spot_img
More
    Homeঅন্যান্যরাজউক জীবন:দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলোনা

    রাজউক জীবন:দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলোনা

    “মানুষ হওয়ার জন্য শিক্ষা” এই ব্রত নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় “রাজউক উত্তরা মডেল” কলেজ ১৯৯৪ সালে যাত্রা শুরু করে।সে পথে উত্থান ছিলো,ছিলো কিছু পতনের গল্প।সেই কলেজ জীবনটাকে একটু রঙিন করে সাজিয়ে তুলি চলুন।

    কলেজে ঢোকার পথেই চোখে পড়বে একটা মস্ত গেইট।গেইটের পাশে কালো পোশাকের কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী। কলেজে এনারা মামা বলেই পরিচিত।আপাতদৃষ্টিতে পাথুরে চোখের মনে হলেও তাদের মধ্যে রসের কমতি নেই।আপনি কতটা নিংড়ে নিতে পারেন সেটাই বিবেচ্য।ভেতরে ঢোকার পরেই একটা সুদৃশ শহীদ মিনার,তার পাশেই হেল্প ডেস্ক চোখে পড়বে।সামনে দুটো বাস্কেটবল গ্রাউন্ড আর ওপাশে খেলার মাঠ।সোজাসুজি অপর পাশে ক্যান্টিন।করিডোর ধরে কলেজ বিল্ডিং এ প্রবেশ করা যেন এক ভিন্ন জগতে প্রবেশ করা।হেটে যেতে চোখে পড়বে গ্যালারি।সাকিব আল হাসানের রাজউক এ আসার ছবি থেকে শুরু করে অন্যান্য বিখ্যাত ব্যক্তিদের এ কলেজে আসার ছবি,প্রাক্তন অধ্যক্ষ থেকে বর্তমান অধ্যক্ষের ছবি,কলেজের বেস্ট অফ দি বেস্টদের ছবি,তার পাশে কলেজের কিছু সার্টিফিকেট।বলতে গেলে হেঁটে যেতে যেতে একনজরে কলেজটা নিয়ে জানবেন।

    রাজউক কলেজে মোট দুটি শিফটে ক্লাস হয়।প্রভাতি আর দিবা।দুটি শাখায় রয়েছে বাংলা ইংরেজি মাধ্যম।সবমিলিয়ে এটাকে বলা হয় উইং।কলেজে মোট উইং চারটি।প্রতিটি উইং এর পোশাক আলাদা।আর সব শিক্ষার্থীর রয়েছে আইডি কার্ড ও নেমট্যাগ।এভাবেই একজন শিক্ষার্থীকে দেখেই আপনি তার সম্পর্কে কিছু সাধারণ তথ্য জানতে পারবেন।

    রাজউক কলেজের ক্লাসরুমগুলো একটা বিচিত্র জায়গা। এখানে প্রায় সব ধরণের মানুষ এর দেখা পাবেন সহপাঠী হিসেবে।কেউ তুখোর গণিতবিদ, কেউবা সুরের মোহ ছড়িয়ে দেয় গানে,কারো দৃপ্ত গলার আবৃত্তি মোহের জগত তৈরী করে,কেউ বা দারুণ ছবি আঁকে,কারো কবিতা,গল্প শুনে হয়ত মনেই হবেনা সেগুলো আপনার সহপাঠী লিখতে পারে।কেউ ঢাকার বাসিন্দা তো কেউ সূদুর কুড়িগ্রাম,কক্সবাজার,পঞ্চগড় থেকে এসেছে।উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিন্মবিত্ত এই পরিচয়টা অনেকটাই ঘুচে যায়।এখানে সবাই সমান।সবাই এক একজন রাজউকিয়ান।

    রাজউক কলেজে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ এই ছয় বছরের বর্ণিল জীবনে দেখা পাবেন দু’শ এর অধিক শিক্ষক শ’খানেক অফিস সহকারী এবং মামাদের।কলেজের শিক্ষকদের সবাই ভালো বিশ্ববিদ্যালয় এর ভালো ডিগ্রিধারী।আর তাদের পড়ানোর ধরণ অসাধারণ।কিছু শিক্ষক রয়েছেন বন্ধুর মতো,কেউ গম্ভীর,কেউ বেরসিক ক্লাসের পাঠ শেষ করান আবার কেউ বলেন আজ একটু গান বা গল্প হলে মন্দ হয়না।

    অবকাঠামোগত দিক দিয়ে রাজউক কলেজ অসাধারণ।কলেজে দুটো ভবন রয়েছে। একটি তিন তলা ভবন আরেকটি তিনটি ভবনের সমন্বয়ে করা।এটি কলেজের মূল ভবন।ভবনের মাঝখানে পাবেন একটি বর্গাকার সবুজ মাঠ। আলো আসা যাবার জন্যই করা।কলেজে রয়েছে এক সুবিশাল লাইব্রেরি। ক্লাসের আগে,ক্লাসের পরে,টিফিন আওয়ারে ইচ্ছেমতো বই পড়া যায় এখানে।তবে অনেকেই ভীড় করে এসির বাতাস খাবার জন্য। কলেজে রয়েছে একটা জিমনেশিয়াম, নামাজের ঘর,সুসজ্জিত কম্পিউটার ল্যাব যেখানে কেউ কম্পিউটার এ কাজ করতে যায়,কেউ যায় লুকিয়ে গেমস খেলতে।অনেককেই আবার কম্পিউটারের থেকে ঘুম বেশি টানে।কলেজের বিল্ডিং নবাগতদের কাছে চোরাগলির মতোই।কলেজের ক্যান্টিনের ডিজাইন টাও দারুণ। তবে হ্যাঁ ভোজনরসিক হলে মোটেও ক্যান্টিন এর খাবারের ওপরে আস্থা রাখবেন নাহ।

