স্কুলে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীদের জামা খুলে নেওয়ার ধৃষ্টতা দেখালো শিক্ষক।শিক্ষকের নামে কাগজে অমার্জিত শব্দ লেখার অভিযোগে পুরো স্কুলের সামনে ৮৮ ছাত্রীর জামাকাপড় খুলে নেওয়া হয়। শুধু জোর করে পোশাক খোলাই নয়, ওই ছাত্রীদের উদ্দেশে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও করা হয়। এই হেনস্তার শিকার ছাত্রীরা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম।এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
হিন্দুস্থান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ভারতের অরুণাচল রাজ্যের পাপুম পারে জেলার তানি হাপ্পা (নতুন সাগালি) গ্রামের কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ে ২৩ নভেম্বর এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ আছে, ছাত্রীদের মধ্যে কে বা কারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এক ছাত্রীর নাম করে একটি কাগজে অমার্জিত কথা লিখেছিল। যেকোনোভাবে সেই কাগজ শিক্ষকদের হাতে পড়ে। কিন্তু কে এই কাজ করেছে, তা জানাতে অস্বীকার করে শিক্ষার্থীরা। তখনই বিদ্যালয়ের দুজন সহকারী শিক্ষক ও একজন জুনিয়র শিক্ষক ছাত্রীদের স্কুলের পোশাক খুলে শাস্তি দেন। সঙ্গে ছাত্রীদের উদ্দেশে অশ্লীল ভাষায় গালিও দেওয়া হয়।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে ভারতের ‘অল সাগালি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (এএসএসইউ)। ২৭ নভেম্বর এএসএসইউয়ের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পাপুম পারের পুলিশ সুপার তুম্মে আমো বলেন, মামলাটি ইটানগর নারী থানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। ওই ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা শুরু হয়েছে।
ইটানগর নারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ওই শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কথা বলা হবে ভুক্তভোগীদের সঙ্গেও।
অল পাপুম পারে ডিস্ট্রিক্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (এপিপিডিএসইউ) পক্ষ নিগৃহীত ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এপিপিডিএসইউয়ের প্রেসিডেন্ট নাবাম টাডো বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।
স্কুলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এ ধরনের ঘটনা শিশুমনে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে ঘটনার কঠোর নিন্দা করেছে অরুণাচল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি।
সখীপুর পিএম পাইলট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে আপন তিন বোন। এই ৩ বোন এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তারা উপজেলার বেতুয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী শফিকুল ইসলাম ও রেখা ইসলাম দম্পত্তির মেয়ে। বিষয়টি এলাকার সবার নজর কেড়েছে।
শফিকুল ইসলাম জানান, সুমাইয়া ইসলাম (১২), সাদিয়া ইসলাম (১১) ও রাদিয়া ইসলাম (১০) নামে তিন মেয়ের জন্ম এক বছর পরপর। তারা একই ক্লাসে লেখাপড়া করে। তারা এবার পৌর শহরের রফিকরাজু ক্যাডেট স্কুল থেকে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তিন মেয়ে লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী। তারা ভালো ফল করবে বলে তিনি আশা করছেন।
বুধবার পরীক্ষা কেন্দ্রে ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়। তিন বোনই ভালো ফল করবে তাদের আশা। সহপাঠী, শিক্ষক ও স্থানীয়রা এই তিন বোনের জন্য শুভকামনা জানিয়েছে।
আমাদের দেশে বাল্য বিয়ে একটা অভিশাপের নাম।এবারও এর কবলে পড়ে জেএসসি দিতে পারেনি অনেক কিশোরী।শিবগঞ্জ (বগুড়া) ও তারাগঞ্জের (রংপুর) ১০০ ছাত্রী বাল্যবিবাহের কারণে এ বছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি।এ ছাড়াও বাল্যবিবাহের কারণে পাথরঘাটায় ৪৫ ছাত্রী জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় বসছে না। অনুপস্থিত ছাত্রীদের অধিকাংশ বাল্যবিবাহের শিকার। যার মধ্যে ৪০ জন ছাত্রীই একটি (গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী) উপজেলার। যারা জেডিসি বা জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে তাদের বয়স ১৩/১৪’র বেশি নয়, এদের কেন পরীক্ষার হলে না গিয়ে স্বামীর ঘরে যেতে হচ্ছে?বাল্য বিয়ের কবলে পড়ে শত কিশোরীর পরীক্ষা দেওয়া হলো না!এটা সত্যিই দুঃখজনক।
বাল্যবিবাহের কুফল থেকে রক্ষার জন্য প্রণীত আইন—বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুসারে বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলেদের ২১ বছর এবং মেয়েদের ১৮ বছর হওয়া বাধ্যতামূলক। নতুন বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৭(১) ধারায় অপ্রাপ্তবয়স্ক কাউকে বিয়ে করলে তজ্জন্য শাস্তি অনধিক ২ (দুই) বত্সর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন, ৭(২) ধারায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক কেউ বিবাহ করলে তার অনধিক ১ মাসের আটকাদেশ বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা জরিমানা করার, ৮ ধারায় পিতা-মাতা, অভিভাবক অথবা অন্য কোনো ব্যক্তি, আইনগতভাবে বা আইনবহির্ভূতভাবে কোনো অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করলে বা অনুমতি বা নির্দেশ দিলে ২ (দুই) বত্সর ও অন্যূন ৬ (ছয়) মাস বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। আইনের ১১ ধারায় বিবাহ নিবন্ধক বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করলে তার জন্য অনধিক ২ (দুই) বত্সর ও অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বা উভয় দণ্ডের বিধান করা হয়েছে।
শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০১৭ সালে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭৭ জন শিক্ষার্থীকে মোট ২ হাজার ৪৬৬ কোটি ৪৬ লাখ ১ হাজার একশ’ আটাশ টাকা বৃত্তি ও উপবৃত্তি বাবদ প্রদান করা হয়েছে। এতে নারী শিক্ষার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। এ উদ্যোগের পাশাপাশি বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীদের বিশেষ প্রকল্পের আওতায় এনে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের হার অনেক কমে আসবে।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক স্কুলছাত্রীর বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিল একই স্কুলের সাত ছাত্রী। তাদের সংগঠনের নাম ‘ঘাসফুল’। এভাবে সারাদেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে দেওয়া হলে তারাই বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা করতে পারবে শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও শিক্ষার্থীদের কাছে থাকলে, কর্মকর্তারা জানতে পারলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে।
বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার শূন্যের কোঠায়, ২০২১ সালের মধ্যে ১৫-১৮ বছরের বাল্যবিবাহের হারকে এক-তৃতীয়াংশে ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ পুরোপুরি নির্মূল করার অঙ্গীকার করেছে। প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১৯২৯ বাতিল করে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ প্রণয়ন করেছে। এ আইনের ব্যাপক প্রচার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা হলে বাল্যবিবাহ রোধ হবে বলে আশা করা যায়। ইতোমধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করায় ইভটিজিং-এর সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। সরকার কঠোর আইন করায় এসিড নিক্ষেপের ঘটনা কমে গেছে। শিশু অপহরণ ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি এবং কঠোর শাস্তি প্রদান করা হলে এ জাতীয় অপরাধ কমে যাবে এবং নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা থেকে অভিভাবকেরা মুক্তি পাবে। কোনো ছাত্রীকেই পরীক্ষা কেন্দ্রের বদলে যেতে হবে না স্বামীর ঘরে।বাল্য বিয়ের কবলে পড়ে শত কিশোরীর পরীক্ষা দেওয়া হলো না কথাটি যে আর আমাদের আক্ষেপ করে বলতে না হয়।
আমি সব সময় বলি “আমার বোন পৃথিবীর সেরা বোন” কথাটা কেন বলি সেটা এখন বলতে চাইছিনা। আজ বরং চলুন অন্য এক বোনের গল্প শুনি।আমার দেখা পৃথিবী সেরা বোন হতে পারে সে।বয়স কতইবা হবে এই ধরুন বার কিংবা তের বছর।এই ছোট্ট মেয়েটিকে আমি অনায়াসে পৃথিবী সেরা বোন বলে দিচ্ছি দেখে জানি সবাই ভ্রু কুচকাবে।কপালের ভাজ আরো দৃঢ় হবে।কিন্তু গল্পটা শোনার পর আশা করি অনুভূতিটা বদলে যাবে।ধানাকঃ পৃথিবী সেরা এক ভাই বোনের গল্প।
পৃথিবী সেরা এই বোনের নাম পরী।যে তার এক মাত্র ভাইয়ের কথা ভেবে যথেষ্ট মেধাবী হওয়ার পরও প্রতি পরীক্ষায় ইচ্ছে করে ফেল করে।ফেল করার পর পরিবার থেকে এবং স্কুল থেকে অপমানিত হয়,বকা খায়।কিন্তু পরী ওসব গায়ে মাখে না। সে ফেলকরেছে ইচ্ছে করে এবং সে সেরাদের সেরা হলে যতটা না খুশি হতো তার থেকে হাজার গুন খুশি হয়েছে ফেল করে।একই সাথে তার এক মাত্র ভাইটাও ভীষণ খুশি।বোনের হাত ধরে সে বলেছে তুই পৃথিবী সেরা বোন।আমার জন্য তুই ইচ্ছে করে ফেল করেছিস।বোনটা কেন ইচ্ছে করে ফেল করেছে? কারণ তার একমাত্র ভাই অন্ধ।ভাইয়ের বয়স ৮ বছরের কিছু বেশি।আর কদিন পরই ভাইটা নয় বছরে পড়বে।সেও একই স্কুলে পড়ে।অন্ধ বলে ক্লাসের কেউ তাকে সহযোগিতা করেনা।বোন ভাবলো সে নিজেই ইচ্ছে করে ফেল করবে যেন ভাইয়ের সাথে একই ক্লাসে পড়তে পারে আর ভাইকে আগলে রাখতে পারে।বুদ্ধিটা পিচ্চি ভাইয়েরও পছন্দ হলো।এই অন্ধ ভাইটার নাম ছোটু।
পরী আর ছোটু দুই ভাই বোন থাকে তাদের চাচার বাড়িতে।চাচা সারাদিন রাত মাতাল থাকে তবে কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেনা।চাচি নিজে খেটেপিটে সংসার চালায়।মাঝে মাঝে পরী আর ছোটুকে বকাঝকাও করে।পরী আর ছোটু দুজনেই পরিবারে নানা কাজে সহযোগিতা করে।কোন এক দুর্ঘটনায় ওদের বাবা মা চিরদিনের জন্য হারিয়ে যায়।সেই থেকে পৃথিবীতে ছোটুর বাবা মা বোন সব ভূমিকাতেই পরী।
ছোটু জন্ম থেকে অন্ধ ছিলনা।এক আঘাতের পর সে ধীরে ধীরে চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করে।ওর বয়স তখন চার বছর।ওর শুধু মনে আছে শেষ বার ও সালমান খানের দাবাং ছবিটি দেখেছিল।তার পর আর কিছুই দেখেনি সে।ছোটু সালমান খানের ভীষণ ভক্ত।তার প্রতিটি গান,প্রতিটি ডায়লগই প্রায় তার মুখস্ত।ছোটু আর পরী থাকে ইন্ডিয়ার রাজস্থানের জায়সেলমিরে।জায়সেলমির মরুভূমির জন্য বিখ্যাত।সারা পৃথিবী থেকে অগণিত পযর্টক আসে এখানে।
পরী তার এক মাত্র ছোট ভাইয়ের ঠিক উল্টো।তার পছন্দ শাহরুখ খান।স্কুলে যাওয়া আসার পথে দুই ভাই বোন তাই শাহরুখ সালমান নিয়ে গল্প করতে করতে যায়।কেউ জেতেনা কেউ হারেনা। তারা মিটমাট করে বলে ওরা দুজনতো করণ অর্জুন।
পরীর একমাত্র ইচ্ছে তার একমাত্র ছোটভাইয়ের চোখের আলো ফিরিয়ে আনা।সে ছোটুকে কথা দিয়েছে আগামী জন্মদিন আসার আগেই তার চোখে আলো ফিরিয়ে দেবে।জন্মদিন আসতে আর বেশিদিন বাকি নেই।এবার ছোটুর বয়স নয় বছর হবে।কিন্তু পরী জানেনা কিভাবে ছোটুর চোখের আলো ফিরিয়ে আনবে।তাদেরতো চিকিৎসা করার মত কোন ক্ষমতা নেই।পরী যখন তার ছোট্ট ভাইটিকে বলেছে তোর আগামী জন্মদিনেই তোকে আমি রংধনু দেখাবো তখন ছোটু হেসে দিয়ে বলেছে তুইকি আমাকে রাত্রিবেলার রংধনু দেখাবি?ছোটুতো জানে সে অন্ধ এবং সে চোখেই দেখবেনা তাহলে রংধনু দেখা আর রাত দেখাতো একই কথা।
এক সকালে ছোটুদের বাড়িতে এক স্কুল শিক্ষিকা আসলেন।ছোটুকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া শেখাতে চান যেন ওর জন্য সহজ হয়।কিন্তু ছোটু কোন ভাবেই রাজি নয়।সে বলে সেতো অন্ধ না।পরীও বলে আমার ভাই অন্ধ না।ও একদিন না একদিন আবার দেখতে পাবে।কিন্তু কেউ জানেনা কিভাবে সেটা সম্ভব হবে।
একদিন পরী,ছোটু আর তার মাতাল চাচা গেল সিনেমা দেখতে।পরী সিনেমা দেখে দেখে পাশে বসে থাকা ছোটুকে কাহিনী শোনাতে থাকে আর ছোটু আনন্দ পায়।সিনেমা দেখা শেষ করে বের হওয়ার পথে একটা পোষ্টারে চোখ আটকে যায় পরীর।সেই পোষ্টারে তার প্রিয় নায়ক শাহরুখ খানের ছবি।পাশে বড় বড় করে লেখা শাহরুখ খান অন্ধদের চোখের আলো ফিরিয়ে আনার জন্য সহযোগিতা করছে।পরী সেই পোষ্টারটা ছিড়ে বাড়িতে নিয়ে আসে।তার পর সুন্দর করে ভাইয়ের চোখের আলো ফিরিয়ে আনতে শাহরুখ খানকে চিঠি লেখে।
