ব্লাংক চেক শিশুতোষ সেরা সিনেমা। ১৯৯৪ সালে নির্মিত অসাধারণ একটি কমেডি মুভি।ওয়াল্ট ডিজনির ব্যানারে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটির
পরিচালকঃ রুপার্ট উইংরাইট।
প্রযোজনাঃ করেছেন গ্রে অ্যাডেলসন।
গল্পঃ ব্লেক স্নাইডার এবং কলবি কার।
সংগীতঃনিকোলাস পিকে
পরিবেশনায়ঃ ওয়াল্ট ডিজনি পিকচারর্স
মুক্তিঃ ফেব্রুয়ারি ১১,১৯৯৪(আমেরিকা)আগষ্ট ৫,১৯৯৪ (ইংল্যান্ড)
পরিধিঃ৯৪ মিনিট।
ভাষাঃ ইংরেজী।
বাজেটঃ ১৩ মিলিয়ন ডলার।
বক্স অফিসঃ ৩০,৫৭৭,৯৬৯ (ডমেস্টিক)
পটভূমিঃ
ঘটনাটা শুরু হয়েছিল ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগে অভিযুক্ত কার্ল কুয়েগলি বন্দীদশা থেকে পালানোর মধ্য দিয়ে। সে যখন তার জেল ভেঙ্গে পালিয়েছে তখন সে একটা কাপড়ের দোকানে ঢুকলো এবং সে সেখানে লুকিয়ে রাখা তার এক মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করলো।যা সে গ্রেফতার হওয়ার আগে ওখানে লুকিয়ে রেখেছিল।যদিও এটা ছিল অস্পষ্ট যে সে এই ডলার সত্যিই উপার্জন করেছিল নাকি অন্যায় ভাবে অর্জন করেছিল।এরপর কাহিনী মোড় নেয় প্রিস্টন ওয়াটার(ব্রিয়ান বোনসাল) নামের এগার বছর বয়সী কিশোরের দিকে।
প্রিষ্টন ওয়াটারের বাবা ছিল ভীষণ মিতব্যায়ী এবং তিনি কাজ করতেন একটা বাসস্থান সংস্থান কোম্পানীতে। তাই যখন প্রিষ্টন ওয়াটারের জন্মদিনে তার তার দাদি তাকে একটা ব্লাংক চেক দিল সে সেই চেকে মাত্র এগার ডলার লিখে নিল।সে যখন তার এক বন্ধুর জন্মদিনের দাওয়াত পেলো একটি বিনোদন পার্কে তখন তার কাছে কিশোরদের চড়ার উপযোগী রাইডের অনেক কুপন ছিল।দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অ্যাডওয়ার্ডের সাথে সে যখন তার অফিসে গোপন প্লান সম্পর্কে আলোচনা করে ফিরছিল তখন কথা হয়েছিল পরদিন দুপুর একটায় এক মিলিয়ন ডলারের একটা চেক ইস্যু করা হবে। মিটিংএর পর কুয়াগলি যখন তার চুরির টাকায় কেনা জাগুয়ার এক্সজে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে উদ্যত হলো তখন সে প্রিষ্টন ওয়াটারের সাইকেলকে চাপা দিল।
মুলত প্রিষ্টন তখন ব্যাংকের পার্কিং লট দিয়ে বন্ধুকে নিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল।যখন কুয়াগলিকে ওরা চাপ দিলো যে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তখন তিনি কোন উপায় না দেখে একটা চেক লিখে ওর হাতে ধরিয়ে দিলেন। ওর মাঝে পুলিশের গাড়ির হর্ণ শুনে সে তড়িঘড়ি করে চেকে ডলারের পরিমাণ না লিখে প্রিষ্টনের হাতে দিয়ে বললো এটা তোমার বাবাকে দিও। উনি তোমার জন্য নতুন একটা সাইকেল কিনে দেবেন। এই বলেই সে ওখান থেকে চলে গেল।প্রিষ্টন বাসায় ফিরে তার বাবাকে মাকে কিছু না জানিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে চেকটা নিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করলো।হঠাৎ কি মনে করে ব্যাংকের ওয়েব সাইটে গিয়ে ওই একাউন্টে কি পরিমান টাকা আছে সেটা চেক করে ওর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। প্রিষ্টন নিজে অ্যাপল ম্যকিন্টোশ পারফরমা ৬০০ কম্পিউটার ব্যবহার করতো। সে সেই ব্লাংক চেকে এক মিলিয়ন ডলার ক্যাশ হিসেবে প্রিন্ট করে নিল।
