পিরিয়ড নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। আমরা সবাই জানি এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু আজ আফসোস নিয়ে বলতে হচ্ছে এই বিষয়টিই এখন নানা ভাবে নানা জন নানা দিকে ধাবিত করছে। কিছুদিন ধরে ফেসবুক এ একটা ট্রেন্ড চলতেছে। একদল ছেলে ও মেয়ে, মেয়েদের পিরিয়ড নিয়ে ইয়া লম্বা পোস্ট দিচ্ছে।
আমি বলবোনা তা খারাপ, কারণ যখন পিরিয়ড সচেতনতা নিয়ে কোনো পোস্ট পড়ি আমার নিজের ও ভালো লাগে,আমাদের মত আধুনিক পরিবারের মেয়েরা বিষয়টি বুঝলেও অনেক নিম্নবিত্ব এবং সাধারণ ঘরের মেয়েরা বিশেষ করে টিনেজাররা এটা নিয়ে সচেতন না হওয়ায় এগুলো তাদের জন্য উপকারী হবে। স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার বিষয়ে চাই পরিচ্ছন্ন ধারণা এবং মনোভাব ।
কিন্তু এটাও অনেকের সহ্য হলো না। আবার একদল ছেলে ও মেয়ে যারা পিরিয়ড নিয়ে পোস্ট দেয় তাদের ট্রল করা শুরু করলো। প্রকৃতপক্ষে সত্যি বলতে এতেও আমার কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা নেই। কিন্তু আমার আজকে একটা বিষয় খুব খারাপ লেগেছে। এক পর্যায়ে মনে হয়েছে হয়তো আধুনিকতার ছোয়ায় আমরা পিরিয়ড নিয়ে একটু বেশি ই ওপেন হয়ে গেছি।আমাদের চক্ষু লজ্জাও হচ্ছে না। আমরা ব্যবহার করা স্যানিটারি প্যাড যেখানে সেখানে ফালিয়ে দিচ্ছি।
আমরা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করাটা অনেক ভালোভাবে শিখে গেলেও ব্যবহৃত প্যাড কিভাবে কোথায় ফেলবো তা শিখতে পারি নি।আমাদের অসংখ্য ব্যার্থতার মধ্যে আরো একটি নাম যুক্ত হয়ে আমাদের অক্ষমতার লিস্ট লম্বা করছে। যেখানে নিজের পিরিয়ডই কেউ সহ্য করতে পারে না, সেখানে অন্যের ব্যবহার করা প্যাড রাস্তায় চলাচলের মধ্যে পড়লে বিরক্ত হওয়াটা অস্বাভাবিক না।এটি যেমন দৃষ্টিকটু তেমনি পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর।সুন্দর পরিবেশ অনায়াসে নোংরা করার শামিল।
এ থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে চাই সম্মিলিত প্রয়াস। স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার বিষয়ে চাই পরিচ্ছন্ন ধারণা এবং মনোভাব।ব্যবহৃত প্যাড একটি কাগজে মুড়ে ডাষ্টবিন বা ট্রাশবিনে ফেলে দেওয়া উচিত। একজন মেয়ে হিসেবে আমি সমাজের প্রতিটি মানুষকে বলতে চাই আসুন ভাই বোন বন্ধুরা পিরিয়ড এবং স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার নিয়ে লম্বা লম্বা পোষ্ট দিয়ে কিংবা তা নিয়ে ট্রল করে মজা না নিয়ে বরং সচেতনতা বৃদ্ধি করি। একটি সুন্দর,পরিচ্ছন্ন,সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই সম্মিলিত উদ্যোগ।বন্ধ হোক সমস্ত ট্রলিং আর যত্রতত্র ব্যবহৃত প্যাড ফেলে দেয়ার বদঅভ্যাস।
লেখাঃ নুরজাহান আক্তার