ডাক টিকেটের পয়সা নেই।পোষ্ট মাস্টারকে অনুরোধ করে টিকেট লাগিয়ে চিঠি পাঠাতে,পরে একদিন টাকা দিয়ে দেবে।পোষ্ট মাস্টার চিঠিটা রেখে দেয়।পরে সে ডাক টিকিট লাগিয়ে চিঠিটা পাঠায়।কিন্তু পরী পরের দিনও চিঠি নিয়ে আসে তার পরের দিনও আসে। এভাবে অনেক গুলো চিঠি দেয়।একদিন পোষ্টমাস্টার পরীর কাকাকে ডেকে চিঠি গুলো ধরিয়ে দেয়।সে সেই একটি চিঠিতে শুধু ডাক টিকেট লাগিয়ে পাঠিয়েছিল বাকি গুলো আর পাঠায়নি। পরী সেটা জানতেও পারেনি।
কি একটা কারণে পরী রাতের অন্ধকারে কাকার ট্রাংক খুলে কিছু টাকা নিতে চেষ্টা করে।যখন টাকা নেওয়া শেষ হয়েছে তখন ট্রাংকের এক পাশে তার চোখ আটকে যায়।সে দেখে তার লেখা চিঠিগুলো ওখানে যত্ন করে রাখা আছে।পরীর বুকটা ফেটে যেতে চায়।কিন্তু সে ভাইয়ের জন্য মনে সাহস রাখে।চিঠি গুলো নিয়ে ট্রাংকে তালা লাগিয়ে ছোটুকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে।তার পর সেই রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়।
কোথায় যাচ্ছে পরী? তাদের বাড়ি থেকে প্রায় তিনশো কিলোমিটার দূরে জায়সেলমিরের এক শুন্য মরূভূমিতে শ্যুটিং করতে আসছে শাহরুখ খান।সে ভাইকে নিয়ে শাহরুখ খানের সাথে দেখা করে ওর চোখের জন্য সাহায্য চাইবে।ছোট্ট পরী তার চোখের আলো হারিয়ে ফেলা ভাইয়ের হাত ধরে হাটতে থাকে।রাস্তায় কোন গাড়ি নেই।কোন দিক দিয়ে যেতে হবে তাও তাদের জানা নেই।হাটছে তো হাটছে।একসময় ছোটু বলে খুব ক্ষুধা লেগেছে কিছু খেতে দে।পরী বলে আরো একটু এগিয়ে তার পর খাস।কিন্তু সে নাছোড় বান্দা।একটা গাছের নিচেয় বসে একটা শুকনো রুটি খায় দুই ভাই বোন।পানি খাবে বলে যখন ব্যাগ খোজে দেখতে পায় কোন পানি নেই।পরী বলে সামনে কোথাও না কোথাও পানি পাবো তখন খেয়ে নেব।ছোটু বলে এবার দুজনই মরবো পানির পিপাসায়।
পৃথিবীর সেরা সেই বোনটি তার একমাত্র ভাইয়ের চোখে আলো ফেরাবে বলে ভাইয়ের হাত ধরে বেরিয়ে পড়েছে অজানায়।হাটছেতো হাটছেই।চারদিকে কোন জনমানুষের চিহ্ন নেই।কতদূর এসেছে কিংবা এটা কোন জায়গা তা তাদের জানা নেই।বাড়ি আর স্কুল ছাড়া তারা কোন দিন কোথাও যায়নি। হঠাৎ দেখতে পেলো রাস্তার ধারে একটা ট্রাক দাড়িয়ে আছে আর তার নিচেয় এক লোক শুয়ে আছে। পরী কাছে গিয়ে বললো কাকা পিপাসায় বুক ফেটে যাচ্ছে একটু পানি হবে?লোকটা এই বিরান মরুভূমিতে দুটো ছোট্ট বাচ্চাকে দেখে অবাক হলো।জানতে চাইলো তোমাদের বাবা মা কোথায়?পরী হয়তো কিছু বলতো না কিন্তু সাল্লু ভাইয়ের ভক্ত ছোটু গড় গড় করে বলে দিল তারা সেই অনেক আগে উধার মে চাল গায়া। লোকটার খুব মায়া হলো। সে পানি দিল এবং দুই ভাই বোন তৃপ্তি সহকারে পানি পান করলো।লোকটা জানতে চাইলো কোথায় যাবে?কেন যাবে। পরী লুকাতে চেয়েছিল কিন্তু সাল্লু ভাইয়ের সাগরেদ আবার বলে দিল।পরী অভিমান করে বললো এটা বলার কি ছিল? ছোটু তখন বোনের হাত ধরে বললো তুই আমাকে শাহরুখ খানের কাছে নিয়ে যাবি বলেছিস আর আমি সাথে সাথে রাজি হয়েছি কোন প্রশ্ন করিনি।এখন তুই কেন লুকাবি বল।
সেই ট্রাক ড্রাইভার ওদের দুই ভাই বোনকে ট্রাকে উঠিয়ে নিয়ে রওনা হলো।বললো জরুরী কাজ না থাকলে আমিই তোমাদেরকে ওখানে পৌছে দিতাম।শাহরুখ খানকে দেখার আমারও খুব ইচ্ছা।অনেক দূর যাওয়ার পর একটা দুই রাস্তার মোড়ে ট্রাক থেকে দুই ভাই বোনকে নামিয়ে দেওয়া হলো।সাথে কিছু রাজস্থানী নাস্তা আর এক বোতল পানি দেওয়া হলো।ট্রাক চলে যাওয়ার পর চারদিক আবার শুন্য।মরুভূমিতে কেউ নেই কোন বসতি নেই। আবার ওরা হাটছে। অনেক দূর আসার পর দেখলো একটা পিকআপ যাচ্ছে সেটার উপর অনেক মানুষ।গান চলছে সালমান খানের।তালে তালে নাচছে আর গাইছে এক মধ্য বয়স্ক লোক।সে যখন গানের একটা কলি গেয়েছে ছোটু তখন নিচ থেকে অন্য কলি গেয়েছে।লোকটার কানে সেটা পৌছেছে সাথে সাথে সে আবার তাল মিলিয়েছে এবং একই সাথে ছোটুও তাল মিলিয়েছে।
পিকআপের উপর নাচতে থাকা লোকটি চমকে গেছে পিচ্চির গান শুনে।সে পিকআপ পিছিয়ে নিয়ে ওদের সাথে কথা বলেছে।সাথে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।পরী বলেছে এসব লোকখুব একটা ভাল হয়না। ওদের সাথে না যাওয়াই ভাল।ছোটু আবার তাকে সেই আগের যুক্তি দিয়েছে।শেষে পরী আর ছোটু সেই লোকের সাথে উঠে বসেছে।তারা যখন ওই লোকটার বাড়িতে আসলো দেখতে পেলো তার একটা ছোট্ট ছেলে আছে ঠিক ছোটুর বয়সী।সেদিন রাতে ওরা ওখানেই থাকলো।ছোটুর সাথে ছেলেটির অনেক ভাল বন্ধুত্ব হলো।সে রাতে শুয়ে শুয়ে বললো তোকে দেখে মনেই হয়না তুই চোখে দেখতে পাস না।কিন্তু তোর বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেলে তোকে কে দেখবে বল?ছোটু তখন বললো আমি বোনের স্বামীকে অনুরোধ করবো তাদের সাথে থাকার জন্য।শমসের নামের সেই ছোট্ট ছেলেটি তখন ছোটুকে বললো আচ্ছা আমি যদি তোর জিজা হতাম তাহলে তোকে কোন চিন্তা করতে হতো না।আমি আর তোর বোন মিলে তোকে দেখে রাখতাম। অদ্ভুত সেই মুহুর্তটি। যখন ছোট্ট একটি ছেলে তারই মতবয়সী ছোটুর জন্য মায়া দেখিয়ে বয়সে বড় দিদির সমান একজনকে ভবিষ্যতে বিয়ে করার কথা চিন্তাকরে।
পরী আর ছোটুর যাত্রা পথে বিপদের সীমা নেই।শমসেরের বাবা ওদের হাতে কিছু টাকা দিয়ে ওদেরকে একটু এগিয়ে দিয়ে কিভাবে যেতে হবে সব বলে দেয়।ওরা ওখান থেকে একটা পিকআপে চড়ে বসে।কিন্তু একটু যেতে না যেতেই পিকআপ নষ্ট হয়ে যায়।ওরা একটা যায়গাতে দাড়িয়ে ছিল।একটু ঘুরতেই পরী দেখতে পেলো বালুর উপর উপুড় হয়ে কেউ একজন পড়ে আছে।ছোটুতো দেখতে পায়না তাই ছোটুকে বললো তুই একটু দাড়া আমি আসতেছি।সেই পড়ে থাকা লোকটার কাছে গিয়ে ডাক দিলে কোন সাড়া পেলো না।পা ধরে নাড়া দিতেই সে চমকে উঠলো।
এক আমেরিকান বালুর মধ্যে পড়ে আছে।পিপাসায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে। সে পানি পানি বলে চিৎকার করেছে।ছোটু তার বোন পরীকে বললো পানি দিতে।পরী ভয় পেলো।না জানি লোকটা তার ভাইয়ের কোন ক্ষতি করে।তখন ছোটু সৃষ্টিকর্তার অনুকম্পার কথা বললো।পানি পান করার পর আমেরিকান অনেক খুশি হলো। ধন্যবাদ দিল।ওরা যখন চলে যাবে তখন ছোটু বললো লোকটার কাছে চকলেট চাইতে। লোকটা সেটা শুনতে পেয়ে পরীকে কাছে ডাকলো এবং ক্যান্ডিবার ধরিয়ে দিল।দুজনেই সেটা খাচ্ছিল বেশ।হঠাৎ ছোটু গলা ধরে বালিতে পড়ে গেল।যেন কেউ ওকে ক্যান্ডিবারের সাথে পটাশিয়াম সায়ানাইড মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছে আর সাথে সাথে মরে গেছে। পরীর যেন দুঃখের আর সীমা রইলো না।আমেরিকান লোকটাও হতভম্ব হয়ে গেল।পরী যখন হাহুতাশ করছে তখন ছোটু উঠে বসলো।পরীর তখন খুবই খুশি লাগলো।নিখুত অভিনয় করেছে ছোটু।ওদের দুজনকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে।এর সাথে সাথে আমেরিকানের সাথে ওদের ভাল বন্ধুত্ব হলো।একসাথে হাটতে শুরু করলো।
