কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যেমন পুষ্টিকর খাবার জরুরী তেমনি সাফল্যের জন্যও চাই পুষ্টি। স্বর্ণকিশোরী ইরার মতে “আশা করছি আমরা কৈশোর পুষ্টি, বাল্যবিবাহ রোধ সহ সকল লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হবো”।একটা খুব সুন্দর গান আছে “মেঘের বন্ধু বৃষ্টি আর বৃষ্টির বন্ধু শ্রাবণ যে বাঁচিয়ে রাখে সৃষ্টি”।
ঠিক একই ভাবে সুষমখাদ্য তথা পুষ্টিকর খাবার মানব দেহের জন্য অত্যন্ত জরুরী।বিশেষ করে কিশোর কিশোরীদের বাড়ন্ত শরীরের জন্য পুষ্টির কোন বিকল্প নেই।কিন্তু আমাদের এই উন্নয়নশীল দেশে যেখানে অনেক মানুষ দুবেলা অনাহারে অর্ধাহারে কাটায় সেখানে তারা পুষ্টিকর খাবার কি করে খাবে সেটাও একটি ভাবার বিষয়।আর এ চিন্তা থেকেই আমরা অনেক গবেষণা করে দেখেছি প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকেও চাইলে আমরা পুষ্টির নানা উপাদান পেতে পারি।
আমাদের প্রাণিজ আমিষ খনিজ আমিষ শর্করা ভিটামিন মিনারেলস সবই আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা কোন না কোন কিছুতে মিশে আছে শুধু সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে।যে মানুষ খাসির মাংশ কিনে খাওয়ার মত সামর্থ রাখেনা সে মশুড়ির ডাল কিনে খাবে, কেননা দুটোতেই একই উপাদান আছে।এমনকি ক্যালোরির কথা বললে খেজুরে এবং মুড়িতে যে পরিমান ক্যালোরি আছে তা গরু বা খাসির মাংশেও নেই।
এখন কথা হলো এই সব তথ্য কে পৌছে দেবে আমাদের অগণিত কিশোর কিশোরীদের কাছে।সেই ভাবনা থেকেই স্বর্ণকিশোরী ইরার মতে “আমরা এবার স্লোগান হিসেবে বেছে নিয়েছি “পুষ্টি আমায় করবে সফল”। এর এ স্লোগানকে পুজি করে আমরা গড়ে তুলেছি কিশোরী ক্লাব যারা পুষ্টি বিষয়ে আমাদের চারপাশের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিশোর কিশোরীদের সচেতন করবে।
স্বর্ণকিশোরী ক্লাব প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানাবিধ কাজে যুক্ত আছে যেমন তারা একাধারে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করছে ফলে শিশু মাতৃত্বের হার কমছে সেই সাথে কিশোরীরা সুরক্ষিত হচ্ছে। স্বর্ণকিশোরী সারার সাথে আমরা কথা বলে জানলাম সে এবং তার বন্ধুরা এখন প্রতিনিয়ম সমাজ পরিবর্তন ও সুন্দর আগামীর স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে চলেছে। তেমনই এক বন্ধু ইরা। সম্প্রতি ইরা ও তার বন্ধুরা আরেক স্বর্ণকিশোরী তাজরিনকে সাথে নিয়ে বড়দের সহযোগিতায় পুষ্টি আমায় করবে সফল নামে একটি আয়োজন সফল ভাবে সম্পন্ন করেছে।এই আয়োজনের সাথে যুক্ত থেকে সে এবং তার বন্ধুরা পুষ্টি বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করেছে।
স্বর্ণকিশোরী ইরা তার বন্ধুদের নিয়ে তার এলকায় স্কুলে স্কুলে ক্লাব গঠনের মাধ্যমে এ কাজের সুচনা করেছে। ওর ফেসবুক ওয়ালে আমরা দেখতে পাই ওরা কতটা কাজ করছে। “২০১৬ সালে স্বর্ণকিশোরী কনভেনশন এ বাংলাদেশের সকল উপজেলা থেকে আগত স্বর্ণকিশোরীদের মধ্যে ২৫ জন উইনার হয়।কল্পনাও করতে পারি নি আমি তাদের মধ্যে একজন হতে পারবো।ওইদিন শপথ গ্রহন করার পরে নিজের বিদ্যালয়ের মধ্যেই কাজ করতে হয়েছিলো এক্সামের জন্য।কিন্তু এখন সময় পাওয়ায় ডামুড্যা উপজেলায় প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রী দের সাথে আলোচনা করি।
প্রধান শিক্ষক মণ্ডলীর কথামতো ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাব গঠন ও লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করার শপথ গ্রহণ করে।ডামুড্যা উপজেলায় ও এবার থেকে স্বর্ণ কিশোরীর পরিপূর্ণ যাত্রা শুরু হবে আশা করছি।আমার একা হয়তো সম্ভব হতোনা।আমার সাথে ছিলো আলহাজ্ব ইমাম উদ্দিন মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বর্ণ কিশোরী ক্লাবের সদস্য আপন,আনন্দ,পূর্ণিমা,মিথু ও দোলা।তোমাদের ও অসখ্য ধন্যবাদ জানাই। সকলের দোয়া নিয়ে আশা করছি আমরা কৈশোর পুষ্টি, বাল্যবিবাহ রোধ সহ সকল লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হবো।
আমরাও ছোটদেরবন্ধুর পক্ষ থেকে আশা করি ওরা ওদের লক্ষ্য পুরণে একনিষ্ঠচিত্তে কাজ করবে এবং আমরা সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ ওদের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করবো। আমাদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন ভাবে কিশোর কিশোরীদের সাথে সম্পৃক্ততা আছে। কারো কিশোর কিশোরী সন্তান আছে কারো কিশোর কিশোরী ভাই বোন আছে কারো কিশোর কিশোরী আত্মীয় আছে। তাই ওদের স্বাস্থ্য,পুষ্টি এবং নিরাপত্তার কথা আমাদেরই ভাবতে হবে। আসুন সবাই মিলে সুন্দর আগামী গড়ে তুলি।
বিশেষ কৃতজ্ঞাতাঃ স্বর্ণকিশোরী ইরা ও তার বন্ধুদের প্রতি।
Comments are closed.