সম্প্রতি বিশ্বে সাড়া জাগানো এক শিশু মারিয়াম মাসুদ।মারিয়াম মাসুদ ছোট্ট এক জোড়া চোখে বিশ্বকে পরিবর্তন করার স্বপ্ন দেখে। মেধাবী এবং তেজস্বী এই শিশুটি মাত্র ৯ বছর বয়সে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করেছে (মাশাআল্লাহ)। সে শুধু কুরআনে হাফিজাই নয়, বিভিন্ন সহ-শিক্ষামূলক এবং সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে সে অংশগ্রহণ করে। পৃথিবীতে মানবতা বিস্তারের লক্ষ্যে উদ্যমী সে, এই ছোট্ট এক জোড়া চোখে সে বিশ্বকে পরিবর্তন করার স্বপ্ন দেখে! একইসাথে সে একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, মেধাবী ছাত্রী, বক্তা, উপস্থাপিকা এবং শিক্ষিকা। “আল্লাহ তা’আলা কে ভালোবাস, নবী মুহাম্মাদ (সা) কে ভালোবাস। কুরআন পড় এবং হৃদয়কে আলোকিত কর”। ~মারিয়াম মাসুদ
ছোটবেলা থেকেই সে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সে পর পর তিন বছর (২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ সালে) আইসিএনএ-এমএএস কুরআন চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে পরপর তিনবার সে হেল্পিং হ্যান্ড (এইচএইচআরডি) কুরআন চ্যাম্পিয় অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। ২০১৪ সালে গাইড ইউএস টিভি কুরআন চ্যাম্পিয়ন হয় মারিয়াম। আইটিভি ইউএসএ এবং গাইড ইউএস টিভি তে “কুরআন উইথ মারিয়াম” নামে তার একটি ধারাবাহিক অনুষ্ঠান প্রচার হয়। মারিয়াম ইউটিউবে শিশুদেরকে কুরআন শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করে। তার ইউটিউব চ্যানেলে ঈর্ষনীয় সংখ্যক (প্রায় ৩৫০,০০০) সাবস্ক্রাইবার এবং ফেইসবুক পেইজে ৫ লক্ষেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে।
বিভিন্ন অনুষ্ঠান, টিভি প্রোগ্রামে সে আমন্ত্রিত হয়। সম্প্রতি সে অতিথি বক্তা হিসেবে এডিসনে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়, যেখানে বব মেনডেজের (ইউএস সেনেটর) মতো বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ সহস্রাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলো। এই ঈদে মারিয়ায়ম “ইসলামিক রিলিফ ইউএসএ” এর সাথে “সিরিয়ান রিফিউজি ক্যাম্পেইন” সফলভাবে সম্পন্ন করে। এই ক্যাম্পেইনে সিরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দরিদ্র, নির্যাতিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদেরকে কুরবাণীর মাংস বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, মারিয়ামের মাতৃভূমি বগুড়া, বাংলাদেশ। ১৯৯৮ সালে তার বাবা কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। ২০০৬ সালে নিউ জার্সি তে মারিয়াম জন্মগ্রহণ করে। সে এবার সপ্তম শ্রেণিতে। মারিয়ামের বাবা সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার ম্যানেজার, মা গৃহিণী, দাদী জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত বাংলাদেশের বিখ্যাত ঔপন্যাসিক রামেনা আফাজ।
বাংলাদেশ সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করায় সে বলে-
“বাংলাদেশকে আমি ভালোবাসি, বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে আমার ভালো লাগে। বাংলাদেশী শিশুদেরকে আমি হৃদয়ের গভীর থেকে অনুভব করি। তাদেরকে নিয়ে আমি কাজ করতে চাই, তাদেরকে কুরআন শেখা ও বোঝার মাধ্যমে সুন্দর জীবন গঠণে অনুপ্রাণিত করতে চাই। আমি খুবই দুঃখিত যে বাংলাদেশের শিশুরা অপসংস্কৃতি বিশষত নাচ, গান, সিনেমা দ্বারা বিপুলভাবে প্রভাবিত হচ্ছে যা তাদের জীবনের সফলতার পথে বাধা”।
জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে মারিয়াম বলে, তার দুইটি লক্ষ্য। প্রথমত সে একজন ইসলামিক বিশেষজ্ঞ হতে চায় তার ছোট ভাই এবং বোনদের কুরআন শেখা ও বোঝায় অনুপ্রাণিত করার জন্য। দ্বিতীয়ত, সে তার বাবার মতো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
মালিহা নামলাহ
মোহাম্মাদপুর প্রিপারেটরী স্কুল ও কলেজ