ফুটবলের অগণিত ভক্ত আছে আমাদের দেশে।বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় সেটা দেখেছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশের আকাশে যত পতাকা উড়েছে সারা পৃথিবী মিলেও তার অর্ধেক পতাকা ওড়াতে পারেনি কোন দিন।কিন্তু সেই বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের কোন পাত্তা নেই আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে।আমাদের এ নিয়ে হয়তো আক্ষেপের সীমা নেই। সেই আক্ষেপ কিছুটা ঘুচিয়ে দিয়েছে আমাদের কিশোরীরা।নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে বাংলাদেশের কিশোরীরা। কিশোরী ফুটবলাররা প্রতিনিয়ত জয়ের নিশান ওড়াচ্ছে। এক দুই গোল নয় বরং প্রতিপক্ষের জালে তারা জড়াচ্ছে গন্ডায় গন্ডায় গোল। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের হাতে উঠবে অসাধারণ সব ট্রফি যা আমাদের অর্জনের শোকেসকে পরিপুর্ণ করবে।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ আরব আমিরাত। বাংলাদেশী কিশোরীরা এমন ভাবে খেলেছে যে মনেই হয়নি তাদের প্রতিপক্ষ মাঠে আছে। একের পর এক গোলবন্যায় দিশেহারা হয়ে গেছে আরব আমিরাতের মেয়েরা। টানা তিন জয়ে এখন বাংলাদেশের পয়েন্ট ৯। অন্যদিকে টানা তিন ম্যাচ হারল আরব আমিরাত। খেলা শুরু হতে না হতেই চারদিকে রব ওঠে গোওওল। খেলার ৬ মিনিটের মাথায় গোল দিয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ২৫ মিনিটে তহুরার জোরালো শট ক্রস বারে বাধা পাওয়ার পর ৯ মিনিটের ঝড়ে আনুচিংয়ের হ্যাটট্রিকের জন্ম। ২৭ মিনিটে এই ম্যাচের অধিনায়ক আঁখি খাতুনের ক্রস থেকে আনুচিংয়ের হেড পোস্টে লেগে জড়িয়ে যায় জালে। ৩৪ মিনিটে আনাই মোগিনীর ক্রস থেকে আনুচিংয়ের আরেকটি দুর্দান্ত হেডে স্কোরলাইন হয় ৩-০। দুই মিনিট পর হ্যাটট্রিক গোলটি এক কথায় অনবদ্য। পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে আনুচিংয়ের দর্শনীয় ব্যাক ভলি চলে যায় আমিরাতের জালে।
দুর্দান্ত খেলতে থাকা বাংলাদেশের সামনে পাত্তাই পাচ্ছিলো না আরব আমিরাত। বিরতির শেষ মুহূর্তে এসে আবার গোল খায় আমিরাত। তবে এবার আত্মঘাতী। মনিকা চাকমার কর্নার হেড করে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালে জড়িয়ে দিয়েছেন আলিয়া হুমায়েদ। বিরতির পরেও নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখে বাংলাদেশ। তবে বিরতির পর ২ টির বেশি গোল দিতে পারেনি বাংলাদেশ। আগামী রবিবার ‘এফ’ গ্রুপের সেরা হওয়ার লড়াইয়ে ভিয়েতনামের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আমরা আশা করতেই পারি সেই ম্যাচেও বাংলাদেশের মেয়েরা তাদের আধিপত্য ধরে রাখবে। এবং চারদিকে নানা কষ্টের ভীড়ে এটি হয়ে উঠবে বাঙ্গালীর আনন্দের উপলক্ষ্য।
Comments are closed.