লেখাঃ সুমাইয়া মিফরা—
সামিনের হাতে অনেক গুলো টাকা দেখে ঐশী বেশ অবাক হলো।আব্বু আম্মু নিশ্চই সামিনকে এতো গুলো টাকা দিবে না।সামিন ক্লাস ফাইভে পড়ে।বাবা মায়ের টাকার অভাব না থাকলেও এতো ছোট মানুষকে একশো দুইশো টাকার বেশি কোন বাবা মাই দেয়না।ঐশী নিজের একমাত্র ভাইয়ের পাশে গিয়ে বসলো।সামিনের সেদিকে খেয়ালই নেই।সে সমানে টাকা গুনে চলেছে আর ঐশী ওর হাতের দিকে তাকিয়ে আছে।গুনে গুনে বিশ হাজার টাকা!আচ্ছা টাকা গুলোকি তবে আম্মুই ওকে গোনার জন্য দিয়েছে?সামিনতো কদিন হলো বিশের ঘরের নামতাও শিখেছে।ঐশী জানতে চাইলো তোমার কাছে এতো টাকা কেন?কার টাকা?সামিন বললো সব আমার টাকা?আমার হাতে অন্যের টাকা থাকতে যাবে কেন?ঐশী ছোট ভাইয়ের চুল এলোমেলো করে দিয়ে বললো তাই বলে এতো টাকা?শেষে ঐশী কোন কথা না বাড়িয়ে আম্মুকে গিয়ে বললো আম্মু তুমি তোমার ছেলেকে একসাথে বিশ হাজার টাকা দিয়েছ কেন?ঐশীর কথা শুনে আম্মু বেশ অবাক হয়ে বললেন ফিজিক্স পড়তে পড়তে তোমার দেখি বেহাল দশা।বিশ হাজার টাকা আমি সামিনকে দিতে যাব কেন? আর তাছাড়া আমার কাছে অতটাকা আসবেইবা কোথা থেকে।
ঐশী তখন আম্মুকে সামিনের রুমে নিয়ে গেল। সামিন তখন টাকা গুলো সুন্দর করে গুছিয়ে ড্রয়ারে রাখছে।আম্মুও দেখলো সত্যিই সামিনের কাছে অনেক টাকা।তিনি মনে করলেন সামিনের বাবাই মনে হয় ওকে টাকাটা দিয়েছে।রাতে বাবা ফিরলে ঐশী বাবাকে বললো বাবা তুমি কেবল সামিনকেই ভালবাসো আমাকে একটুও বাসো না। এটা শুনে বাবা বললেন আমার রাজকন্যার মত মেয়েটা এটা কি বলে?আমি অবশ্যই আমাদের রাজকন্যাকে ভালবাসি।ঐশী গাল ফুলিয়ে বললো তাহলে তুমি সামিনকে বিশ হাজার টাকা দিলে আর আমাকে এক টাকাও দিলেনা কেন?ঐশীর কথা শুনে বাবা আশ্চর্য হয়ে বললেন কে বলেছে আমি সামিনকে বিশ হাজার টাকা দিয়েছি?ঐশীর আম্মু তখন বললো আমি আর ঐশী নিজে সামিনের হাতে বিশ হাজার টাকা দেখেছি। তুমি না দিলে অতোগুলো টাকা ও কোথায় পেলো?বাবা এবার সত্যি সত্যি আশ্চর্য হয়ে সামিনের দিকে তাকালেন।সামিন তখনো এক মনে খাচ্ছে।
বাবা তাকে প্রশ্ন করতেই সে বললো বাবা খাওয়াটা শেষ করে আমার রুমে আসো সব বলবো!! বাবা মা ঐশী কারো যেন তর সইছেনা। খাওয়া বন্ধ রেখেই সামিনের রুমে গেল। সামিন ড্রয়ার খুলে টাকাটা বাবার হাতে ধরিয়ে দিল।তার সাথে একটা লম্বা লিস্টও দিল। সেই লিস্ট পড়ে বাবা দেখলেন সেখানে বিভিন্ন সাইজের জামা ও প্যান্টের মাপ লেখা। বাবা জানতে চাইলেন এই লিস্ট দিয়ে কি হবে?সামিন বললো বাবা এই মাপের এতো গুলি জামা আর প্যান্ট আমাকে কিনে দিবা সে জন্যই টাকা গুলো দিয়েছি! বাবা কিছু না বুঝেই হো হো করে হেসে উঠলেন সাথে ঐশী আর আম্মুও হাসলেন।ঐশী বললো এতো জামা প্যান্ট তুই কয় বছরে পরে শেষ করবি?এ জন্যইকি কোনটা ছোট কোনটা বড় মাপের কিনতে বলছিস?সামিন শুধু দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
বাবা এবার সিরিয়াস হয়ে জানতে চাইলো এতো গুলো টাকা তুমি কোথায় পেলে?সামিন কোন কথা না বলে সবাইকে আলমারিটা খুলে দেখালো।যেখানে খুবযত্ন করে রাখা ছিল সাকিব আল হাসানের অটোগ্রাফ দেওয়া ব্যাট,মাশরাফি বিন মুর্তজার অটোগ্রাফ দেওয়া জার্সি আর জুয়েল আইচের অটোগ্রাফ দেওয়া একটা ডায়েরি আর বিভিন্ন দেশের ডাকটিকেটের একটা অ্যালবাম। বাবা মা ঐশী সবাই অবাক হয়ে দেখলো সেগুলোর কোনটাই নেই!তারা বিস্ময় নিয়ে জানতে চাইলো ও গুলো কোথায়?