এই আমেরিকান বিশ্বটাকেপায়ে হেটে ঘুরে দেখতে বেরিয়ে এই বিরান মরুভূমিতে পানি শুন্য হয়ে মরতে বসেছিল।আমেরিকানকে যখন বিদায় জানালো ছোট্ট পরী আর ছোটু তখন তারা পাচারকারীদের কবলে পড়েছে।তবে ভাগ্য ভাল পথে এক দস্যুরাণী ওদেরকে উদ্ধার করলো।দস্যু হলেও তিনি খুবই ভাল।রানীদের সর্দারনীর কাছে নিয়ে যাওয়া হলো।তিনি অনেক আধ্যাতিক বিষয় জানেন এবং তিনিও অন্ধ।তিনি জানালেন হাতে সময় মাত্র দুদিন।এর পরই শাহরুখ খান চলে যাবেন।
এর মাঝে আরো অনেক ঘটনা ঘটলো।
একমাত্র ছোট ভাইয়ের চোখের আলো ফিরিয়ে আনতে তিনশো কিলোমিটার দুরে জায়সেলমীর যখন ওরা পৌছালো তখন জানতে পারলো শাহরুখ চলে গেছে।ওখানে এক দালাল নানা কৌশলে মানুষ থেকে টাকা কামিয়ে নিচ্ছিল।সে ওদের বললো এখান থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে শাহরুখ শ্যুটিং করবেন।কাউকে বলোনা চুপি চুপি এই সোজা রাস্তা দিয়ে চলতে থাকো।লোকটা ছিল খুবই খারাপ।মরুভূমির এমন একটা পথ ওদের দেখিয়ে দিল যে ওরা চলতে চলতে থেমে গেল।ছোটু যেন হারিয়ে না যায় তাই নিজের ওড়না দিয়ে ওকে বেধে নিল আর পরী হাটতে লাগলো সামনে।একটু যেতে না যেতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে গেল পরী।সে আর জাগলো না।আশে পাশে কোথাও কেউ নেই।বোনের জন্য চোখের আলোহীন সাড়ে আট বছরের ছোটু তখন দিশাহারা।চিৎকার করতে করতে সেই ঢলে পড়লো।
পরী কিংবা ছোটু দুজনেই আবিস্কার করলো তারা একটা হাসপাতালের বেডে।পরীকে যখন মরুভূমি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল তখন পরী আবছা দেখেছিল যে মুখটি তিনি স্বয়ং শাহরুখ খান। পরী সেটা ছোটুকে বলেছে কিন্তু ছোটু বিশ্বাস করেনি।এর মাঝে সে করিডোর দিয়ে হাটতে গিয়ে দেখতে পেলো সেই মানুষটি বেরিয়ে যাচ্ছে।দ্রুত তাকে ধরতে গিয়েও পারলোনা।বাইরে দেখলো গাড়িতে করে চলে যাচ্ছে লোকটি।ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করতেই সে শুধু মুচকি হাসলো।পরী তার একমাত্র ভাইকে দেওয়া কথা কি তবে রাখতে পারবে না? জন্মদিন আগামী কাল।অথচ ছোটুর চোখের আলো ফিরিয়ে আনা হয়নি।
বিষন্ন মনে পরী যখন করিডোর দিয়ে হাটছে তখন দেখতে পেলো চেয়ারের উপর একটা ছেড়া খাম।খামের উপর একটা ডাকটিকেট লাগানো এবং শাহরুখ খানের ঠিকানা লেখা।হাতের লেখাটা তার নিজের।তার বুঝতে বাকি থাকলোনা যে শাহরুখ খানের কাছে তার লেখা অন্তত একটা চিঠি পৌছেছিল এবং স্বয়ং শাহরুখ খান এই হাসপাতালে এসেছিলেন।বোনের ভালবাসার কাছে পৃথিবী থেমে গেল।ছোটুর চোখের বাধন খোলা হবে। ডাক্তার জানতে চাইলেন তুমি প্রথমে কাকে দেখতে চাও? সে হাসি দিয়ে বললো আমি বড় ভাইকে দেখতে চাই।বড় ভাই মানে সালমান খান।পরীর মুখটা কিছুটাওকি মলিন হলো? চোখের বাধন খুলে দেওয়া হলে সবার আগে সে দেখলো তার পৃথিবীর সেরা মানুষটিকে।যে তার বাবা মা ভাই বোন সব কিছু।সে তার একমাত্র বোন পরী।যে বোনটি পৃথিবীর সেরা বোন।যে কোন ভাবেই হার মানেনা।
ছোটু দেখলো তার পৃথিবীসেরা বোন হাতে একটা কেক আর একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে সামনে বসে আছে,মুখে অনাবিল হাসি।ছোটু দেখলো সেই মোমবাতির আলোর সাথে সুর্যের আলো মিলে সত্যিকার একটা রংধনু তৈরি হয়েছে। সে বললো পরী সত্যিই আমি রংধনু দেখছি।
আমার দেখা সেরা সিনেমা এটি।আমার দৃষ্টিতে সেরা বোনও পরী।এমন বোন যদি কারো থাকে তবে তার জীবনে অপুর্নতা বলে কিছু থাকেনা।আর ছোটু? ছোটুও অসাধারণ।আপনি পথের পাচালী,অপু দুর্গা নিয়ে অনেক কথা বলবেন জানি।তবে আমার নিজের মতে অপু দুর্গার চেয়ে অনেক বেশি ভাল লেগেছে পরী আর ছোটুকে।সিনেমাটিতে অনেক ম্যাসেজ আছে। সময় করে অন্তত এই মুভিটা দেখুন।সম্ভব হলে পরিবারের ছোটদের নিয়ে দেখুন।ভাই বোনের ভালবাসা কাকেবলে তা দেখে ছোটরা শিখুক।
ছোটদের জন্য পৃথিবীটা সবচেয়ে আনন্দের আর সেই আনন্দকে বাড়িয়ে দিতেই বিশ্বব্যাপী নির্মিত হয়েছে কেবল মাত্র ছোটদের উপযোগি অনেক অনেক শিশুতোষ সিনেমা যেমন ম্যাক্সকিবল: দ্য বিগ মুভ, ব্লাংক চেক,পিপ্পি লংস্টকিংস সহ আরো অনেক। আজ আমি তারই একটির কথা লিখতে বসেছি। হলিউড সিনেমার জগতে বিখ্যাত নাম। এখানেই তৈরি হয়েছে অসাধারণ এক গল্প নির্ভর শিশুতোষ সিনেমা ” চার্লি এন্ড দ্যা চকলেট ফ্যাক্টরী ”
প্রেক্ষাপটঃ
বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা চকলেট ফ্যাক্টরীর মালিক উইলি ওয়াংকার। হঠাৎ কেউ একজন তার চকলেট উৎপাদনের গোপন কোড বা পদ্ধতি অন্যের কাছে ফাস করে দেয়। এর পর তিনি মনে কষ্ট নিয়ে তার ফ্যাক্টরী বন্ধ করে দেন অনির্দিষ্ট কালের জন্য। সারা বিশ্বে তার ফ্যাক্টরীর চকলেট ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়।
এর বহুদিন পর তিনি আবার ফ্যাক্টরী ওপেন করার পরিকল্পনা করলেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ৬ জন বাচ্চাকে সারা দিন তার ফ্যাক্টরী ঘুরে দেখার আমন্ত্রন জানাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। এর প্রেক্ষিতে তিনি উৎপাদনের সময় মোট ছয়টি চকলেটের মধ্যে মোড়কের আড়ালে ছয়টি গোল্ডেন টিকেট লুকিয়ে রাখলেন। যে যে এই টিকেট পাবে তারাই হবে তার আমন্ত্রীত অতিথি। এর পর রাতের আধারে তিনি বিশ্বের নানা প্রান্তে নোটিশ ঝুলিয়ে দিলেন এবং টেলভীষনেও এ কথা প্রচার করলেন। চকলেট পাঠিয়ে দিলেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। শুরু হয়ে গেল উন্মাদনা। কেননা ঔ ফ্যাক্টরীর মধ্যে কিভাবে চকলেট তৈরি হয় তা পৃথিবীর আর কেউ জানতো না। আর তাই সবাই সুযোগ পেতে চাইলো। সেই সবার মাঝে ছিল ১২ বছর বয়সী চার্লি।
কিন্ত চার্লিরা ছিল খুব গরিব। ১০ ডলার দিয়ে একটা চকলেট কেনার মত সামর্থ্য তার বাবা মায়ের ছিলনা। তবুও তারা অনেক কষ্টে ওর জন্মদিনে যে উপহার দিতো সেটা আগেই ঠিক করে নিয়ে একটা চকলেট কিনে আনলো । সবাই অধীর আগ্রহ নিয়ে চকলেটের মোড়ক খোলা দেখলো। কিন্ত হায়! তার মধ্যে কোন গোল্ডেন টিকেট নেই। ওরা সবাই হতাশ হলো। কি আর করা শেষে সবাই মিলে চকলেটটা ভাগ করে খেল। ওদিকে আগেই একটা মেয়ে প্রথম গোল্ডেন টিকেট পেয়ে গেছে। বিশ্বের তাবৎ দেশে টেলিভিষনে তাকে দেখাচ্ছে।
