আবরারের মৃত্যুটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। রাজনীতির নামে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে তান্ডব শুরু হয়েছিল পচাত্তর পরবর্তীতে তা এখন ভয়াবহ আর ভয়ংকর এক আতংকের নাম। একটি জাতি যে শুধু আর্থিক উন্নতি দিয়েই এগিয়ে যেতে পারে তা ভুল প্রমানীত হয়েছে অনেক আগেই। বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি বলে অভিধানে আর কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতির রথে চরে এখন অনেক শিক্ষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। ছাত্ররা তাদের অহংকারকে হারিয়ে ফেলে।
জাতির জনক যে ছাত্র রাজনীতি দিয়ে বাংলাদেশ নামের এক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যাদের তেজোদীপ্ত চেতনার আলোতে মায়ের ভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা স্বার্থন্বেষীদের কুৎসিত লোভে অন্ধকারে ভরে গেছে। এখনই সিন্ধান্ত নিতে হবে এমন কুৎসিত ছাত্র রাজনীতির আদৌ প্রয়োজন আছে কী না? ভাষা, স্বাধীনতা সব অর্জনেই ছাত্র রাজনীতির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। আমি সৃজনশীল, নেতৃত্ব বিকাশের ছাত্র রাজনীতির পক্ষে। ছাত্র জীবনে অসং্খ্য প্রতিকুলতার মাঝেও ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম। বংগবন্ধুর আদর্শের সংগঠন করেছি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও ছিলাম। আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারন করি। আমি মনে করি আজকের রাজনীতি দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যাপক পরিবর্তন দরকার।
আরো একটা কথা বলতে চাই আমার অনেক অর্জন ছাত্র রাজনীতির কারনেই হয়েছে। কিন্তু আজ এত বছর পর যখন ছাত্র রাজনীতির এই কুৎসিত চিত্র দেখি তখন মনে হয় এর পরিবর্তন দরকার। আপনারা অনেকেই আওয়ামী লীগের সব কিছু খারাপ এটা প্রমান করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করেন। কিন্তু এই আওয়ামী ছাত্র লীগ অথবা বংগবন্ধুর গড়া ছাত্রলীগের অতীতের অর্জনকে তুচ্ছ করার কোন যুক্তিযুক্ত কারন খুঁজে পাই না। মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলোর অপরাজনীতি সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। এখন সময় এসেছে পরিবর্তনের। শুধু উচিত বিচার নয়, রাজনীতি যে পথে যাচ্ছে তা রোধ করতে হবে। লাগাম না টেনে ধরলে লাভ নেই। জিয়া এরশাদের সময়ে তো আমরা ছাত্র ছিলাম। ছাত্র রাজনীতি করেছি। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র, আর টেন্ডারবাজী, দূর্বৃত্তায়নের লাইসেন্স দিয়ে কী ক্ষতিই না করেছিল। তারই পূনার্বৃতি হচ্ছে। তবে আশা রাখি এর লাগাম টেনে ধরবেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা চেস্টা করছেন। এর মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।
পরম করুনাময় প্রিয় সন্তান আবরারের আত্মার শান্তি দান করুন। দানবমুক্ত হোক আমাদের প্রিয় প্রাংগণ।