সামিন জানালো সব সে তার বন্ধুদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে এবং বিক্রি করার পর যে টাকা পেয়েছে সেগুলো মিলেই ওই বিশ হাজার টাকা।বাবা বললেন তোমার কত শখের জিনিষ বিক্রি করার কি দরকার ছিল?টাকা আমার কাছে চাইলেইতো দিয়ে দিতাম।সামিন মাথা দুলিয়ে বললো তুমি দিলে সেটা তোমার দেওয়া হতো কিন্তু আমারতো দেওয়া হতো না!বাবা মা বা ঐশী কিছুই বুঝলো না।সামিন আসলে তেমন কিছু বলেও নি।বাবা ওর কথা মত মাপে চল্লিশটা প্যান্ট আর চল্লিশটা শার্ট কিনে আনলো।
ঐশী সেগুলো দেখে বললো আগামী দশবছর সামিনের আর কোন কাপড় কিনতে হবেনা এমনকি ওর ছেলে মেয়েদেরকেও পরানো যাবে। বাবা মা দুজনেই ঐশীর কথা শুনে হেসে উঠলো।কিন্তু সামিন হাসলো না।সে খুব যত্ন করে কাপড় গুলো নিজের রুমে নিয়ে রাখলো।বাবা সামিনকে খুব ভালবাসেন তাই ওর এই পাগলামীতে তিনি কিছু বললেন না।অবশ্য অবাক হলেন ছেলের কান্ড দেখে।ঈদের আগেরদিন বাবা বিকেলের আগেই চেম্বার থেকে ফিরে আসলেন।বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে আম্মু আর ঐশীর সাথে ঈদের দিন বেড়ানোর পরিকল্পনা করছিলেন এমন সময় দেখলেন প্রায় মিছিলের মত এক দল ছেলে মেয়ে বাড়িতে ঢুকেছে যাদের পরনে নোংরা ছেড়া জামা কাপড়।এক দুজনের পরনে শুধু ছেড়া প্যান্ট আছে কিন্তু গায়ে কোন কাপড় নেই।আম্মু বললেন এই এই তোমরা কারা?কেন এসেছ?যাও যাও এখান থেকে। ঠিক তখন সামিন বেরিয়ে আসলো ওর রুম থেকে। ওর হাতে একটা কাগজ।
সে আম্মুকে বললো ওদের তাড়িয়ে দিওনাতো আম্মু! আমিই ওদেরকে আসতে বলেছি!সামিনের কথা শুনে বাবা মা ঐশী থ হয়ে গেল।তারা আশ্চর্য চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলো।সামিন সেসবে গুরুত্ব না দিয়ে হাতের কাগজ থেকে এক একজনের নাম বলতে লাগলো আর সামনের নোংরা পোষাকের বাচ্চারা হাত উচু করতেলাগলো। একে একে উনচল্লিশজনের হাত উচু হলো।বাকি একজন নাকি অসুস্থ্য বলে আসতে পারেনি।সামিন আবার রুমে ফিরে গেল এবং একে একে বাবার কিনে আনা কাপড় গুলো থেকে একটা একটা করে সবাইকে দিয়ে দিল।বাচ্চা গুলো খুশি মনে নতুন কাপড় নিয়ে ফিরে গেল।এটা দেখে আব্বু আম্মু আর ঐশীর চোখে পানি চলে আসলো।তারা এক সাথে সামিনকে বুকে জাড়িয়ে ধরলো।সামিন তাদের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো বাবা আমাকে একটু যেতে হবে,জাহিদ নামের যে ছেলেটি অসুস্থ্য ওর কাপড়টা ওদের বস্তিতে গিয়ে দিয়ে আসতে হবে।ঐশী বললো আমিও তোমার সাথে যাবো!আব্বু আর আম্মুও বললো আমরাও তোমার সাথে যাবো। এবার খুশি হলো সামিন।আব্বু আম্মু আর আপুর গলা জড়িয়ে ধরে বললো চলো তাহলে।পরদিন সকালে ঈদের নামাজ থেকে ফিরে সারা এলাকা ঘুরে দেখা গেল দিনাজপুর শহরে এই প্রথম সবার জন্য ঈদ এসেছে।সেই ঈদটা এনেছে ছোট্ট সামিন।
সুমাইয়া মিফরা
একাদশ শ্রেনী
দিনাজপুর সরকারী কলেজ
দিনাজপুর
২৫ জুন ২০১৬
Лучшие слоты на деньги
gama casino регистрация
Hi, everything is going perfectly here and ofcourse every one is sharing facts, that’s in fact good, keep up writing.
casino online usdt
WOW just what I was searching for. Came here by searching for %keyword%
luckyland slots on web
What a information of un-ambiguity and preserveness of valuable familiarity regarding unexpected feelings.
casino not on gamstop low deposit