দেশের সব থেকে বড় পাবলিক পরীক্ষার তকমা গায়ে লাগিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। সম্ভবত দুনিয়াতে আর কোন দেশে আর কোন পাবলিক পরীক্ষা নেই যেখানে এক সাথে এতো পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকে। পাবলিক পরীক্ষার নাম করে আমরা আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাধে চাপিয়ে দিয়েছি এক বিশাল বোঝা।সেই বোঝা বহন করতে পারুক চাই না পারুক তারা তা টেনে নিচ্ছিল এরই মাঝে আমরা তাদের আরো বড় সবর্নাশ করতে শুরু করলাম তার নাম প্রশ্নপত্র ফাঁস।সেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে যারা পরীক্ষা দিয়েছে আর যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়নি তাদের সবার ফলাফল একই রকম হবেনা।কেউ কেউ পরীক্ষার ফলাফল ভালো করবে কেউবা কিছুটা খারাপ করবে এবং তা নিয়ে তাদের নিশ্চই মনখারাপের সীমা থাকবে না।প্রাথমিক সমাপনীর ফলাফল ৩০ ডিসেম্বর,সেদিন যেন দুঃখের ছায়া না নামে। কেননা আমরা অভিভাবকেরা এমন হয়ে গেছি যে বাচ্চাদের এই পরীক্ষাকে জীবনের সব কিছু ভেবে নিয়ে বসে আছি। সুতরাং আমাদের কোন বাচ্চা যদি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস না পায় তাহলে তাদের নানা ভাবে কথা শোনাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।শিশু মনে এর বিরুপ প্রভাব পড়ে।
আমরা ছোটদেরবন্ধুর পক্ষ থেকে বলতে চাই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নামে মাত্র একটি পাবলিক পরীক্ষা।শিক্ষাবিদ কিংবা শিক্ষামন্ত্রনালয় কিংবা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এই পরীক্ষায় ভাল বা খারাপ ফলাফলে একটি কোমলমতি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে না।এমনিতেই এই পরীক্ষা দিতে গিয়ে তারা অনেক সুখ জলাঞ্জলী দিয়েছে তাই ফলাফল যাই হোক সেটিকে মেনে নিতে হবে এবং বাচ্চাদের বুঝাতে হবে সাহস দিতে হবে যে আগামীতে আরো ভালো করবে সেই আশা করছি।
পরিবার থেকে যদি ভালো শিক্ষা না পায়,সাহস না পায়,সাপোর্ট না পায় তাহলে ওদের বেড়ে ওঠা বিঘ্নিত হবে বলে আমরা মনে করি।একটি শিশু কোন একটি কাজ পারে অথচ আপনি যদি বার বার তাকে বলতেই থাকেন এটা তোমাকে দিয়ে হবেনা এটা তুমি পারবেনা তখন সে একটু একটু করে মনোবল হারিয়ে ফেলবে এবং মনে করবে তাকে দিয়ে সেটা হবেনা। তাই কাউকে হতাশ করবেন না কারো মনোবল ভেঙ্গে দেবেন না। বরং একটা কথা মনে রাখুন কোন একটি বাচ্চা যখন কোন একটি কাজ না পারে তার পরও আমি আপনি যদি বার বার তাকে উৎসাহ দিয়ে বলি না তুমি আরো একটু চেষ্টা করলে এটা অবশ্যই পারবে তখন সে মনে মনে অনেক সাহস পায় এবং ভাবে সত্যিইতো বড়রা যেহেতু বলছে তাহলে আমি লেগে থাকি এবং আরেকটু চেষ্টা করি। নিশ্চই আমি এটা পারবো।
ছোটবেলায় আমরা যেভাবে বাচ্চাদের হাটতে শেখাই অনেকটা সেভাবেই আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে হবে।অসৎ পথে ভালো রেজাল্ট করে কোন লাভ নেই সেই জ্ঞানও দিতে হবে। আসুন আমরা ৩০ ডিসেম্বর বাচ্চাদের নিয়ে তাদের যে কোন ফলাফলকেই সাদরে গ্রহণ করি এবং তাদের মনোবল বাড়াতে চেষ্টা করি। তাদেরকে এমন জ্ঞান দিবেন না যা তাদেরকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিবে।
আমরা চাই প্রতিটি শিশু কিশোর কিশোরী সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক।
আপনার মতামত লিখে জানান আমাদেরকে। আপনার মেধাবী কিশোর কিশোরীকে নিয়ে লিখতে পারেন যা পড়ে হয়তো আরো অনেক বাবা মা শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।
–লেখাঃ জাজাফী