spot_img
More
    Homeবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিহরিপদ কাপালি যিনি একটি ধানের জাত আবিস্কার করেছিলেন

    হরিপদ কাপালি যিনি একটি ধানের জাত আবিস্কার করেছিলেন

    হরিপদ কাপালি যিনি একটি ধানের জাত আবিস্কার করেছিলেন।নামটি অতি সাধারণ হয়েও অসাধারণ।আধুনিক কালের অনেকেই হয়তো তার নামই শোনেনি আবার অনেকে অনুমান করে বলবেন তিনি নিশ্চই কোন উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র।হরিপদ নামটাতো গল্প উপন্যাসের সাথেই সব থেকে বেশি যায়।হ্যা সাধারণ অর্থে বলাই যেতে পারে তিনি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র।তবে সেই উপন্যাস কাগজে লেখা কোন উপন্যাস নয়।বরং এটি বাস্তব জীবন নামের উপন্যাসের এক মহান চরিত্র।আজকাল অনেকেই খ্যাতি প্রতিপত্তির আশায় কত কিছুই না করছে।ইউটিউব চ্যানেলে কত রকম ভিডিও আপলোড করে বিখ্যাত হতে চাইছে কিন্তু সেই বিখ্যাত হওয়ার চেয়ে শতগুন বেশি সম্মানের কাজ করেছেন হরিপদ কাপালি।

    Image result for হরিপদ কাপালি

    লেখাপড়া না জানা এই কৃষক একটি ধানের জাত আবিস্কার করেছেন।সেটির নাম হরিধান।উইকিপিডিয়াতে সার্চ দিলেই দেখতে পাবে হরিধান নামে একটি নতুন জাতের নাম যা আবিস্কার করেছেন এই হরিপদ কাপালি।১৯২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

    হরিধান আবিস্কারের গল্পটি ছিলো এরকম: ১৯৯২ সালের এক সকালে তিনি ধানক্ষেতে গিয়েছিলেন দান কাটবেন বলে।গিয়ে দেখলেন একটি ধানের গাছ সম্পুর্ন আলাদা।তিনি বেশ অবাক হলেন বিশেষ করে সেই ধানের গাছে যে ধান হয়েছিল তা ছিল অন্যগুলোর থেকে আলাদা এবং ওই ছড়াগুলো ছিল পরিপুষ্ট ধানে পরিপুর্ণ।তিনি সেই ছড়াটি আলাদা করে রাখলেন তার পর যখন আবার ধান চাষের সময় আসলো তিনি সেগুলো আলাদা করে চারা দিলেন।চারা হওয়ার পর সেটা আলাদা অংশে রোপন করলেন দেখা গেল বাম্পার ফলন হয়েছে।এভাবেই দিনের পর দিন তিনি সেই ধানের অংশ বাড়াতে লাগলেন। এক সময় সারা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লো হরিপদ কাপালির এই বিশেষ ধানের কথা।ফলে চারদিকের কৃষকেরা তার কাছে আসতে থাকলো তার থেকে এই ধানের বীজ সংগ্রহ করতে।১৯৯৪ সালে ঝিনাইদাহ অঞ্চলে এই ধানের ব্যাপক চাষ হওয়া শুরু হলো এবং হরিপদ কাপালির নাম ছড়িয়ে পড়লো।

    পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে ধানটি নিয়ে বিভিন্ন দৈনিকে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ১৯৯৬ সালে টেলিভিশনের সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার হলে বিষয়টি সারা দেশে আলোচিত হয়। পোকামাকড়, ক্ষরা ও অতিবৃষ্টি সহিষ্ণু এই জাতের ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ দেখে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বিশেষ ধরনের এই জাতের ধান চাষের ওপর ছাড়পত্র দেয়। এই ধান উদ্ভাবনের জন্য হরিপদকে বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষি সংগঠন সম্মাননা ও পুরস্কার দেয়। নবম ও দশম শ্রেণির কৃষি শিক্ষা বইতে হরিপদ কাপালীর কথা অর্ন্তভুক্ত করা হয়। নিজের উদ্ভাবিত এ ধানের নামকরণও হরিপদ কাপালীর নামে হরি ধান করা হয়।Related image

    হরিপদ কাপালী ২০১৭ সালের ৬ জুলাই ঝিনাইদহের আসাননগর গ্রামে বার্ধক্যজনিত কারণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৫ বছর।

    একজন অক্ষরজ্ঞানহীন কৃষিবিজ্ঞানী ছিলেন হরিপদ কাপালি।তার অবদানের কথা এই দেশ কোনদিন ভুলবে না।তাই বলা হয়ে থাকে যা কিছু ব্যতিক্রমী দেখবে তাকে আলাদা করে রাখবে এবং তা নিয়ে আরো বেশি ভেবে দেখবে নিশ্চই এর মধ্যে কল্যাণ নিহীত রয়েছে।

    হরিপদ কাপালির মত আমাদের দেশে ছড়িয়ে আছে আরো কত নাম না জানা ব্যক্তি যারা নানা ভাবে অবদান রেখে চলেছে।কারো চোখে এমন কোন মানুষ থাকলে লিখে জানাতে পারেন আমাদেরকে।আমরা সেটা সানন্দে ছাপাবো। এমনকি কোন কিশোর কিশোরীও যদি হয় তাহলে তাদের কথাও লিখুন অনায়াসে। লেখা পাঠান [email protected] এই ইমেইলে।সাথে রিলেটেড ছবি থাকলে দিতে পারেন।

    ছোটদেরবন্ধু
    ছোটদেরবন্ধুhttps://www.chotoderbondhu.com
    সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখতে দেখতে জীবনের এক একটি দিন পার করা।সেই ধারাবাহিকতায় ছোটদেরবন্ধু গড়ে উঠছে তিল তিল করে।
    RELATED ARTICLES

    16 COMMENTS

    Comments are closed.

    Most Popular