেই তোমরা চিনে ফেলেছ। ওইতো কে কে যেন বলছে হ্যা দাদুকে তো দেখেছি ইত্যাদিতে আর অনেক গুলো নাটকে।তিনি নাটকে অনেক মজার অভিনয় করেছেন আবার খুব সিরিয়াসও হয়েছেন।আর তোমাদের বাবা মায়েরাও নিশ্চই বলবে হ্যা তিনিইতো সেই বিখ্যাত বদি। কী সুন্দর অভিনয় করেন।তাঁর অভিনীত নাটকের সংখ্যা অগণন। সিমরিন খুব ভালো বাংলা বলতে পারে। ওকে তোমরা দেখলে মনে করতে পারো এই রাজকন্যাতো একটা পরী? ওর চোখ গুলো পরীর মত সুন্দর, শুধু পিছনে কোন ডানা নেই। আরও ভাবতে পারো ওর চুলগুলো কেমন সোনালী। তার মানে সে সোনালী চুলের রাজকন্যা।

এই রাজকন্যা কিন্তু অন্য রাজকন্যাদের মত নয়। সে বরং একই সাথে বাংলা, ইংরেজী, এবং হিন্দি ভাষাতেও কথা বলতে পারে। তার সুনাম এখন দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি তার প্রতিভা দেখে রাজস্থান সরকার একটি বিজ্ঞাপন নির্মান করেছে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সেখানে সিমরিন লুবাবা কাজ করেছ।সিমরিন সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরা হয় এমন বিষয়ে অভিনয় করতে ভালোবাসে। সম্প্রতি ও অভিনয় করেছে ত্রয়ী প্রোডাকশানের ব্যানারে “আব্বু আম্মু আর ফেসবুক” নামক একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে। রাজকন্যাদের সব কিছু হিসেব করে করতে হয়। আর তাইতো সিমরিন লুবাবা সব সময় বাছাই করে সেরা সেরা কাজ গুলো করে থাকে। সে মাঝে মাঝে সবাইকে আনন্দ দিতে গান শোনায় আবার মাঝে মাঝে অভিনয়ও করে দেখায়। মিমিক্রি করতে তার খুব ভালো লাগে।আগামী ১৬ই আগষ্ট সিমরিন লুবাবার দশম জন্মদিন আসছে। যে মানুষটি জন্মদিনের পার্টিতে আনন্দ করার বদলে গরীব অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার কথা ভাবছে আমাদেরতো উচিত সেই ছোট্ট রাজকন্যাটিকে উইশ করা। চলো আমরা সবাই একসাথে একসুরে কন্ঠ মিলিয়ে বলে উঠি শুভ জন্মদিন সিমরিন লুবাবা। তোমার জন্য অনেক অনেক অনেক ভালোবাসা।আমরা জানি সিমরিন লুবাবা আমাদের সবার কাছ থেকে শুভেচ্ছা পেয়ে অনেক খুশি হবে। আর রাজকন্যা খুশি হলে রাজ্যের সব্বাই খুশি থাকে।পৃথিবীর ঘরে ঘরে সিমরিন লুবাবার মত মিষ্টি রাজকন্যায় ভরে উঠুক।

১৩ আগষ্ট ২০২০

Comments are closed.