(উত্তর আমেরিকান,নেটিভ আমেরিকান রূপকথা)
এক গ্রীষ্মের সকালে, যখন প্রখর রোদে পাথর গরম হয়ে চামড়া পুড়ে যাওয়ার উপক্রম, তখন এক কচ্ছপ খাবার খুঁজতে বেরিয়েছিল। সে থাকত নদীতে। কচ্ছপটি হামাগুড়ি দিয়ে একটু ভালো খাবার খুঁজতে বেরিয়েছিল। কিন্তু সূর্য এমন প্রখর হবে তা সে জানত না। সূর্যের আলো যদি বেশি পড়ে তাহলে সে মারা যাবে। ইতিমধ্যে গরমে তার যন্ত্রণা হলো। তার ওপর মাটি বেশি শুষ্ক হলে তার বাড়ি ফিরতে কষ্ট হবে। তাছাড়া কচ্ছপ হাঁটে খুব ধীরে ধীরে। তাই সে পাহাড়ের নিচে একটা বড়ো পাথরের ছায়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগল।
কচ্ছপ এত জোরে কাঁদতে লাগল যে, পাশ দিয়ে এক নেকড়ে যাচ্ছিল, সে শুনে ফেলল। সে ভাবল, হয়তো কেউ গান গাইছে। ভাবল সেও গান শিখবে। তাই সে পাথরের মধ্যে তন্নতন্ন করে খুঁজতে লাগল। চারপাশে উঁকি দিয়ে সে কান্নারত কচ্ছপকে দেখতে পেল।
‘তুমি তো চমৎকার গান গাইতে পারো।’—কচ্ছপকে বলল নেকড়ে।
‘এটা গান ছিল না।’—কচ্ছপ বলল।
‘আমি শুনেছি এটা গান ছিল। আমি তোমার কাছে গান শিখতে চাই। তুমি যদি আমাকে গান না শেখাও তাহলে তোমাকে গিলে ফেলব।’
‘আমাকে গিলে ফেললে আমার কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ আমার শক্ত খোল তোমার গলায় আঘাত করবে।’
‘আচ্ছা, তাহলে তোমাকে প্রখর রোদে ফেলে দেবো।’
‘তাতেও আমার কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ আমি খোলের নিচেও হামাগুড়ি দিয়ে চলতে পারি।’—কচ্ছপ বলল।
‘তাহলে তোমাকে নদীতে ফেলে দেবো—আমাকে যদি গান না শেখাও।’
এবার কচ্ছপ কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলল, ‘না না, দোহাই তোমার, এমনটি কোরো না। তাহলে আমি ডুবে যাব!’
‘না আমি ফেলবই।’—এই বলে নেকড়ে কচ্ছপটিকে মুখে তুলে নদীতে ফেলে দিল।
এদিকে কচ্ছপ নদীতে ফিরে এসে তার বাড়িতে চলে গেল সাঁতরে। যেতে যেতে মাথা তুলে নেকড়েকে বলল, ‘অনেক অনেক ধন্যবাদ নেকড়ে—আমাকে নদীতে ফেলে দেওয়ার জন্য। আমি এখানে আসার জন্যই কান্না করছিলাম। কোনো উপায় ছিল না তাই পাথরের নিচে দাঁড়িয়েছিলাম। আমাকে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ।’
এদিকে নেকড়ে খুব রাগান্বিত হলো এবং দাঁত কটমট করে চলে গেল।
ভাষান্তর-
টি এইচ মাহির