এর পর একে একে সবাই পেয়ে গেলে কেবল চার্লি কোন টিকেট পেল না। তখন কেবল মাত্র একটা টিকেট অবশিষ্ট আছে। এমন সময় চার্লির দাদা তার শেষ সঞ্চয় ১০ ডলার চার্লির হাতে তুলে দিলেন আরেকটি চকলেট কেনার জন্য। চার্লির দাদারও খুব ইচ্ছে ফ্যাক্টরীটা পুরোপুরি ঘুরে দেখবে। কেননা তিনি একসময় ওখানে কিছুটা অংশ দেখেছিলেন কাজের সুবাদে। চার্লি আবার একটা চকলেট কিনে আনলো কিন্তু সেটিতেও কোন গোল্ডেন টিকেট ছিলনা। শেষে চার্লি মনখারাপ করে থাকলো। এক সকালে চার্লি অন্যের ফেলে দেয়া পত্রিকা কুড়াতে গেল। সে একপলকে ফ্যাক্টরীর দিকে তাকিয়ে থাকলো।
সে যখন বাসায় ফিরতে যাবে হঠাৎ দেখলো বরফের আস্তরণের মাঝে একটা দশ ডলারের নোট অর্ধেক বেরিয়ে আছে। চার্লি সেটা উঠিয়ে নিয়ে নিকটস্থ একটা দোকানে গিয়ে একটা চকলেট চাইতেই দোকানদার নিজে ওকে বাছাই করে একটা চকলেট দিল। চার্লি আর দেরি না করে সেখানেই মোড়ক খুলে ফেলল এবং আশ্চর্য হয়ে দেখলো তার ভিতরে গোল্ডেন টিকেট। দোকানী নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে শেষ গোল্ডেন টিকেট ওয়ালা চকলেটটা তার দোকানেই ছিল। কয়েকজন কাষ্টমার চার্লিকে বললো টিকেটটা বিক্রি করতে। কিন্ত দোকানদার ওকে নিষেধ করলো। চার্লি বাসায় ফিরে আসলো। সবাইকে টিকেট দেখালো সবাই খুব খুশি।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছোট্ট চার্লি বলে উঠলো সে এই টিকেট বিক্রি করবে। যে টাকা পাবে তা দিয়ে তাদের অভাবী সংসার অনেক দিন চলে যাবে। সবাই আবার মন খারাপ করলো। চার্লির নানা ওকে অনেক কিছু বুঝানোর পর ও সিদ্ধান্ত নিল ও ফ্যাক্টরীতে যাবে। শেষে শুরু হলো সেই আশ্চর্য থেকে আশ্চর্য কাহিনী। বন্ধুরা বাকিটুকু জানতে হলে দেখতে হবে অসাধারণ এই সিনেমা “চার্লি এন্ড দ্যা চকলেট ফ্যাক্টরী”
মূল লেখকঃ রোয়াল ডাল
মূল অভিনেতাঃ চার্লি চরিত্রে ফ্রিডি হাইমোর এবং উইলি ওয়াংকার চরিত্রে জনিডেপ।
ঘটনাটা শুরু হয়েছিল ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগে অভিযুক্ত কার্ল কুয়েগলি বন্দীদশা থেকে পালানোর মধ্য দিয়ে। সে যখন তার জেল ভেঙ্গে পালিয়েছে তখন সে একটা কাপড়ের দোকানে ঢুকলো এবং সে সেখানে লুকিয়ে রাখা তার এক মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করলো।যা সে গ্রেফতার হওয়ার আগে ওখানে লুকিয়ে রেখেছিল।যদিও এটা ছিল অস্পষ্ট যে সে এই ডলার সত্যিই উপার্জন করেছিল নাকি অন্যায় ভাবে অর্জন করেছিল।এরপর কাহিনী মোড় নেয় প্রিস্টন ওয়াটার(ব্রিয়ান বোনসাল) নামের এগার বছর বয়সী কিশোরের দিকে।
প্রিষ্টন ওয়াটারের বাবা ছিল ভীষণ মিতব্যায়ী এবং তিনি কাজ করতেন একটা বাসস্থান সংস্থান কোম্পানীতে। তাই যখন প্রিষ্টন ওয়াটারের জন্মদিনে তার তার দাদি তাকে একটা ব্লাংক চেক দিল সে সেই চেকে মাত্র এগার ডলার লিখে নিল।সে যখন তার এক বন্ধুর জন্মদিনের দাওয়াত পেলো একটি বিনোদন পার্কে তখন তার কাছে কিশোরদের চড়ার উপযোগী রাইডের অনেক কুপন ছিল।দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অ্যাডওয়ার্ডের সাথে সে যখন তার অফিসে গোপন প্লান সম্পর্কে আলোচনা করে ফিরছিল তখন কথা হয়েছিল পরদিন দুপুর একটায় এক মিলিয়ন ডলারের একটা চেক ইস্যু করা হবে। মিটিংএর পর কুয়াগলি যখন তার চুরির টাকায় কেনা জাগুয়ার এক্সজে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে উদ্যত হলো তখন সে প্রিষ্টন ওয়াটারের সাইকেলকে চাপা দিল।
মুলত প্রিষ্টন তখন ব্যাংকের পার্কিং লট দিয়ে বন্ধুকে নিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল।যখন কুয়াগলিকে ওরা চাপ দিলো যে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তখন তিনি কোন উপায় না দেখে একটা চেক লিখে ওর হাতে ধরিয়ে দিলেন। ওর মাঝে পুলিশের গাড়ির হর্ণ শুনে সে তড়িঘড়ি করে চেকে ডলারের পরিমাণ না লিখে প্রিষ্টনের হাতে দিয়ে বললো এটা তোমার বাবাকে দিও। উনি তোমার জন্য নতুন একটা সাইকেল কিনে দেবেন। এই বলেই সে ওখান থেকে চলে গেল।প্রিষ্টন বাসায় ফিরে তার বাবাকে মাকে কিছু না জানিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে চেকটা নিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করলো।হঠাৎ কি মনে করে ব্যাংকের ওয়েব সাইটে গিয়ে ওই একাউন্টে কি পরিমান টাকা আছে সেটা চেক করে ওর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। প্রিষ্টন নিজে অ্যাপল ম্যকিন্টোশ পারফরমা ৬০০ কম্পিউটার ব্যবহার করতো। সে সেই ব্লাংক চেকে এক মিলিয়ন ডলার ক্যাশ হিসেবে প্রিন্ট করে নিল।
পরদিন প্রিষ্টন সেই চেক নিয়ে ব্যাংকে গেল। ক্যাশ অফিসার চেকের অ্যামাউন্ট দেখে তা ক্যাশ করতে সাহস না পেয়ে ম্যানেজারের রুমে নিয়ে গেলেন। ম্যানেজার চেক দেখে প্রথমে এমন হাসি দিলেন দেখেই প্রিষ্টনের অন্তরআত্মা কেপে উঠলো।এর পর প্রিষ্টনের দেয়া চেক তিনি পুড়িয়ে ফেললেন। প্রিষ্টন হতাশ হয়ে গেল। ইস যদি মাত্র দশ বার ডলার বা একশো ডলারও সে লিখতো তাহলে সে তা পেত। এখন সবতো জলে গেল। কিন্ত ওকে অবাক করে দিয়ে ম্যানেজার ওকে সোজা লকারের কাছে নিয়ে গেল এবং এক মিলিয়ন ডলার ওকে দিয়ে দিল। সেই ডলার ব্যাগে ভরে প্রিষ্টন নামের এগার বছরের ছেলেটা সোজা বাড়িতে চলে আসলো।সে একটা দামী শপিংয়ে ছয়দিনের জন্য গ্রাহক হলো। একটা দামী প্রাসাদ কিনলো এবং কম্পিউটারের ভয়েসবক্স সফটওয়্যার দিয়ে ফোনে কথা বলে সেই প্রাসাদ কিনে নিল। এবং নাম দিলো যে সে মিস্টার ম্যানিকটোশের সহকারী। আসলে ম্যাকিনটোশ হলো তার কম্পিউটারের ব্রান্ডের নাম।বুদ্ধি করে সেটাই তার মালিকের নাম বলে চালিয়ে দিল। এছাড়া সে লিমুজিন ভাড়া করলো,গোকার্ট ট্র্যাকে গেল,ওয়াটার রাইডে গেল। এভাবেই সে আইচক্রিম চকলেট,দামী দামী পোশাক কিনে সে এক মিলিয়ন ডলারের ৳৯৯৯,৬৭৫.৮৩ ডলারই খরচ করে ফেললো।