পরদিন প্রিষ্টন সেই চেক নিয়ে ব্যাংকে গেল। ক্যাশ অফিসার চেকের অ্যামাউন্ট দেখে তা ক্যাশ করতে সাহস না পেয়ে ম্যানেজারের রুমে নিয়ে গেলেন। ম্যানেজার চেক দেখে প্রথমে এমন হাসি দিলেন দেখেই প্রিষ্টনের অন্তরআত্মা কেপে উঠলো।এর পর প্রিষ্টনের দেয়া চেক তিনি পুড়িয়ে ফেললেন। প্রিষ্টন হতাশ হয়ে গেল। ইস যদি মাত্র দশ বার ডলার বা একশো ডলারও সে লিখতো তাহলে সে তা পেত। এখন সবতো জলে গেল। কিন্ত ওকে অবাক করে দিয়ে ম্যানেজার ওকে সোজা লকারের কাছে নিয়ে গেল এবং এক মিলিয়ন ডলার ওকে দিয়ে দিল। সেই ডলার ব্যাগে ভরে প্রিষ্টন নামের এগার বছরের ছেলেটা সোজা বাড়িতে চলে আসলো।সে একটা দামী শপিংয়ে ছয়দিনের জন্য গ্রাহক হলো। একটা দামী প্রাসাদ কিনলো এবং কম্পিউটারের ভয়েসবক্স সফটওয়্যার দিয়ে ফোনে কথা বলে সেই প্রাসাদ কিনে নিল। এবং নাম দিলো যে সে মিস্টার ম্যানিকটোশের সহকারী। আসলে ম্যাকিনটোশ হলো তার কম্পিউটারের ব্রান্ডের নাম।বুদ্ধি করে সেটাই তার মালিকের নাম বলে চালিয়ে দিল। এছাড়া সে লিমুজিন ভাড়া করলো,গোকার্ট ট্র্যাকে গেল,ওয়াটার রাইডে গেল। এভাবেই সে আইচক্রিম চকলেট,দামী দামী পোশাক কিনে সে এক মিলিয়ন ডলারের ৳৯৯৯,৬৭৫.৮৩ ডলারই খরচ করে ফেললো।
প্রিস্টন নামের এগার বছরের ছেলেটা তাকে আড়াল করতো এই বলে যে সে এই সব কিছু কিনেছে এক মিলিয়নিয়র মিষ্টার ম্যাকিন্টোশের নামে যিনি ওই প্রাসাদে থাকেন।ওদিকে প্রিষ্টন ওয়াটার নামের এগার বছরের ছেলেটা এফবিআই এর এজেন্ট শাই এর দ্বারা চিহ্নিত হলো। এদিকে প্রিষ্টন নিজের জন্মদিনটা ঘটা করে পালন করার লক্ষ্যে একটা বিশাল পার্টির আয়োজন করলো এবং বললো এটা মিষ্টার ম্যাকিন্টোশের জন্মদিন।ওদিকে প্রিষ্টনকে কুয়েগলি,জুইস এবং বিডারম্যান হণ্যে হয়ে খুজে বেড়াচ্ছিল। যখন ওকে ধরে ফেললো তখন তারা জোরাজুরি করলো ডলারগুলো সে কি করেছে তা জানার জন্য। সে আর কি উত্তর দিবে। এ কয়দিনে সেতো সব ডলার খরচ করে ফেলেছে। ওদিকে কুয়েগলি ওকে কিছু করার আগেই পুলিশ এসে তাকে এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের ধরে নিয়ে যায়। আর প্রিষ্টন ওয়াটার নামের এগার বছরের কিশোর আবার তার নিজের বাবা মার সাথে নিজেদের সাদাসিধে সেই বাড়িতে বাস করতে থাকে।
সিনেমায় ব্যবহৃত কিছু বিষয়ঃ
সিনেমাটি চিত্রায়ন করা হয়েছে অস্টিন,স্যান অ্যান্টোনিও এলাকায়। এ ছাড়া কিছু অংশ টেক্সাসের ডালাসে ধারণ করা হয়েছে।প্রিষ্টন ওয়াটার মিষ্টার ম্যাকিনটোশের নামে যে প্রাসাদ কিনেছিল সেটা ১৪১৫ উডব্রিজ ড্রাইভ,অস্টিনে অবস্থিত। আর যে থিম পার্ক দেখানো হয়েছে সেটা টেক্সাসের ফিয়েস্তাতে অবস্থিত।
বক্স অফিসঃ
ব্লাংক চেক সিনেমাটি তিনটি সিনেমাকে পিছনে ফেলেছে সেগুলো হলো এসিই ভেঞ্চুরা,পেট ডিটেকটিভ এবং দ্যা গেটওয়ে যা মুক্তির প্রথম সপ্তাহে আয় করেছে ৫.৪ মিলিয়ন ডলার।আর শুধু মাত্র উত্তর আমেরিকাতেই মোট ৩০.৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
এখানেই দেখুন পুরো সিনেমাটি।
https://www.youtube.com/watch?v=Ge0JHtuOOR0
Comments are closed.