আজ আমরা এমন এক বন্ধুকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই যে খুব অল্প বয়স থেকেই নানা ভাবে নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।যে বয়সে অন্যরা কম্পিউটারের মাউস,কীবোর্ড চিনতে শেখেনি সেই বয়সে সে রীতিমত প্রোগ্রামিং করছে। শুধু শখের প্রোগ্রামিং নয় বরং প্রতিযোগিতামুলক আয়োজনে সে অন্যদেরকে অনায়াসে দিব্যি হারিয়ে দিয়ে মাথায় বিজয়ের মুকুট পরছে।যার কথা বলছি সে আমাদের প্রিয় থেকে প্রিয় ছোট্ট বন্ধু অনন্য যারিফ আকন্দ।অনন্য যারিফ আকন্দ গ্রহ নয় বরং একটি নক্ষত্রের নাম।
মানিকগঞ্জে বেড়ে ওঠা অনন্য সত্যিই দিন দিন মানিকে পরিণত হচ্ছে। ওর এক একটি সাফল্যের কথা বলে শেষ হবেনা। আজ আমরা শুনবো একই সাথে তিনটি সেরার গল্প। গত ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ‘আইসিটি দিবস’ উপলক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলায় আয়োজিত প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছিল অনন্য।ওকে দেখে সবাই ভেবেছিল এই এত্তোটুকু পিচ্চি ছেলে সে কি করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করবে? তারা হয়তো মনে মনে ভেবেছিল ওকে প্রশ্ন করে জেনে নিতে হবে এই পুচকে তুমি কম্পিউটারের কি বুঝ? গেমস খেলতে পারো? মাউস ধরতে পারো? কিন্তু সেই সব প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়নি ও।
প্রতিযোগিতা শুরু হলে আমাদের ছোট্ট অনন্য একে একে নিবিষ্ট মনে সমস্যার সমাধান করতে থাকে এবং ফলাফল ঘোষণা হলে বিচারকমণ্ডলী সহ অন্যরা খুবই অবাক হয়ে দেখে যে পুরো জেলায় তাক লাগিয়ে প্রথম হয়েছে অনন্য নামের এক বিস্ময়কর বালক।এটি ছিল অনন্যর জীবনে একটি অনন্য ঘটনা কেননা সে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একই সাথে তিনধরনের প্রথম হয়েছে। সে মানিকগঞ্জ জেলায় প্রথম হয়েছে, সে তার নিজের জীবনে প্রোগ্রামিং করে প্রথম হয়েছে আর অনন্যতো অনন্যই তাই সেখানেও সে প্রথমই হয়েছে। অনন্যর ভাষায় “ট্রিপল ফাস্ট”!!
প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।আজ সেটার পুরস্কার তুলে দিলেন উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার জনাব মোঃ আব্দুল মতিন (উপ-সচিব) । উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার জনাব সজীব চৌধুরী ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সহকারী নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার জনাব রায়হান কায়সার সানী ।
গেলো বছর দ্বিতীয় শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করায় অনন্য পুরস্কৃত হয়েছিল। পুরস্কার প্রদান করছেন মানিকগঞ্জ জেলার সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপসচিব জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার
আমাদের অনন্যর একটা ফেসবুক একাউন্ট আছে অনন্য যারিফ আকন্দ নামে। আমরা প্রায়শই অনন্যর কীর্তিগাথার ছবি দেখতে পাই ওর ফেসবুকে। বড়রা সব সময় বলে বাবা মা পরিবারের আদর পেয়ে পেয়ে বাচ্চারা বাদর হয়ে যায় কিন্তু বড়দের সেই কথাকে ভুল প্রমান করে আমাদের অনন্য প্রতিনিয়ত তার আলো ছাড়িয়ে যাচ্ছে।অনন্য যারিফ আকন্দ গ্রহ নয় বরং একটি নক্ষত্রের নাম।গ্রহের নিজস্ব কোন আলো থাকেনা সে অন্যের আলো ধার করে নিয়ে আলো ছড়ায় কিন্তু আমাদের অনন্যর নিজস্ব আলো আছে। সে সেই আলো প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে দিচ্ছে।
ছোটদেরবন্ধুর পক্ষ থেকে অনন্য যারিফ আকন্দকে অনেক অনেক অভিনন্দন ও ভালবাসা জানাই। ওর আরো আরো সাফল্য কামনা করি। ছোটদেরবন্ধু সব সময় বিশ্বাস করে শিশু কিশোর কিশোরীদের ভালোকাজে উৎসাহী করে তুলতে পারলে তারা একদিন আপন আলোয় চারদিক আলোকিত করতে পারবে যেমন আমরা অনন্যকে দেখেছি। এর আগে আমরা রাশিকের কথা জেনেছি যে এই বয়সেই মিস্ট্রি অব দ্য সুপার ন্যাচারাল বই লিখে বিশ্ব ব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। আমরা দশ বছরের তুর্যকে দেখেছি তার প্রতিভা দিয়ে বিশ্ব জয় করে আসতে।
আমাদের ক্ষুদে বন্ধুদের কৃতীত্বের কোন শেষ নেই। কদিন আগেই আমরা আমাদের সাত বছর বয়সী বন্ধু প্রিয়র প্রতিভার কথা তুলে ধরেছি। ঠিক তেমনি ভাবে আজ অনন্যর কথা তুলে ধরতে পেরে আমরা আনন্দিত। এদেশের অগণিত মেধাবী প্রতিভাধর ছোট্ট বন্ধুদের সাফল্যের কথা,অধিকারের কথা জোর দিয়ে তুলে ধরার স্বপ্নে বিভোর ছোটদেরবন্ধু। ছোটদেরবন্ধু আজীবন ছোটদের জন্য ভালোবাসা বিলিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছে। আপনার আসেপাশে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখা ছোটদের কথা লিখতে পারেন আপনিও।ছবি সহ আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] এই ইমেইলে।আমরা কৃতজ্ঞতা সহ সেটা প্রকাশ করবো।
Comments are closed.