শেষ গল্প । ২০১৯ সাল। সবুজ শ্যামল একটি দ্বীপ। চারপাশে গভীর ব্যস্থতা। আজ সমুদ্রও যেন খুব ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার মধ্যে উদাস মনে আমি ফুটপাত দিয়ে হাঁটছি।ঠিক এই সময়ে বসের ফোন এলো। কল ধরে কানে দিলাম। বস বিনা ভূমিকায় বলল, এক সপ্তাহের মধ্যে সেই গল্পকারকে খুজে বের করতে না পারলে এই গোয়েন্দা বিভাগে তোমার আর জায়গা নেই। কল কেটে দিল। এই নিয়ে তিনবার একই কথা বলেছে বস। ফোন পকেটে রাখতেই চোখে পড়লো পাশের গাছে সেই নিখোজ গল্পকারের আরেকটি গল্প। এই গল্পটির কোনো তুলনাই হয় না। এতো অসাধারণ গল্প কোনোদিন কোনো লেখকের বই এ পড়িনি।
কে এই রহস্যময় গল্পকার? কেন সে শহরের দেয়ালে দেয়ালে, গাছে গাছে খোদাই করে গল্প লেখে? এতো অসাধারণ গল্প তার মাথায় এলো কী করে? কেন সে নিজেকে প্রকাশ করে না? সে কোথায় লুকিয়ে আছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুজতেই আমরা বের হয়েছি। কিন্তু এখনো খোজ পাওয়া যায় নি। জানতে পারলাম এই অসাধারণ গল্প পড়ে প্রধানমন্ত্রী সেই গল্পকারের জন্য পুরষ্কার ঘোষণা করেন। এই শহরের প্রতিটি মানুষ মুগ্ধ সেই নিখোঁজ ব্যক্তির গল্প পড়ে।
বেশ কয়েকদিন কেটে গেল। হাল প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। এখন রাত ১১টা। এক সপ্তাহের মধ্যে গল্পকারকে খুজে বের করতে হবে। কেলেন্ডারে দিন কাটতে গিয়ে দেখলাম আজই সপ্তাহের শেষ দিন। একটি টর্চ লাইট নিয়ে খুঁজতে বের হলাম সেই রহস্যময় ব্যক্তিকে।
এখন রাত ১টা। বাড়ি থেকে এখন আমি অনেক দূরে। ময়লার পচা গন্ধ এখন আমার নাকে এসে লাগলো। চারপাশ অন্ধকার। টর্চলাইটের আলোতে দেখলাম চারদিকে অনেক ময়লা আবর্জনা। মাঝখানে একটি ভাঙা দেয়াল। সেই দেয়ালে একই হাতের লেখায় লেখা- “শেষ গল্প”
তারপ নিচে একটি পুরনো ঠিকানা। আমার জানা মতে ঠিকানার এই শহরটি এখন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। দ্রুত রওনা হলাম সেই ঠিকানায়। এখন ভোর চারটা। টর্চলাইটের চার্জ চলে গেছে। দেখতে পেলাম অনেক বছরের পুরোনো একটি গাছ। তার পাশে একটি মরা নদী। সূর্য উদয় হচ্ছে। সূর্যের হাল্কা আলোতে পড়লাম সেই গাছটিতে লেখা-
“মৃত্যু- ১৯৬৫”
গাছটির নিচে একটি মানুষের কবর।
লেখাঃ নাবিহা সাহলা ; চতুর্থ শ্রেণী
প্রতিষ্ঠান: মোহাম্মাদপুর প্রিপারেটরী স্কুল এন্ড কলেজ
অনুর্ধ্ব আঠারো লেখক সন্ধান; পুরষ্কারপ্রাপ্ত ছোটগল্প ; প্রাথমিক বিভাগ
আরো পড়ুনঃ আমি বৃক্ষ বলছি