লেখাঃ শারমিন জাহান আঁখি
লোকপ্রশাসন বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জানুয়ারি মাস, নতুন বছরের একটা নতুন সপ্তাহ চলছে।সবে মাত্র স্কুলের নতুন বই দেয়া শুরু করেছে।ক্লাসের চাপ খুব একটা নেই বললেই চলে।এই সুযোগে দেখে ফেলতে পারো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত “চাষী নজরুল ইসলাম”পরিচালিত বিখ্যাত চলচ্চিত্র “ওরা এগারো জন”।
সিনেমাটির শুরু দেশের গান দিয়ে।খসরু আর মিতা দুই ভাইবোন।তাদের মা গ্রামের বাড়িতে থাকে।মিতা থাকে মামার বাসায়। খসরু টুকিটাকি রাজনীতি করে।তাদের পাশের বাসায় থাকে মিতার বান্ধবীদের পরিবার।দুই হাসিখুশি পরিবারের গল্পে ছেদ পরে হঠাৎ।২৫ শে মার্চের কালরাতের হামলায় মারা যান মিতার মামা।মিতা ও খসরুর মা নিখোঁজ হন।মিতার বান্ধবীর বাবা দেশের পক্ষে কথা বলায় মিলিটারিরা তাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলেন।
সেই ভয়াল রাতের ঘটনা কয়েকজন যুবককে উত্তাল করে তোলে।তাদেরকে এনে দাঁড় করায় একই মোহনায়।খসরু,মিজান,আবু,প্রদীপ,জামাল,বেবী আরো অনেকে দেশের জন্য গড়ে তোলে মুক্তিবাহিনী। হামলা চালাতে থাকে পাকবাহিনীর ওপর।এভাবেই চলতে থাকে কাহিনী।
সিনেমাটির কিছু চরিত্র তোমাদের মনে দাগ কাটতে বাধ্য।সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দেবে খসরু চরিত্রটি।একজন যোগ্য নেতা,উত্তম বন্ধু,বিপদে দৃঢ় মানুষ, দেশপ্রেমিক সব মিলিয়েই এই চরিত্রটি।মায়ের জন্য যার অসীম ভালোবাসা।খসরু কি শেষ পর্যন্ত খুঁজে পায় মাকে?
দাগ কাটবে এক মায়ের চরিত্র, যে কিনা এক সন্তানকে হারিয়েও আরেক সন্তানকে বিলিয়ে দেন দেশের জন্য।সেই মায়ের সন্তান কি ফিরে আসে তাঁর কোলে?
কেয়া চরিত্রের জন্য মনে জন্মাবে শ্রদ্ধা।বাবা রাজাকার বলে যেই মেয়েটি বাবাকে গুলি করতেও দ্বিধাবোধ করেনি।একবার কি চিন্তা করা যায়,দেশকে কতোটা ভালোবাসলে এই কাজ করা সম্ভব?
মেয়ের প্রতি ভালোবাসায় সিক্ত মিজানের চরিত্রটি চোখের কোণে জল আনতে বাধ্য।যুদ্ধের ময়দানেও যে কিনা মেয়ের পুতুল বুকে আগলে রাখে।আচ্ছা,কি হয়েছিলো মিজানের মেয়ের?কোথায় তারা?
কিছু জায়গা আনন্দ দেবে। প্রথম গেরিলা আক্রমনের সেই আনন্দ তোমাদেরও আন্দোলিত করবে।
এরকম আরো অনেক চরিত্র নিয়ে সুন্দরভাবে সাজানো সিনেমাটি।স্ক্রিনে এগারো জনের দলটার সাথে থেকে তোমাদের মনে হবে তোমরাও সেই দলেরই একজন।কিছুক্ষণের জন্য সিনেমাটি তোমাদের নিয়ে যাবে ১৯৭১ এর সেই সময়ে।
তাহলে আর দেরী কেন?লাগিয়ে ফেল নিজের কিছু সময় কাজে আর দেখে ফেল অসাধারণ এই সিনেমাটি।
আরও পড়ুনঃ