লেখাঃ জাজাফী
দুনিয়ার সব থেকে জ্ঞানীদের নামের তালিকা করলে সবার আগে যে নামটি চলে আসবে তিনি অবধারিত ভাবেই আইনস্টাইন।অন্য আরও অনেকের নাম আসলেও শুরুতে আমাদের মনে যে ছবিটি ভাসবে তিনি আইনস্টাইন ছাড়া আর কেউ হতেই পারে না।আমাদের ছোট্ট ছেলে মেয়েরা যখন বুদ্ধিদীপ্ত কোন প্রশ্ন করে কিংবা কোন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেয় তখন আমরা তুলনা করার জন্যও সেই আইনস্টাইনকেই বেছে নিই।আমরা বলি এইতো আমাদের ভবিষ্যতের আইনস্টাইন।যেমন ফুটবল খেলায় এখন ছোট্ট কেউ ভালো করলেই বলা হয় আগামী দিনের মেসি বা রোনালদো ঠিক তেমনি।আইনস্টাইনের মতই আরেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের কথা কিন্তু কেউ বলে না যে এই ছেলেটি বা এই মেয়েটি ভবিষ্যতের হকিং।
আইনস্টাইন ছিলেন মেনসার সদস্য।তাঁর আইকিউ কত ছিলো কারো জানা আছে? ১৬০!!! অনেকের মনে হতে পারে আইকিউ আবার মাপা যায় নাকি!! অবশ্যই মাপা যায়।বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে এটা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।তা প্রশ্ন আসতে পারে যে বিড়ালের গলায় ঘন্টিটা বাঁধে কে?
হ্যা সেই ঘন্টি বাধার দায়িত্বে যারা আছে তারাই মেনসা নামে পরিচিত। মেনসা হলো একটি প্রতিষ্ঠান যা আইকিউ পরিমাপ করে।বিশ্বের সব থেকে বেশি আইকিউ যাদের তারাই কেবল মেনসার সদস্য হতে পারে।মেনসার সদস্য তালিকার দিতে তাকালে আমরা দেখতে পাই আইনস্টাইনকে,স্টিফেন হকিংকে।
অনেকেই ভাবতে পারে বাপরে বাপ এত্তো আইকিউ কিভাবে কোথায় পাবো যে আইনস্টাইনের পাশে নাম লেখাবো!! তবে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো মেনসার সদস্যদের অনেকেই আছে যারা আইনস্টাইন এবং স্টিফেন হকিং এর চেয়েও বেশি আইকিউয়ের অধিকারী? এবং আইনস্টাইন আর হকিংয়ের চেয়ে যাদের আইকিউ বেশি তাদের মধ্যে বাংলাদেশীও আছে! যেমন আমাদের ইশাল মাহমুদ! বয়স মাত্র বার বছর।
এবার যে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা হচ্ছে মহারাণীর দেশে সেই দেশেই থাকে ইশাল আর তার বাবা মা এবং ছোট্ট ভাই।
আর সেই মহারাণী এলিজাবেথের দেশে প্রতি বছর “চাইল্ড জিনিয়াস” নামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় যার মাধ্যমে খুঁজে বের করা হয় ব্রিটেনের সব থেকে জিনিয়াস চাইল্ডকে।এবারেও হাজার হাজার প্রতিযোগি নাম লিখিয়েছিলো যার মধ্যে ছিলো আমাদের ইশাল মাহমুদ নামের ছোট্ট বন্ধুটি।যে কিনা আগে থেকেই মেনসার সদস্য।অসংখ্য জিনিয়াস প্রতিযোগিকে পাশকাটিয়ে ইশাল এখন সেরা পাঁচে।
ইশাল মাহমুদের বাবার নাম ফরহাদ মাহমুদ আর মা মমতাজ মাহমুদ।দুজনই নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকে।তাহলে ইশাল নামে আমাদের এই ক্ষুদে জিনিয়াসকে সময় দিতো কে? কার কাছে সে এতো জ্ঞান পেয়েছে অনুপ্রেরণা পেয়েছে? ইশালের আছে এক অসাধারণ মামা। যে মামা অক্সফোর্ড থেকে গ্রাজুয়েশান করেছে।মামার নাম ইমরান।ইশালের এই মামার কথা মনে করে আমরা বলতেই পারি মামা ভাগ্নি যেখানে জিনিয়াসগিরি সেখানে।
বিচারকদের সামনে দাড়িয়ে নির্বিকার ভাবে ইশাল একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বিচারকদের যেমন চমকে দিয়েছে তেমনি চমকে দিয়েছে হাজার হাজার টিভি দর্শকদের।ইশালের ঘরে গিয়ে আমরা দেখতে পাই অসংখ্য মেডেল সার্টিফিকেট,ক্রেস্ট। ইশালের ছোট্ট ভাইটি সেই সব ক্রেষ্ট মেডেল সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে কখনো কখনো বোনের মুখের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।এতোটুকু মানুষের এত্তো বুদ্ধি!!আচ্ছা বলাই হয়নি ইশালের আইকিউ কত? আইনস্টাইনের চেয়ে বেশি,স্টিফেন হকিংয়ের চেয়ে বেশি। হ্যা ইশালের আইকিউ ১৬২!!! পৃথিবীতে হাতে গোনা কিছু মানুষের আইকিউ হয় ১৬০ বা তার বেশি।
আমাদের আছে অসংখ্য ইশাল মাহমুদ।তাদের কেউ আমার আপনার ঘরেই বাস করে কেউ আমাদের পাশের বাড়িতে,পাশের স্কুলে।কিন্তু আমরা তা টের পাইনা।আমাদের ফুলবাগানে নেই বলে যে অন্য কোথাও নাম না জানা ফুল ফোটে না এমনতো নয়।পরিচর্যা পেলে সেই সব ফুল সুবাশ ছড়ায়,মুগ্ধ করে।একজন ইশাল মাহমুদ তার অক্সফোর্ড গ্রাজুয়েট মামার অনুপ্রেরণায় যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আমার আপনার পাশে যে সব ছোট্ট বন্ধু আছে তাদেরকেউ উৎসাহ দিলে তারা মেনসার সদস্য হতে না পারুক দারুণ কিছু করবে এটা নিশ্চিত।
এখন আমরা ছুটছি এ প্লাসের দিকে।যেন এ প্লাসই জীবনের সব।সবার কাছে একটা প্রশ্ন রেখে যেতে চাই। আচ্ছা আইনস্টাইন,স্টিফেন হকিং,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,জে কে রাউলিং, মার্ক জুকারবার্গ কি এ প্লাস পেয়েছিলেন? ধরে নিলাম সেই সময়ে এ প্লাস বলে কিছু ছিলো না কিন্তু অন্য কিছুতো ছিলো! আমাদের উচিত প্রতিটি শিশু কিশোর কিশোরীর পড়াশোনার ব্যাপারে আরো মনোযোগী হওয়া যেন তারাও ইশাল মাহমুদের মত আলোকিত হতে পারে,আলো ছড়াতে পারে।
আমরা আশা করতেই পারি আমাদের আছে অসংখ্য ইশাল মাহমুদ যাদের কেউ কেউ মেনসার সদস্য হতে পারে সঠিক পরিচর্যা পেলে।ছোটদেরবন্ধু এটুকু অন্তত বিশ্বাস করে।
লেখাঃ জাজাফী
Comments are closed.