প্রিস্টন নামের এগার বছরের ছেলেটা তাকে আড়াল করতো এই বলে যে সে এই সব কিছু কিনেছে এক মিলিয়নিয়র মিষ্টার ম্যাকিন্টোশের নামে যিনি ওই প্রাসাদে থাকেন।ওদিকে প্রিষ্টন ওয়াটার নামের এগার বছরের ছেলেটা এফবিআই এর এজেন্ট শাই এর দ্বারা চিহ্নিত হলো। এদিকে প্রিষ্টন নিজের জন্মদিনটা ঘটা করে পালন করার লক্ষ্যে একটা বিশাল পার্টির আয়োজন করলো এবং বললো এটা মিষ্টার ম্যাকিন্টোশের জন্মদিন।ওদিকে প্রিষ্টনকে কুয়েগলি,জুইস এবং বিডারম্যান হণ্যে হয়ে খুজে বেড়াচ্ছিল। যখন ওকে ধরে ফেললো তখন তারা জোরাজুরি করলো ডলারগুলো সে কি করেছে তা জানার জন্য। সে আর কি উত্তর দিবে। এ কয়দিনে সেতো সব ডলার খরচ করে ফেলেছে। ওদিকে কুয়েগলি ওকে কিছু করার আগেই পুলিশ এসে তাকে এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের ধরে নিয়ে যায়। আর প্রিষ্টন ওয়াটার নামের এগার বছরের কিশোর আবার তার নিজের বাবা মার সাথে নিজেদের সাদাসিধে সেই বাড়িতে বাস করতে থাকে।
সিনেমায় ব্যবহৃত কিছু বিষয়ঃ
সিনেমাটি চিত্রায়ন করা হয়েছে অস্টিন,স্যান অ্যান্টোনিও এলাকায়। এ ছাড়া কিছু অংশ টেক্সাসের ডালাসে ধারণ করা হয়েছে।প্রিষ্টন ওয়াটার মিষ্টার ম্যাকিনটোশের নামে যে প্রাসাদ কিনেছিল সেটা ১৪১৫ উডব্রিজ ড্রাইভ,অস্টিনে অবস্থিত। আর যে থিম পার্ক দেখানো হয়েছে সেটা টেক্সাসের ফিয়েস্তাতে অবস্থিত।
বক্স অফিসঃ
ব্লাংক চেক সিনেমাটি তিনটি সিনেমাকে পিছনে ফেলেছে সেগুলো হলো এসিই ভেঞ্চুরা,পেট ডিটেকটিভ এবং দ্যা গেটওয়ে যা মুক্তির প্রথম সপ্তাহে আয় করেছে ৫.৪ মিলিয়ন ডলার।আর শুধু মাত্র উত্তর আমেরিকাতেই মোট ৩০.৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
কয়েকদিন থেকেই মনটা পালাই পালাই করছিল।ঢাকা থেকে দূরে কোথাও—আরো দূরে।হঠাৎ ছোটবোন ফোন করে জানতে চাইলো ও কক্সবাজার যাচ্ছে আমি যাবো কিনা। প্রথমে ইচ্ছে হলো যাই,পরে ভাবলাম এতো দূরে—এই গরমে, না থাক।অন্য সময় যাবো।যদিও সমুদ্র আমার ভীষণ প্রিয়।কিন্তু আমার বোন গরমকে পাত্তা দিলোনা। বললো—চলোতো ভালো লাগবে।গরমের দিনে গরমতো থাকবেই।ঢাকা তখন রোদের তাপে উত্তপ্ত নগরী,শেষ পর্যন্ত সমুদ্রেরই জয় হলো।মন বললো—চলো যাই।
পাঁচ এপ্রিল দুপুরের প্লেনে দু’বোন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।চিটাগং হয়ে কক্সবাজার,যদিও নামতে দেয়নি আমাদের বিমান থেকে।তবুও চিটাগং এয়ারপোর্টতো দেখা হলো।আবার দুইটা পনের মিনিটের মধ্যেই কক্সবাজার।একদিনের জন্য,অতএব হাতের ব্যাগেই প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র নিয়েছি।মালপত্রের কোন ঝামেলা ছিলোনা।
আমাদের দলের অন্য তিনজন আগেরদিনে এসেছিলো।তাদের একজন ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে আমাদের নিতে এসেছিলো।এসি গাড়িতে বসে আরাম পেলাম।তখন বেলা তিনটা।ক্ষিদে পেয়েছে,তাই প্রথমেই গেলাম পউশি হোটেলে লাঞ্চ করার জন্য।অনেক রকম খাবার এবং খাবারের মান বেশ ভালো।বিশ রকম ভর্তা একটা প্লেটে,এছাড়াও রূপচাঁদা মাছ,ডাল,ভাত,সবজির একটা আইটেম।খুব তৃপ্তি করে খেলাম।
খাওয়া শেষ করে হোটেলে ছুটলাম।ওখানে আমাদের দলের আরো দু’জন আছে।হোটেল ‘বীচ ভিউ’ রুমে ঢুকে ভালো লাগলো।সুন্দর রুমটা।দরজা খুলে ব্যালকনিতে গেলাম।ওয়াও! হাত বাড়ালেই সমুদ্র।আরেকবার সমুদ্রের প্রেমে পড়লাম।সমুদ্রের ঢেউ গর্জন করে আছড়ে পড়ছে সৈকতে।আমি স্তব্ধ সমুদ্রের বিশালতায়।
একটু ফ্রেশ হয়ে নিয়ে সমুদ্র দেখতে বের হলাম।তখন ভরা জোয়ারের সময়।সমুদ্র উত্তাল।সূর্য অস্ত যাচ্ছে।আস্তে আস্তে করে ডুবতে ডুবতে হঠাৎ সমুদ্রের মধ্যে টুপ করে ডুব দিলো লাল সূর্যটা।ইস! তন্ময় হয়ে দেখছি।হঠাৎ ঢেউ এসে আছড়ে পড়লো পায়ের উপর।পড়ে যাচ্ছিলাম,সঙ্গীরা হাত বাড়িয়ে ধরলো।ছবি তুলছি,হঠাৎ আকাশের দিকে চোখ পড়লো।আরে এটা আরেকটা সুর্য নাকি!
না—চাঁদ উঠেছে।
আমি এবার অবাক হয়ে দেখলাম,সমুদ্রে কোন ঝিনুক নেই! আগে ঢেউয়ের সাথে অনেক গুলো ঝিনুক উঠে আসতো।কোথায় গেল?
এর পর বার্মিজ মার্কেটে চলে গেলাম।টুকিটাকি কিনলাম।ততোক্ষণে গরমে অস্থির।হোটেলে ফিরে এসে একটু ফ্রেশ হয়ে নিয়ে আবার খেতে চলে গেলাম হোটেল পউশিতে।শুনলাম ‘অফ সিজন’ বলে লোক একটু কম।সিজনের সময় অনেক ট্যুরিস্ট থাকে। আমার কিন্তু ভালোই লাগছিলো।
২.
সকালে সমুদ্রের সাথে দেখা হলো একটু দেরিতে।পাশের হোটেলে নাস্তা খেয়ে নিলাম।এদের খাবার,আতিথেয়তা ভালো লাগলো।তখনি সিদ্ধান্ত নিলাম দুপুরে ওখানেই খাবো।
এরপর ছুটলাম ইনানী বীচের দিকে।এর আগে আমি দেখিনি।ইনানী একটি দ্বীপ।একটা সেতু দিয়ে কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ।কক্সবাজার থেকে ইনানী সতের কিলোমিটার দূরে।মেরিন ড্রাইভ রাস্তা দিয়ে গাড়ি ছুটছে ইনানীর দিকে।রাস্তার একপাশে পাহাড়, আরেক পাশে সমুদ্র।একদিকে পাহাড়ের মৌনতা,আরেক দিকে উদ্দাম সমুদ্র।প্রকৃতির কী বৈপরীত্য।মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল এই বুঝি ঢেউ এসে গাড়ির উপর পড়লো।
সমুদ্র এগিয়ে আসছে—তাই অনেকটা জায়গা বালির বাঁধ দিয়ে আটকে দিয়েছে মানুষ।ইনানী সমুদ্র সৈকতে পৌছে দেখলাম তখন জোয়ারের সময়।মূল ভূখণ্ড থেকে বীচে যেতে একটি সেতু পার হতে হয়।সেতুর অর্ধেকটাই পানিতে ডুবে আছে জোয়ারের জন্য।
এই যাহ! আমি পার হবো কি করে?
ইতিমধ্যে আমার ছোট দলের সবাই জেনে গেছে আমি তেমন শক্তপোক্ত নই।অতএব দলের একজন তার হাত বাড়িয়ে দিলো।সেতুর তখন অর্ধেকটাই পানির নিচে।অনেকটাই ভিজে গেলাম।বালির মধ্যে হেঁটে সমুদ্রের কাছে গেলাম।এখানকার সমুদ্রকে আমার অনেক ভয়ংকর মনে হলো।মনে হলো একটু অন্যরকম।ভয় ভয় করছিলো আবার ভালোও লাগছিলো।এই বীচে লোকজন কম,এখানে সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে নানা রকম পাথর চলে আসে।একটা পাথর নিয়ে আবার সমুদ্রে রেখে এলাম।অন্যের জিনিস নিতে হয় না!ইনানী বীচ অনেক বেশি আকর্ষণীয় মনে হলো আমার কাছে।
ইনানী বীচ থেকে কক্সবাজার ফেরার পথে হিমছড়িতে নামলাম।হিমছড়িতে সিঁড়ি বেয়ে অনেক উপরে উঠলে সমুদ্র আর আকাশের মিলন অনেক দূর পযর্ন্ত দেখা যায়।কিন্তু অসম্ভব!আমি উঠতেই পারবো না।কী খাড়া সিঁড়ি।অতঃপর আমার বোন সহায় হলো। আস্তে আস্তে করে আমার হাত ধরে উঠালো।বাহ কী সুন্দর! আদিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্র।যতদূর চোখ যায় শুধু আকাশ আর সমুদ্র মিলে মিশে একাকার।নিচে নামার সময় অবশ্য তেমন কষ্ট হলো না।একটু হেটেই হিমছড়ির ঝর্ণা। ঝর্ণার নিচে দাঁড়িয়ে কয়েকজন গোসল করছিলো।আমারও ইচ্ছে করছিলো কিন্তু অতো পাথরের উপরে উঠবো কী করে?
