ছোটদের জন্য পৃথিবীটা সবচেয়ে আনন্দের আর সেই আনন্দকে বাড়িয়ে দিতেই বিশ্বব্যাপী নির্মিত হয়েছে কেবল মাত্র ছোটদের উপযোগি অনেক অনেক শিশুতোষ সিনেমা যেমন ম্যাক্সকিবল: দ্য বিগ মুভ, ব্লাংক চেক,পিপ্পি লংস্টকিংস সহ আরো অনেক। আজ আমি তারই একটির কথা লিখতে বসেছি। হলিউড সিনেমার জগতে বিখ্যাত নাম। এখানেই তৈরি হয়েছে অসাধারণ এক গল্প নির্ভর শিশুতোষ সিনেমা ” চার্লি এন্ড দ্যা চকলেট ফ্যাক্টরী ”
প্রেক্ষাপটঃ
বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা চকলেট ফ্যাক্টরীর মালিক উইলি ওয়াংকার। হঠাৎ কেউ একজন তার চকলেট উৎপাদনের গোপন কোড বা পদ্ধতি অন্যের কাছে ফাস করে দেয়। এর পর তিনি মনে কষ্ট নিয়ে তার ফ্যাক্টরী বন্ধ করে দেন অনির্দিষ্ট কালের জন্য। সারা বিশ্বে তার ফ্যাক্টরীর চকলেট ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়।
এর বহুদিন পর তিনি আবার ফ্যাক্টরী ওপেন করার পরিকল্পনা করলেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ৬ জন বাচ্চাকে সারা দিন তার ফ্যাক্টরী ঘুরে দেখার আমন্ত্রন জানাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। এর প্রেক্ষিতে তিনি উৎপাদনের সময় মোট ছয়টি চকলেটের মধ্যে মোড়কের আড়ালে ছয়টি গোল্ডেন টিকেট লুকিয়ে রাখলেন। যে যে এই টিকেট পাবে তারাই হবে তার আমন্ত্রীত অতিথি। এর পর রাতের আধারে তিনি বিশ্বের নানা প্রান্তে নোটিশ ঝুলিয়ে দিলেন এবং টেলভীষনেও এ কথা প্রচার করলেন। চকলেট পাঠিয়ে দিলেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। শুরু হয়ে গেল উন্মাদনা। কেননা ঔ ফ্যাক্টরীর মধ্যে কিভাবে চকলেট তৈরি হয় তা পৃথিবীর আর কেউ জানতো না। আর তাই সবাই সুযোগ পেতে চাইলো। সেই সবার মাঝে ছিল ১২ বছর বয়সী চার্লি।
কিন্ত চার্লিরা ছিল খুব গরিব। ১০ ডলার দিয়ে একটা চকলেট কেনার মত সামর্থ্য তার বাবা মায়ের ছিলনা। তবুও তারা অনেক কষ্টে ওর জন্মদিনে যে উপহার দিতো সেটা আগেই ঠিক করে নিয়ে একটা চকলেট কিনে আনলো । সবাই অধীর আগ্রহ নিয়ে চকলেটের মোড়ক খোলা দেখলো। কিন্ত হায়! তার মধ্যে কোন গোল্ডেন টিকেট নেই। ওরা সবাই হতাশ হলো। কি আর করা শেষে সবাই মিলে চকলেটটা ভাগ করে খেল। ওদিকে আগেই একটা মেয়ে প্রথম গোল্ডেন টিকেট পেয়ে গেছে। বিশ্বের তাবৎ দেশে টেলিভিষনে তাকে দেখাচ্ছে।
এর পর একে একে সবাই পেয়ে গেলে কেবল চার্লি কোন টিকেট পেল না। তখন কেবল মাত্র একটা টিকেট অবশিষ্ট আছে। এমন সময় চার্লির দাদা তার শেষ সঞ্চয় ১০ ডলার চার্লির হাতে তুলে দিলেন আরেকটি চকলেট কেনার জন্য। চার্লির দাদারও খুব ইচ্ছে ফ্যাক্টরীটা পুরোপুরি ঘুরে দেখবে। কেননা তিনি একসময় ওখানে কিছুটা অংশ দেখেছিলেন কাজের সুবাদে। চার্লি আবার একটা চকলেট কিনে আনলো কিন্তু সেটিতেও কোন গোল্ডেন টিকেট ছিলনা। শেষে চার্লি মনখারাপ করে থাকলো। এক সকালে চার্লি অন্যের ফেলে দেয়া পত্রিকা কুড়াতে গেল। সে একপলকে ফ্যাক্টরীর দিকে তাকিয়ে থাকলো।
সে যখন বাসায় ফিরতে যাবে হঠাৎ দেখলো বরফের আস্তরণের মাঝে একটা দশ ডলারের নোট অর্ধেক বেরিয়ে আছে। চার্লি সেটা উঠিয়ে নিয়ে নিকটস্থ একটা দোকানে গিয়ে একটা চকলেট চাইতেই দোকানদার নিজে ওকে বাছাই করে একটা চকলেট দিল। চার্লি আর দেরি না করে সেখানেই মোড়ক খুলে ফেলল এবং আশ্চর্য হয়ে দেখলো তার ভিতরে গোল্ডেন টিকেট। দোকানী নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে শেষ গোল্ডেন টিকেট ওয়ালা চকলেটটা তার দোকানেই ছিল। কয়েকজন কাষ্টমার চার্লিকে বললো টিকেটটা বিক্রি করতে। কিন্ত দোকানদার ওকে নিষেধ করলো। চার্লি বাসায় ফিরে আসলো। সবাইকে টিকেট দেখালো সবাই খুব খুশি।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছোট্ট চার্লি বলে উঠলো সে এই টিকেট বিক্রি করবে। যে টাকা পাবে তা দিয়ে তাদের অভাবী সংসার অনেক দিন চলে যাবে। সবাই আবার মন খারাপ করলো। চার্লির নানা ওকে অনেক কিছু বুঝানোর পর ও সিদ্ধান্ত নিল ও ফ্যাক্টরীতে যাবে। শেষে শুরু হলো সেই আশ্চর্য থেকে আশ্চর্য কাহিনী। বন্ধুরা বাকিটুকু জানতে হলে দেখতে হবে অসাধারণ এই সিনেমা “চার্লি এন্ড দ্যা চকলেট ফ্যাক্টরী”
মূল লেখকঃ রোয়াল ডাল
মূল অভিনেতাঃ চার্লি চরিত্রে ফ্রিডি হাইমোর এবং উইলি ওয়াংকার চরিত্রে জনিডেপ।
Comments are closed.