নেত্রকোনা সদর উপজেলায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও গতকাল রোববার বেলা দুইটা থেকে তাদের বাল্যবিবাহের (আইনত নিষিদ্ধ) প্রস্তুতি চলছিল।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র বলছে, বরের বয়স ১৬ বছর আর কনের ১৫ বছর।
স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তারা একই মাদ্রাসায় ভিন্ন শ্রেণিতে পড়ে। বর এবার দশম শ্রেণিতে, কনে অষ্টম শ্রেণিতে।
অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বর আগেভাগে কনের বাড়িতে এসে একটি কক্ষে লুকিয়ে থাকে। পরে সন্ধ্যার দিকে বরের বাড়ির লোকজন কনের বাড়িতে আসে। আপ্যায়ন ও খাওয়াদাওয়া শেষে রাত আটটার দিকে বিয়ে সম্পন্ন করতে কাজির অপেক্ষায় থাকেন দুই পক্ষের লোকজন। এ সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বিয়েবাড়িতে গিয়ে হাজির হন। কিন্তু তাঁর অনুরোধে বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হয়নি বর ও কনের পরিবার। কিছুক্ষণ পর জেলা প্রশাসক মঈনুল ইসলামের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বুলবুল আহমেদ গিয়ে হাজির হন ওই বাড়িতে। পরে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিয়েটি বন্ধ করেন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময়েও লোকসমাগম করে বাল্যবিবাহের এই আয়োজনের খবর স্থানীয় এক যুবক গণমাধ্যমকর্মীদের জানান। পরে তা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যানকে বিয়েটি বন্ধের জন্য অনুরোধ জানান। রাত আটটার দিকে চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে বিয়েবাড়িতে গিয়ে দুই পক্ষকে বিয়েটি বন্ধের অনুরোধ জানান। কিন্তু বর ও কনের লোকজন তা মানতে রাজি না হলে রাত সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলিশ নিয়ে হাজির হন।
ওই কর্মকর্তাও প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বর-কনেকে বাল্যবিবাহের কুফল সমন্ধে বোঝান। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসালে আদালতের কাছে বর-কনেসহ দুই পরিবার দোষ স্বীকার করে। প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবে না মর্মে আদালত দুই পক্ষের কাছে মুচলেকা আদায় করে বিয়েটি বন্ধ করেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বুলবুল আহমেদ প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিয়েতে অর্ধশতাধিক লোকের সমাগম হয়।
Comments are closed.