সোনার চামচ মূখে নিয়ে অনেকের জন্ম হয়েছে বলে আমরা কথার কথা শুনি যদিও আসলে জন্মের সময় কেউ কিছুই মুখে নিয়ে জন্মে না।সুখ,সম্মান,প্রতিপত্তি দেখে মানুষ বলে থাকে অমুক সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছিল বলেই আজ তার এতো সুখ।আমাদের চারদিকে তাকালে আমরা অসংখ্য শিশু কিশোর কিশোরীকে দেখি যারা সোনার চামচতো দূরে থাকুক কোন চামচ মুখে নেওয়ার সুযোগই পায়নি।দু বেলা দু মুঠো ভাত খেতে পায় কিনা সন্দেহ আছে।বেঁচে থাকার জন্য ওদের কত কিছুইনা করতে হয়।কেউ হাত পাতে দুয়ারে দুয়ারে তো কেউ রাস্তার আসে পাশে থেকে বোতল কুড়ায় কাগজ কুড়ায় আবার কেউ কেউ আরো নিচুতে নেমে গিয়ে চুরিও করে।এই সভ্য সমাজ ওদের নাম দিয়েছে পথ শিশু,ওদের নাম দিয়েছে টোকাই এবং আরো একটু সুন্দর বাংলায় কেউ কেউ বলছে সুবিধাবঞ্চিত শিশু। এখন কথা হলো ওদেরকে সুবিধাবঞ্চিত কে করেছে?এ সমাজ করেছে এ সমাজের মানুষ করেছে।আমরাও যেহেতু এ সমাজেরই একটি অংশ তাই এই দায় আমাদের এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা ১০০ জন শিশুর মূখে হাসি ফুটিয়েছি এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু নেই।
দান নয়,সহযোগীতা নয় আমরা কিছু শিশুকে নতুন জামা জুতো কিনে দিয়েছি বলতে চাইনা বরং আমরা ওদেরকে ভালোবাসা বিলিয়েছি যে ভালোবাসাটুকু ওদের প্রাপ্য ছিল।সুন্দর আগামীর স্বপ্নে বিভোর আমরা এ সমাজের একটি অংশ হয়ে সমাজেরই বৃহত্তর একটি অবহেলিত গোষ্ঠীর পাশে দাড়িয়েছি আমাদের হৃদয়ে জমে থাকা ভালোবাসার কিছু অংশ দেবো বলে।আমরা ছবি তুলে সেগুলো ফেসবুক টুইটারে প্রকাশ করি তার মানে এই নয় যে আমরা আমাদের কাজের প্রচার প্রসার চাইছি।আমরা একটি ভালো কাজ করেছি সেটি অন্যদের সাথে শেয়ার করছি এ উদ্দেশ্যে যেন অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হয়ে ভালো কাজে এগিয়ে আসতে পারে।
পথশিশুদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে চেয়েছিলাম আমরা। সেই লক্ষ্য নিয়ে দিনাজপুর বন্ধুসভার সদস্যদের নিজের জমানো টাকায় দিনাজপুর শিশুপার্কে ১০০ জন পথশিশুর মাঝে নতুন জামা বিতরণ করেছি এবং দেখেছি ওদের মূখে কি অসাধারণ হাসি যে হাসি লাখ টাকা দিয়েও কেনা যায় না। নিজেদের নাম না প্রকাশ করার শর্তে অনেকেই আমাদের সাথে এ কর্মযজ্ঞে শামিল হয়েছেন। তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।আমাদের রাজশাহীর বন্ধু তাহমিদ হোসেন অন্তু যাদেরকে পথশিশু বলতে রাজি নয় বরং সুবিধা বঞ্চিত শিশু বলার দাবী জানিয়ে আসছে সেই সব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করতে পারার আনন্দ বলে বুঝানো যাবে না। তেমনই এক শিশু রাবেয়াকে প্রশ্ন করলাম নতুন জামা পেয়ে পেয়ে কেমন লাগছে?সে তার মুখে যে হাসি ফুটিয়ে তুলেছিল তা দেখে মনে হয়েছে গোটা পৃথিবীতে এর চেয়ে সুন্দর মুহুর্ত আর কোন দিন আসেনি।আমরা তাই স্বপ্ন দেখি সুন্দর আগামীর এবং এই স্বপ্ন পুরণে আপনারাও এগিয়ে আসুন। আপনারা যারা এমনই সব ভালোকাজের সাথে যুক্ত আছেন তারা সেসব লিখে পাঠান আমাদেরকে। [email protected] এই ইমেইলে।সাথে ছবিও পাঠাবেন। আমরা তা আন্তরিকতার সাথে প্রকাশ করবো।
ফক্রেঃ বৃবি বিজয়
কৃতজ্ঞতাঃ মোহাম্মদ আলী খন্দকার
Comments are closed.