জনপ্রিয় সাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবালের গল্প নিয়ে এর আগেও সিনেমা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে দীপু নাম্বার টু সিনেমাটি শিশু কিশোরদের কাছে আজও সমান জনপ্রিয়। এর পর মুক্তিযুদ্ধে কিশোরদের অবদানের কথা স্মরণ করে নির্মিত হয়েছিল আমার বন্ধু রাশেদ। আর এবার তৈরি হলো নতুন আরও একটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র। নাম ‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’। পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম। আঁখি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। কিন্তু প্রতিবন্ধী স্কুলে না পড়ে সাধারণ স্কুলে পড়তে আসে। শিক্ষকের আচরণে আঁখি চলে যেতে চায়। তিতু আর তার বন্ধুরা এগিয়ে আসে। তারা আঁখিকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে চায়। আঁখি জানায়, সে অন্ধ হিসেবে বিবেচিত হতে চায় না, সে আর দশজনের মতো একজন হতে চায়। বন্ধুরা এই চ্যালেঞ্জ নেয়। তারা আঁখিকে অন্ধ হিসেবে করুণা করে না। তাঁকে বন্ধু মনে করে। একবার আঁখি আর তার বন্ধুরা ডাকাত দলের খপ্পরে পড়ে। তাদের রেঙ্গুনে বিক্রি করে দেওয়া হবে। শুরু হয় আঁখির অভিযান।
আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, ছবিটির পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান লাভেলো আইসক্রিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাতো ইঞ্জিনিয়ার একরামুল হক, কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক, মোরশেদুল ইসলাম, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, অভিনেতা আল মনসুর, ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করা জাহিন নওয়ার হক।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘দেশে অনেকেই অনেক সিনেমা করেছেন, কিন্তু বাচ্চাদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র হচ্ছে না। মোরশেদুল ইসলাম এর আগে কয়েকটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। সেগুলো সব বয়সী দর্শক পছন্দ করেছেন। আশা করছি, নতুনটিও সাফল্যের মুখ দেখবে।’
‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’ ছবি নিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেয়ে কীভাবে আর দশজন স্বাভাবিক ছেলেমেয়ের সঙ্গে থেকে সমানভাবে সবকিছুতে অংশ নেয়, এটা এখানে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখানো হয়েছে। ইচ্ছাশক্তি আর সবার সহযোগিতা পেলে একটি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেয়েও সবার মন জয় করে নিতে পারে, তারই প্রমাণ আঁখি চরিত্রটি।’
ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, ‘আমরা বরাবরই শিশুদের নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। মোরশেদুল ইসলাম যখন এই চলচ্চিত্র বানাবেন বলে আমার কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেন, তখন একবাক্যে রাজি হয়ে যাই। শিশুদের ভালো লাগার অনেক রসদ রয়েছে এই চলচ্চিত্রে। শিশুরা যেমন আনন্দ পাবে, তেমনি বড়রাও কোনো অংশে কম আনন্দ পাবেন না।’
মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুদের নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি কোনো সহজ কাজ নয়। এই চলচ্চিত্রে যে কয়জন শিশু অভিনয় করেছে, তারা সবাই নতুন মুখ। তাদের গ্রুমিং করে নিতে হয়েছে। যখন ছবির দৃশ্য শুট শুরু করেছি, তখন দেখি এই শিশুরা দক্ষ শিল্পীর মতো অভিনয় করেছে। তাদের অভিনয় ছিল সাবলীল। এই চলচ্চিত্রে কয়েকজন বিশেষ শিশু অংশ নিয়েছে। তারাও সুন্দর অভিনয় করেছে।’
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’ চলচ্চিত্রের নির্বাহী প্রযোজ মুনিরা মোরশেদ মুন্নী। চলচ্চিত্রে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেনÑসুবর্ণা মুস্তাফা, তারিক আনাম খান, আল মনসুর, সুস্মিতা সিনহা, মুনিরা ইউসুফ মেমী, এস এম মহসিন, আফসানা মাহমুদ, জাহিন নাওয়ার হক, অনন্য সামায়েল, জুয়াররিয়া আহমেদ প্রত্যাশা, কমল সিদ্দিকীসহ আরও অনেকে।
Comments are closed.