    কলেজের সেন্ট্রাল হল বোধহয় সবচেয়ে মজার জায়গা।স্টেজ দাপানো সব তারকারা এই সেন্ট্রাল হল দাপিয়েছেন একসময়।তুখোড় বক্তব্য দেয়া ছাত্র আজকে হয়ত বড় বিতার্কিক, নাচের মুদ্রা তোলা মেয়েটা আজকে নুসরাত ফারিয়ার মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রী, সেন্ট্রাল হলের পেছনে বসে টুংটাং গিটারে সুর তোলা ইকরাম ওয়াসি আজকে কনক্লুশন ব্যান্ডের গিটারিস্ট, Trainwreck ব্যান্ড যারা বিদেশের কনসার্টে স্টেজ শেয়ার করে তাদের গিটারিস্ট ও এই ছেলেটাই।সেন্ট্রাল হলে আপনি দেখা পাবেন ভবিষ্যৎ এর কিছু সুপারস্টারদের। তবে বিশেষ সম্প্রদায়ের দেখা পেতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত ওয়াশরুমে যাতায়াত থাকতে হবে।কখনো হয়ত বিরস ক্লাস ভালো লাগছেনা এসে পড়লেন ওয়াশরুমে কিংবা আড্ডা দিতে ক্যান্টিনে, আর খুব সাহসী হলে সেন্ট্রাল হলে। অনেকে আবার লিফটে বা সিড়িতেও ঘুরে বেড়ায়।তবে সাবধান ভাইস প্রিন্সিপাল,এডজুটেন্টদের খপ্পরে পড়লে রক্ষা নেই।কলেজের সেন্ট্রাল হল বোধহয় সবচেয়ে মজার জায়গা।স্টেজ দাপানো সব তারকারা এই সেন্ট্রাল হল দাপিয়েছেন একসময়।তুখোড় বক্তব্য দেয়া ছাত্র আজকে হয়ত বড় বিতার্কিক, নাচের মুদ্রা তোলা মেয়েটা আজকে নুসরাত ফারিয়ার মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রী, সেন্ট্রাল হলের পেছনে বসে টুংটাং গিটারে সুর তোলা ইকরাম ওয়াসি আজকে কনক্লুশন ব্যান্ডের গিটারিস্ট, Trainwreck ব্যান্ড যারা বিদেশের কনসার্টে স্টেজ শেয়ার করে তাদের গিটারিস্ট ও এই ছেলেটাই।সেন্ট্রাল হলে আপনি দেখা পাবেন ভবিষ্যৎ এর কিছু সুপারস্টারদের। তবে বিশেষ সম্প্রদায়ের দেখা পেতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত ওয়াশরুমে যাতায়াত থাকতে হবে।কখনো হয়ত বিরস ক্লাস ভালো লাগছেনা এসে পড়লেন ওয়াশরুমে কিংবা আড্ডা দিতে ক্যান্টিনে, আর খুব সাহসী হলে সেন্ট্রাল হলে। অনেকে আবার লিফটে বা সিড়িতেও ঘুরে বেড়ায়।তবে সাবধান ভাইস প্রিন্সিপাল,এডজুটেন্টদের খপ্পরে পড়লে রক্ষা নেই।

    রাজউক কলেজ ক্লাবিং করার জন্য বিশাল প্ল্যাটফর্ম দেবে আপনাকে।এখানকার ফটোগ্রাফি ক্লাব তো দেশজুড়ে বিখ্যাত।এর পাশাপাশি ডিবেট ক্লাব,ন্যাচার ক্লাব, আর্ট ক্লাব,মেডিটেশন ক্লাব, ফুটবল ক্লাব,ক্রিকেট ক্লাব,বাস্কেটবল ক্লাব,আইটি ক্লাব সারাবছর জুড়ে একটিভ থাকে।কলেজে প্রতিবছর ইন্ট্রা ট্যালেন্ট হান্ট আয়োজিত হয়,আয়োজিত হয় ট্যালেন্ট শো।প্রতি সপ্তাহের শনিবারে শেষ দুই পিরিয়ড থাকে ক্লাব ডে।আর ক্লাব আয়োজিত ফেস্ট তো থাকছেই।

    কলেজের ডিসিপ্লিন খুবই কড়া সত্য তবে আপনার মেধা বিকাশের জন্য,নিজেকে তুলে ধরবার জন্য এই সাড়ে চার একরের প্রতিষ্ঠান আপনাকে প্রচুর সু্যোগ দেবে।বিশাল বিশ্বের সামনে আপনাকে তুলে ধরতে সাহায্য করবে।আর দিনশেষে যখন র‍্যাগ ডে এর টিশার্ট গায়ে কলেজ থেকে চলে যাবেন তখন আনমনেই বলে উঠবেন”দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলোনা।”

    লেখক: মেহেদী হাসান হৃদয়

    আরো পড়ুন:

    ছোটদেরবন্ধু
    ছোটদেরবন্ধুhttps://www.chotoderbondhu.com
    সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখতে দেখতে জীবনের এক একটি দিন পার করা।সেই ধারাবাহিকতায় ছোটদেরবন্ধু গড়ে উঠছে তিল তিল করে।
    RELATED ARTICLES

    1 COMMENT

    Comments are closed.

    Most Popular