উইলিয়াম অস্কার একবার বলেছিলেন, মানুষের প্রধান তিন শত্রু হলো জ্বর, যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ। আর তাঁর মতে জ্বরই সম্ভবত বেশি কষ্টদায়ক ও ভয়ানক।
শিশু বয়সে জ্বর হলো সবচেয়ে বেশি দেখা যাওয়া উপসর্গ, যে কারণে মা-বাবা ও অভিভাবকেরা বেশি উদ্বিগ্ন থাকেন এবং চিকিৎসার জন্য সন্তানকে নিয়ে আসেন।
জ্বর তখন বলা হয় যদি মুখে নেওয়া তাপমাত্রা ৩৭.৬০ সেন্টিগ্রেডের বেশি, পায়ুপথে নেওয়া তাপমাত্রা ৩৮.০০ সে.-এর বেশি, বগলের নিচে নেওয়া তাপমাত্রা ৩৭.৪০ সে.-এর বেশি হয়।
শিশুর দেহে তাপমাত্রা ৩৬.৮ ও ৪০ সে. (৯৮.২ ফারেনহাইট) এর মধ্যে বিরাজ করে। তার সর্বনিম্ন রূপ থাকে ভোর ৬টায় (৩৭.২০ সে. বা ৯৮.৯০ ফারেনহাইট), আর সর্বোচ্চ পাওয়া যায় বিকেল ৪টায় (৩৭.৭০ সে বা ৯৯.৯ ফারেনহাইট)
শিশুর জ্বর হলে সঙ্গে উপসর্গ থাকে: কাঁপুনি, মাংসপেশিতে ব্যথা, শিরঃপীড়া, ক্ষুধামন্দা, বেশি ঘুম, ক্লান্তি, জলতেষ্টা ও প্রস্রাব কমে যাওয়া।
জ্বরের সঙ্গে যেসব লক্ষণ মেলে: দ্রুত হৃৎস্পন্দন—প্রতি ১ ডিগ্রি সে. বাড়তি তাপমাত্রার জন্য মিনিটে ১০ বিট বেশি হৃৎস্পন্দন হার বাড়ে, দ্রুত শ্বাস—প্রতি ১ সে. বাড়তি তাপমাত্রার জন্য শ্বাস হার বাড়ে মিনিটে ২.৫, তবে নিউমোনিয়া ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত জ্বরে এই হার হয় ৩.৭, জ্বরের প্রথম দিকে রক্তচাপ বাড়ে, তবে দীর্ঘস্থায়ী জ্বরে তা পড়ে যায়।
জ্বর প্রশমনে সাধারণ ব্যবস্থাপনা: শিশুকে আলো-বাতাসপূর্ণ ঘরে রাখা। দেহের বেশি কাপড়-চোপড়, কাঁথা-কম্বল সরিয়ে নেওয়া, বেশি বেশি তরল খাবার ও জলপান, অত্যধিক কায়িক শ্রম পরিহার করা, ট্যাপের জল, গরম জল বা ঠান্ডা জলে স্পঞ্জিং এ জ্বরের প্রথম ৩০ মিনিটে কার্যকর থাকে বেশি, যদিও কোনো কোনো গবেষণা তথ্যে এর মূল্য নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জ্বরে লাগবে ওষুধ: যদি জ্বর ১০১ ফারেনহাইটের বেশি, জ্বর-খিঁচুনির শিশু রোগী হলে, কাঁপুনি জ্বর দেখা দিলে ও শিশু হৃদরোগী হলে।
১. প্যারাসিটামল মুখে ১৫ মি. গ্রাম/কেজি/ডোজ এতে ৩০ মিনিটের মধ্যে জ্বর নামে, ২ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকে, আবার ৩-৪ ঘণ্টা পর দেখা যায়।
২. আইবুপ্রুবেন: ৫-১০ মি. গ্রাম/কেজি/ডোজ
৩. মেফেনেমিক এসিড: ৪-১২ মি. গ্রাম/কেজি/ডোজ।
Comments are closed.