হাতে সময় কম।আমাদের ফিরতে হবে।হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলাম।শুনলাম ঢাকায় খুব বৃষ্টি হচ্ছে,তাই প্লেন নির্ধারিত সময়ে উড়াল দিচ্ছেনা।অগত্যা রুমে ফিরে একটু বিশ্রাম নিলাম।
ফেরার সময় রুমের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে বিদায় জানালাম।
ঢাকা’র মুগদাস্থ ‘লিটল এঞ্জেলস লার্নিং হোম’ স্কুলে সেদিন ক্লাসপার্টি চলছিল।হটাৎ করে সেখানে সেই ক্লাসপার্টিতে যাদুকর এসেছিল। ক্লাসপার্টিতে যাদুকর এলে কেমন আনন্দ হতে পারে চিন্তা করে দেখেছ কখনো।তোমরা সবাইতো গল্প উপন্যাসে আর সিনেমাতেই যাদুকরদের কথা শুনে থাকো। মনে আছে সেই আলাদীনের চেরাগের দৈত্য কিংবা হ্যারিপটারের যাদুর স্কুলের যাদুকরদের কথা।কিন্তু ওরকম সত্যি সত্যিই যখন ক্লাসপার্টিতে যাদুকর চলে আসে তখন আনন্দ হয় সীমাহীন।
হ্যা সেদিন সবাই যখন আনন্দে মেতে উঠেছিল বন্ধুদের নিয়ে ঠিক সেই সময়ে এক যাদুকর ঢুকে পড়লো ক্লাসপার্টিতে। মুখে হাসি এনে বললো এই তোমরা শোন আমি কিন্তু যাদুকর। ক্লাসের সবাই হেসে দিয়ে বললো কী বলো? তুমি কি করে যাদুকর হবে? তুমিতো দেখতে মানুষের মত। আর যাদুকর কি আর সত্যি সত্যিই হয় নাকি। ওসবতো গল্প কবিতাতেই শোনা যায়। যাদুকর তখন মিষ্টি করে হেসে দিয়ে বললো এই দেখো আমার হাতে একটা রুমাল।সেই রুমালে আমি ছু মন্তর দিব আর সাথে সাথে সেটি গোলাপ ফুল হয়ে যাবে। ক্লাসের সবাইতো ভীষণ অবাক। তারা ভাবলো এই লোকটা নিশ্চই বানিয়ে বানিয়ে বলছে।
যাদুকর কিন্তু সব বুঝতে পারলো এবং সাথে সাথে হাতের রুমালকে যাদু দিয়ে গোলাপ ফুল বানিয়ে সবাইকে দেখিয়ে বললো এই দেখো তোমাদের ক্লাসপার্টিকে স্বাগত জানাতে এই গোলাপ ফুল বানিয়ে দিলাম।ক্লাসের সবাই তখন ভীষণ অবাক হয়ে গেল এবং একে অন্যের সাথে কথা বললো।তাদের কোন ভাবেই বিশ্বাস হচ্ছিল না যে সত্যি সত্যিই তাদের সামনে একজন যাদুকর চলে এসেছে। তারা তখন যাদুকরকে বললো না না এটা কোন যাদু নয়। নিশ্চই আপনি আপনার শার্টের হাতার নিচেয় এটা লুকিয়ে রেখেছিলেন আর এক ফাকে বের করে এনেছেন।
যাদুকর বললেন ঠিক আছে আমি তাহলে তোমাদেরকে অন্য একটা যাদু দেখাই। এই দেখ একটা পেপসির বোতল। তোমরাতো নিশ্চই দেখতে পাচ্ছ? আর এই দেখ একটা কাগজের ঠোঙ্গা।সবাই দেখলো একটা পেপসির বোতল আর একটা খালি কাগজের ঠোঙ্গা। এবার যাদুকর সেই পেপসির বোতলটা কাগজের সেই খালি ঠোঙ্গায় ভরে মন্ত্র পড়লেন এবং সাথে সাথে কাগজের ঠোঙ্গাটাও দুমড়ে মুচড়ে ময়লার ঝুড়িতে রেখে দিলেন। ক্লাসের সবার মধ্যে তখন টানটান উত্তেজনা। সবাই অবাক হলো কি করে পেপসির বোতলটা হাওয়ায় মিলে গেল। তখন আর কারো বিশ্বাস করতে অসুবিধা হলো না যে সত্যি সত্যিই ক্লাসপার্টিতে যাদুকর এসেছে।
এই যাদুকরের নাম রাজিব বসাক। বাংলাদেশে অনেক যাদুকর থাকলেও তিনি কিছুটা আলাদা।তিনি বরাবরই ছোটদেরবন্ধু এবং ছোটদের জন্যই সব থেকে বেশি যাদু করে থাকেন।তাই আমরাও তাকে ছোটদেরবন্ধু বলে ডাকি। মনে করো তোমাদের ক্লাসে ক্লাসপার্টি করতে চাও এবং সেই ক্লাসপার্টিকে আরো আনন্দঘন করতে চাও তাহলে খুব সহজেই এই যাদুকরকে তোমারে পার্টিতে আমন্ত্রন জানাতে পারো। এমনকি জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও বন্ধুদের চমকে দিতে পারো এই যাদুকরের মাধ্যমে। তার যাদুর থলিতে আছে অগণিত যাদু যা তোমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে।ক্লাসপার্টিতে যাদুকর এসেছিল শুনে প্রথমে যারা ভেবেছিলে আমরা বানিয়ে বলছি এখন নিশ্চই তারাও চাইছো ইস আমাদের ক্লাসপার্টিতেও যদি যাদুকর আসতো।
তোমার স্কুলের যে কোন সংবাদ এবং অনুষ্ঠান নিয়ে তুমিও লিখতে পারো। লিখে নিজের নাম,ঠিকানা,মোবাইল নাম্বার,নিজের ছবি এবং অনুষ্ঠানের ছবি পাঠাও আমাদের ইমেইলে [email protected]। আমরা তোমার নাম ও ছবি সহ সেটা ছাপাবো।
ক্যাডেট কলেজে ভর্তির সুযোগই দিতে পারে একটি সুন্দর ও মনে রাখার মত জীবন।ক্যাডেট কলেজে ভর্তির স্বপ্ন যদি থাকে তোমার মনে তবে তোমাকে হতে হবে আরো দৃঢ় প্রত্যয়ী।
সাধারণত প্রতি বছর নভেম্বরে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষার অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণের কাজ শুরু হয়। তা চলে ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় জানুয়ারিতে। ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা কি, কিভাবে আবেদন করা যায়, আবেদন ফি কত, আবেদনের সময় কি কি কাগজপত্র লাগবে তা জানতে হবে সবার আগে। কেননা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তির চেয়ে ক্যাডেট কলেজগুলোতে নিয়ম-কানুন গুলো একটু ভিন্ন এবং সেসব নিয়মনীতি তারা অবলোকন করে অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে।
আবেদনের যোগ্যতা :
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুকদের অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। এ ছাড়া তাদের ৬ষ্ঠ শ্রেণী বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ১৪ বছর এবং ছেলেমেয়ে উভয়েরই উচ্চতা থাকতে হবে নূ্ন্যতম ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি। ইতিমধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি এমন শিক্ষার্থীরা আবেদনের অযোগ্য। এ ছাড়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন গ্রস নক নী, ফ্ল্যাট ফুট, বর্ণান্ধ ও অতিরিক্ত ওজন এবং বিভিন্ন রোগ যেমন এজমা, মৃগী, হৃদরোগ, বাত, যক্ষ্মা, পুরনো আমাশয়, হেপাটাইটিস, রাতকানা, ডায়াবেটিসসহ আরও কয়েকটি রোগে আক্রান্ত কেউ আবেদনের অযোগ্য বিবেচিত হয়।
আবেদনের নিয়ম :
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এ জন্য শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ব্যবহার করতে হবে www.cadetcollege.army.mil.bd এই ওয়েবসাইটি। আবেদনের সময় প্রার্থীদের অনাধিক ১৮০x২১০এবং ২০০ কিলোবাইটের পাসপোর্ট সাইজের ছবি ব্যবহার করতে হবে। ছবি অবশ্যই ১৫ দিনের বেশি পুরনো হওয়া যাবে না।
আবেদন ফি ও জমাদান পদ্ধতি :
প্রার্থীরা পরীক্ষার আবেদন ফি Trust Bank Mobile Money, Q Cash অথবা টেলিটক প্রিপেইড সিমসংবলিত যেকোনো মোবাইল থেকে এসএমএস- এই তিনটির যেকোনো একটি মাধ্যম ব্যবহার করে জমা দিতে পারবে। তবে মাধ্যমভেদে পরীক্ষার ফি’র পার্থক্য রয়েছে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জমাদান পদ্ধতি : প্রার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বা প্রাথমিক ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সত্যায়িত সনদপত্র; ৫ম শ্রেণিতে ইংরেজি মাধ্যমে অধ্যয়নকৃত শিক্ষার্থীদের তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক উত্তীর্ণের প্রত্যয়নপত্র; প্রার্থীর জন্মনিবন্ধন বা জন্ম সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি; প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক ষষ্ঠ বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সাল উল্লেখপূর্বক সনদপত্র; ফলাফল প্রকাশিত না হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে এই মর্মে প্রদত্ত সনদ; প্রার্থীর বাবা-মা বা অভিভাবকের মাসিক আয়ের স্বপক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র; প্রার্থীর অভিভাবক বা বাবা-মা উভয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি (পরিচয়পত্র না থাকলে যথাযথ কারণ প্রদর্শনপূর্বক প্রত্যয়নপত্র) এবং অনলাইন আবদেনপত্রে আপলোড করা প্রার্থীর ছবির অনুরূপ পাসপোর্ট এবং স্ট্যাম্প সাইজের রঙিন ছবি। সফলভাবে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণের