বইয়ের নামঃ আঁখি এবং আমরা কজন লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রকাশকঃ জ্ঞানকোষ প্রকাশনী পৃষ্ঠাঃ ১১১
লেখক পরিচিতিঃ মুহম্মদ জাফর ইকবালের জন্ম ২৩শে ডিসেম্বর ১৯৫২ সালে সিলেট শহরে। তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণা জেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ আঠারো বছর থেকে তিনি দেশে ফিরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যোগ দেন। তিনি শিশু-কিশোরদের জন্যে লেখালেখি করেন। বিজ্ঞান বিষয়ক লেখার জন্যে তাঁকে ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়। লেখকের অসাধারণ লেখা কিছু বই হচ্ছে আমি তপু, বৃষ্টির ঠিকানা, প্রোজেক্ট নেবুলা, নিঃসঙ্গ গ্রহচারী, নিতু ও তার বন্ধুরা, ক্রমিয়াম অরণ্য, দীপু নম্বর টু ইত্যাদি ।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
বইয়ের নাম শুনেই হয়ত অনেকে বুঝে ফেলেছো,গল্পটি একদল বন্ধুদের ঘিরে অগ্রসর হবে। ঠিক তাই, এই গল্পে তিতু, রিতু, মামুন, আশরাফ, সুজন, ফজলু সবাই অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী কিন্তু তাদের স্কুল জীবন দিন দিন কেমন যেন অলস এবং অসহ্যকর হয়ে উঠছিল। কোন কিছুতেই আনন্দ নেই।
স্কুলে লেখা পড়া বলতেই শুধু মুখস্ত করা। পাঠ্য বইয়ের বাইরে অন্য বই কারো হাতে দেখা মানে সে এক বিশাল অপরাধ। স্কুল এর লাইব্রেরিটা কতদিন ধুলো পরে আছে তার হিসাব নেই। এই অলস দিন গুলোই হঠাৎ করে রঙিন হতে শুরু করে।
কীভাবে জানো? একদিন তাঁদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক এর বদলি হয়। একজন নতুন শিক্ষক আসেন। তাঁর নাম ডঃ রাইসা খালেদ। তিনি একজন চমৎকার মানুষ। প্রথম দিন এসেই যে মজার কাণ্ড করলেন তা হলো স্কুলের সব বেত পুড়িয়ে ফেললেন। আবারো শুরু হলো লাইব্রেরি তে বই পড়া। শুরু হলো খেলাধুলার প্রতিযোগিতা। এর মধ্যেই তাদের স্কুলে একজন নতুন বন্ধু এলো যার নাম আঁখি।
আঁখি নামের মেয়েটার চোখ দুটো খুব সুন্দর কিন্তু সে দেখতে পায় না। প্রথম দিন এসেই আঁখি একজন শিক্ষক এর কাছে অপমানিত হলো। তিনি বললেন, “ভালো মানুষই চাকরি পায়না আবার প্রতিবন্ধিদের লেখাপড়া করার কী দরকার?” আঁখির খুব মন খারাপ হয় আর তখন সে স্কুল থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রথম পরিচয়েই সব বন্ধুরা তাকে আপন করে নিয়েছিল, তাই আঁখিকে স্কুলে রেখে দেয় তার বন্ধুরা। সেদিন থেকেই তাঁদের একসাথে পথ চলা। বন্ধুরা মিলে একসাথে খুব মজা করতো। মাঝে মাঝে রাস্তায় মানুষ বুঝতেই পারতো না যে এখানে একটি অন্ধ মেয়ে আছে।
আচ্ছা তোমরা কী কখনো চিন্তা করতে পারো একটা মেয়ে চোখে দেখতে পায়না কিন্তু সে ক্রিকেট খেলে তার স্কুলের দল্টাকে জিতিয়ে দিলো! এটা সম্ভব হয়েছে একটি বিশেষ বলের কারণে। আখি যেহেতু কানে খুব ভালো শোনে তাই তিতু তার জন্মদিনে এমন একটি বল উপহার দিলো যার ভেতর ঝুনঝুনই আছে। সেই বলের মাধ্যমে তাদের দলের জিতে যাওয়ার মুহুর্তটাও ছিলো অসাধারণ।
এরপর একদিন এই বিজয় উদযাপন করতে আঁখির বাবা সবাইকে নিয়ে বান্দরবন, কক্সবাজার ও রাংমাটির দিকে ঘুরতে গেলো। সেখানেই হলো সব বিপদ। তারা পরলো এক দল সন্ত্রাসীর কবলে। কীভাবে হলো এসব? তাছাড়া সন্ত্রাসীদের থেকে মুক্তি পাবে কিভাবে? জানতে হলে তুমি পড়ে ফেলো এই চমৎকার উপন্যাসটি নয়ত দেখে ফেলতে পারো এই উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচিত্র ‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’ ।
রিভিউ লেখকঃ সৈয়দা নাদিয়া হক
Comments are closed.