“ডাকঘর” শুধু একটি সাদামাটা নাম নয় বরং এটি আমাদের আত্মার আত্মীয়।ডাকঘর নামটি শুনলেই মনে হয় প্রিয়জনের ছোয়া লাগা চিঠি বুঝি এই এলো আমাদের হাতে।ডাকