উত্তর থাইল্যান্ডের একটি পর্বতের গুহার নাম থাম লং নাং নন। পর্যটকদের জন্য দারুণ আকর্ষণীয় জায়গাটি। গত শনিবার দুপুরে ১২ জন কিশোরের একটি ফুটবল দল তাদের কোচ সহ ওই পর্বতারোহণে যান। এরপরই ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ভারী বর্ষণের দরুন ওই দলটি পর্বতের গুহার ভেতরে আটকে পড়ে । সাতদিনেও তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি।
জানা যায়, স্থানীয় ওয়াইল্ড বোরস সকার দলের সদস্যরা অনুশীলন শেষে দলটি পর্বতারোহণে যান। তাদের সাইকেল, ব্যাক প্যাক সবকিছুই ছিল গুহার মুখে বাঁধা। এরপরই ভারী বর্ষণ শুরু হলে গুহার ভেতরে প্রচুর পানি ঢুকে যায়। গুহার ভেতরেই আটকে যায় দলটি।
ভারী বর্ষণের ফাঁদে গুহার বেশ গভীরে আটকে পড়া দের জীবিত থাকার আশা নিয়ে উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করা শুরু হয়। তবে সাতদিন পার হয়ে গেলেও এখন তাদের উদ্ধারকরা সম্ভব হয় নি। বৃষ্টি চলতে থাকায় উদ্ধার অভিযানও ব্যাহত হচ্ছে।
গুহা আহরণে বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে দেশটির সশস্ত্রবাহীনি উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। অভিযানে ড্রোন, ড্রিল মেশিন ও প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করা হচ্ছে। নিখোঁজ দলটিকে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশায় স্থানীয়রা মন্দিরে মন্দিরে প্রার্থনা করছেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেনারেল প্যারায়ুত চ্যান-ও-চা শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি নিখোঁজের স্বজনদের সমবেদনা জানান।
সারভাইভাল বক্স
কয়েক ডজন ‘সারভাইভাল বক্স’ যেগুলোতে খাবার, মানচিত্র, মোবাইল, টর্চ লাইট আছে শুক্রবার থেকে সেগুলো গুহার ভেতরে পাঠানো হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গুহার ভেতরে পর্যায়ক্রমে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।
তবে এই সারভাইভাল বক্সগুলা আটকে পড়া দলটি পাবে কি না তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
পুলিশ কর্মকর্তা ক্রাইবুন সুটসং বলেন, সারভাইভাল বক্সগুলোতে একটি বার্তা দেয়া হয়েছে। বার্তাটি হল, ‘যেই বক্সটি পাক সে যেন এটি বাইরে ছুড়ে দেয়, সাহায্য নিয়ে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া হবে।’
উদ্ধার পরিকল্পনা
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গুহায় নিখোঁজদের যদি সন্ধান পাওয়া যায় তবুও তাদের গুহার বাইরে বের করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি তাদের জীবিত পাওয়া যায় তবে নিরাপদে বের করে আনতে সপ্তাহ খানেক লেগে যেতে পারে।
বছরের এসময়কার ভারী বর্ষণে দরুন গুহার ভেতরের পথে পানি অনেকদিন জমে থেকে প্রবাহিত হবে।
এদিকে সপ্তাহের শুরুতে স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেন, স্কুবা গিয়ার ব্যবহার করে আটকে পড়াদের উদ্ধারে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিবিসি/সিএনএন/শিকাগো টাইমস