কিংবদন্তী কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘কে কথা কয়’ উপন্যাস অবলম্বনে নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আসাদুল ইসলাম।আসাদুল ইসলাম শুধু মাত্র রচনা ও নির্দশনার মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেন নি বরং এই অলরাউন্ডার মানুষটি প্রধান চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন। নদ্দিউ নতিমের প্রধান চরিত্র গুলোতে অভিনয় করেছেন আসাদুল ইসলাম, সোনিয়া হাসান ও আর্য মেঘদূত।
নাটকটির সহযোগী নির্দেশক হিসেবে রয়েছেন আনিসুল হক বরুণ, সেট ও লাইট ডিজাইন ফয়েজ জহির, পোশাক সোনিয়া হাসান, আবহসঙ্গীত আর্য মেঘদূত, আলোক নিয়ন্ত্রণে গর্গ আমিন ও আবহসঙ্গীত নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন সোহেল খান ও আরিফ। দেশে ও দেশের বাইরে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের একের পর এক সফল প্রর্শনীর মধ্য দিয়ে ম্যাড থেটার দর্শকদের মন জয় করে চলছে।
নাটকের গল্পে দেখা যাবে, মতিন একজন কবি। মনে মনে নিজেকে কল্পনা করে নেয়, সে একজন উজবেক কবি। নিজেই সে নিজেকে স্বপ্ন দেখে- ধবধবে ফর্সা গায়ের রঙ, পরনে জোব্বার মতো একটা পোশাক, লম্বাটে মুখ। মতিনের মধ্যে বাস করে অন্য এক মতিন। দিনে দিনে মতিন উদ্দিন হয়ে ওঠে নদ্দিউ নতিম। মতিনের হূদয়ের সবটুকু দখল করে থাকে সহপাঠি নিশু।
ভাবের ভেলায় ভেসে বেড়ালেও ভাবাবেগে মতিন ডুবে যায় না, সে বুঝতে পারে নিশুর মতো স্কলার মেয়ের যোগ্য সে নয়। মতিনের একদিন চোখে পড়ে পত্রিকার পাতায় তিন লাইনের ছোট্ট একটা বিজ্ঞাপন-একজন সার্বক্ষণিক টিউটর প্রয়োজন, টিউটরের সৃজনশীলতা ব্যক্তিগত যোগ্যতা হিসেবে ধরা হবে, বেতন আকর্ষণীয়। বেতনের আকর্ষণীয় ক্ষমতায় মতিন তার কবি সত্ত্বাকে সাময়িক স্তিমিত রেখে কমল নামের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চার টিউটর পদে অভিসিক্ত হয়।
আমাদের দেশে মঞ্চনাটকের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে টিভি নাটকের দৌরাত্মে হয়তো অনেকেই এই গুরুত্বপুর্ন অংশটির কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছেন।মনে রাখা দরকার মঞ্চ হলো নাটকের প্রধান ভূমি। দর্শকের উপস্থিতিতে একটি চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা অত্যন্ত কঠিন কাজ।এমন কঠিন কাজকে অত্যন্ত সুনিপুন ভাবে দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন আসাদুল ইসলাম।নাটকের ব্যাপ্তী এর নির্মান,সংলাপ,আবহ এবং ওঠানামা প্রতিটি দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে চলেছে। এ কারনেই দীর্ঘ এই যাত্রা পথে নদ্দিউ নতিমকে কখনো হোচট খেতে হয়নি।
আমাদের মতে নদ্দিউ নতিম বাংলা নাট্যজগতে অনন্য উচ্চতায় স্থান পাওয়ার যোগ্য। এই গুণী নাট্যকার অভিনেতার হাত ধরে আশা করছি আরো অসাধারণ সব নাটক আমরা পাবো। আর্য মেঘদুতের অভিনয় দক্ষতা মুগ্ধকর।
লেখাঃ জাজাফী
Comments are closed.