মাহফুজুর রহমান
গেমস টাইম টা ভাল যায় নি।ধুর,প্রেপে ঘুম দিতে হবে।রাতে আবার মিটিং আছে।”প্রেপে যাওয়ার আগে রুমে জুনিয়রকে ফ্রগ জাম্প স্টার্ট দিয়ে মনে মনে ভাবছিল ক্যাডেট রিপন।পরে জুনিয়র কে গেট আপ দিয়ে একাডেমী ব্লকের দিকে রওয়ানা হল সে। ফর্মে গিয়ে সে কোনো সাড়া শব্দ না করে তার অভিনব স্টাইলে ঘুমিয়ে পড়ল।ইভিনিং প্রেপের মাঝখানে পাশের জনের ডাক শুনে ঘুম ভাঙল।
“ভাই ডাকছে তোকে।”
“রিপন,come here”
“জ্বি ভাই।”
“ঘুমাচ্ছিলা?”
“জ্বি ভাই”
“কেন?? রাতে ঘুম হয় নাই??”
“ভাই শরীর টা একটু খারাপ!”
“আচ্ছা যাও,চোখে পানি দিয়ে আস।”water point থেকে রাতের চাঁদটা দেখে ওর মুখ হাঁ হয়ে গেল।এত সুন্দর!! তখন তার মনে হল, কবিরা মনে হয় এই জন্যই চাঁদেরহাট,চাঁদের হাসি,চাঁদের হে চাঁদের হো,এসব বলেন।আসলেই,চাঁদের আলোর যেন বন্যা বয়ে গিয়েছে।সে অনেক ক্ষন অপলক তাকিয়ে থাকল।
“রিপন ভাই!”
“কি হইছে?”
“ভাই পানি খাব”
“খাও,আমি কি খাওয়ায় দিব?”
“জ্বি না ভাই।”
“তাইলে?? খাও।আর Double up খেয়ে ভাগো।”
“জ্বি ভাই।”চাঁদের রূপে মুগ্ধ রিপন এতক্ষন খেয়াল ই করেনি যে সে একাই water point ব্লক করে রেখেছে।অগত্যা জুনিয়রটি পানি না খেয়েই চলে গেল।নিজের কর্মকান্ডে নিজেকেই কেমন জানি লাগছিল তার।তবে ভালই লাগছিল তার।কল্পনার জগতে ডুবে যায় সে।মনে হচ্ছিল যেন পাশের biology lab থেকে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছিল।বহুদিন আগের ১৩ তম ব্যাচের ভাইয়েরা ধরে ল্যাবকে দেয় পোকাটি।
আজ ৫৪ তম ব্যাচের এক ক্যাডেটের জোতছনা বিলাসে যেন সেটি ফরমালিনের অপচনশীলতার গুণ কে অক্ষত রেখে আবার জেগে উঠেছে।তার মনে পড়ে গেল গত টার্ম এর পড়া বইএ বর্ণিত জোতস্না বিলাশের কথা।গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে একাকী জোতস্না দেখা।গরম চা তো নেই,তাতে কি water point এর গরম পানি নিয়ে চুমুক দেয়া শুরু করেছে সে।
লেখকঃ ক্যাডেট, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ।
“ইস,ইফতির লকারে টিব্যাগ ছিল, আনলেই হত।”হঠাত মনে পরে যায় তার।যাই হোক গরম পানি টাও খারাপ লাগছে না।
….
বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে
Comments are closed.