পর উক্ত কাগজপত্রাদি ১৫x১০ ইঞ্চি খামের উপরে প্রার্থীর ইনডেক্স নম্বর ও পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম উল্লেখপূর্বক ৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখের মধ্যে প্রার্থীর প্রবেশপত্রে উল্লিখিত পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাডেট কলেজের ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাক বা বাহকের মাধ্যমে প্রেরণ করতে হবে। উল্লেখ্য, কোটা সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রার্থীদের অবশ্যই ক্যাডেট কলেজগুলোর ‘ই-বুথ আউটলেট’র মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে কোটাধারীদের তাদের সংশ্লিষ্ট কোটার স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজসহ অন্যান্য কাগজপত্র ও ছবির সফট কপি সঙ্গে আনতে হবে। উল্লেখ্য, প্রার্থী ও অভিভাবকদের সুবিধার্থে অনলাইনে আবেদন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি জমাদানের জন্য প্রতিটি ক্যাডেট কলেজে এবং ঢাকা আর্মি স্টেডিয়ামে একটি করে ‘ই-বুথ আউটলেট’ স্থাপন করা হয়েছে। এ সব ই-বুথে উপস্থিত হয়ে অনলাইনে আবেদন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদন ফি জমা দেওয়া যাবে।
পরীক্ষার মাধ্যম :
বাংলা ও ইংরেজি, এ দুটি মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়া যায়। তবে প্রার্থীকে যেকোনো একটি মাধ্যম বেছে নিতে হবে।
পরীক্ষার মানবণ্টন :
মোট ৩০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ইংরেজিতে মার্কস ৭৫, গণিতে ৫৫, বাংলায় ৪০ ও সাধারণ জ্ঞানে ৩০ মার্কস। আর মৌখিক পরীক্ষার মার্কস ৫০ ও স্যুটবিলিটি টেস্টের জন্য রয়েছে ৫০ মার্কস। এ ছাড়া রয়েছে স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা। উল্লিখিত সব ধাপের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
পরীক্ষার প্রস্তুতি :
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষা অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষা থেকে ভিন্ন ধরনের। তাই এ পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেতে দরকার দীর্ঘ প্রস্তুতি, কঠোর অধ্যবসায় ও সঠিক গাইডলাইন। নিয়মিত পড়াশোনা এতে বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ভর্তি পরীক্ষা :
ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়ে মৌখিক ও স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা এবং এবং স্যুটাবিলিটি টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ক্যাডেট ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত বিস্তারিত জানতেwww.cadetcollege.army.mil.bd ওয়েবসাইটটি ভিজিট কর।সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানে অগ্রাধিকার : ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা শেষে ক্যাডেটদের সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসার পদে নির্বাচনী পরীক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ক্যাডেটদের শুধু ISSB পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েই সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদান করা যায় এবং তা বাধ্যতামূলক।
দুর্ভাগা কতিপয় কিশোরী,ভাগ্য নয় বরং সমাজ যাদের ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশের কিশোরী পতিতা রানু। তার মতো অনেক মেয়ের স্কুলের গন্ডি পেরোনোর বয়স হয় নি। কিন্তু পরিস্থিতির শিকার হয়ে, ফাঁদে পা ফেলে তারা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে অন্ধকার গলির পথ। পরিণত বয়স না হলেও তাদেরকে ‘মাসিরা’ রাতারাতি বড় করে তুলছে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত ওষুধ খাইয়ে। এর ফলে খুব দ্রুত রানুদের শরীরের বৃদ্ধি ঘটে। তাতে আকৃষ্ট হয় খদ্দের।
বাংলাদেশের কিশোরী পতিতাদের নিয়ে এমন অনেক রিপোর্ট স্থানীয় পর্যায়ে তো আছেই, বিদেশী মিডিয়ায়ও সয়লাব। এ পেশায় আসা কিশোরীদের শরীর মোটাতাজা করলে তাদের চাহিদা বেশি। খদ্দের পায় সহজে। আয় উপার্জনও ভাল হয়। এ জন্য তারা জীবন ঝুঁকির কথা জেনেও ব্যবহার করে ওই ট্যাবলেট। দিনি তাদেরকে প্রায় ১০ জন খদ্দেরকে সামাল দিতে হয়। কখনো তারও বেশি। প্রতিজন খদ্দের থেকে তারা আয় করে প্রায় ১০০ টাকা। এ পেশা থেকে তাদের বেরিয়ে আসায় মানা নেই। কিন্তু সমাজ ও পরিবার তাদেরকে মেনে নিতে চায় না। ফলে পতিতাপল্লীর অন্ধকারেই জীবন কেটে যায় তাদের। এক সময় নারায়ণগঞ্জের টানাবাজারে পতিতাপল্লী ছিল। সেখানেই বেড়ে উঠেছেন জিএমবি আকাশ। তিনি শিশু অবস্থা থেকে বড় হতে হতে দেখেছেন কিভাবে ওই পতিতালয়ে বালিকারা প্রবেশ করে, বেড়ে ওঠে, তারপর শরীর বিকিয়ে অর্থ উপার্জন করে। পতিতাদের জীবন ধারণের ওপর তিনি ক্যামেরায় ছবি ধারণ করেছেন। ফটোজার্নালিজমের জন্য তিনি পুরষ্কারও জিতেছেন। জিএমবি আকাশের বয়স এখন ৩৮ বছর। তিনি ১২ বছর ধরে সিরিজ ফটো ধারণ করে চলেছেন। এর নাম দিয়েছেন ‘লাইফ ফর রেন্ট’। তিনি কিশোরী যৌনকর্মীদের জীবন দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তার ওপর ধারণ করেছেন ছবি। তার এসব ছবি নিয়ে অনলাইন কোয়ার্টজ একটি ফটোফিচার প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এখনও যেসব পতিতাপল্লী রয়েছে তার সবগুলোর চেহারাই এক। ঘনবসতিপূর্ণ। একটির সঙ্গে আরেকটি মিশিয়ে গড়ে উঠেছে টিনের ছাউনি। তার মধ্যে ছোট্ট ছোট্ট প্রকোষ্ঠে কোনমতে মাথা গোঁজার ঠাঁই। সেখানেই শরীর বিকিকিনির হাট বসে। এই ব্যবসার সঙ্গে গড়ে উছেছে কিছু দোকানপাট। তাতে চায়ের আড্ডা। বিস্কুট বিক্রি হয়। খদ্দেরদের আনাগোনা। একপাশে একটি সেলুন। এর চারপাশে খদ্দের ধরার জন্য নানা অঙ্গভঙ্গি কিশোরী পতিতাদের। তাদের আশেপাশেই খেলা করছে শিশুরা। এরা পতিতাদের সন্তান। পয়ঃনিষ্কাশনের ক্যানেলে পড়ে আছে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণের সামগ্রি। তাতে বন্ধ হয়ে আছে কোন কোন নালা পথ। এসব পতিতালয়ে যারা থাকেন তাদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তার চেয়ে অনেক কম বয়সী মেয়ে এ পেশায় নেমেছে। তাত্ত্বিক অর্থে তারা চাইলে যেকোন সময় পতিতালয় ছেড়ে চলে যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটে না।
দুর্ভাগা কতিপয় কিশোরী,ভাগ্য নয় বরং সমাজ যাদের ধ্বংস করেছে কারণ এ সমাজের নানা অনিয়মের ফলে তারা ফাদে পা দিতে বাধ্য হচ্ছে।আছে মাসির নজরদারি। আছে নানা দেনা। সব মিলিয়ে পতিতালয় যেন তাদের কাছে একটি জেলখানা। খদ্দেররা শারীরিক সম্পর্ক গড়ে খুব বেশি টাকা দেয় না। তাই প্রতিদিন তাদেরকে বেশি বেশি খদ্দের ধরতে হয়। খদ্দের ধরা নিয়ে তাদের মধ্যে চলে এক রকম প্রতিযোগিতা। কখনো তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। আবার নিজের শারীরিক সৌষ্ঠব প্রকাশে তারা নানা পন্থা অবলম্বন করে। রানু ,দুর্ভাগা কতিপয় কিশোরীদের মধ্যে সেও একজন। তিনি শরীর মোটাতাজাকরণের ট্যাবলেট খেয়ে বেমালুম পাল্টে গিয়েছেন। নিজেই বলেন, আমার শরীরের বৃদ্ধি ঘটেছে। এখন আমাকে দেখে খদ্দেররা আগ্রহী হয়ে ওঠে। আমি ভাল খদ্দের পাই। তাই আমি ওরাডেস্কন ট্যাবলেট খাই। জানি, এটা শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাতে আমার কোন ভয় নেই। আমার একটি ছেলে আছে। তাকে লালন পালন করতে হয়। আমাকে টিকে থাকতে হয়। তার জন্য এ ওষুধ সেবন করতেই হয়। যদি তাতে মারাও যাই তাহলে শান্তি পাব যে, আমি ছেলের জন্য কিছু করে রেখে যেতে পেরেছি।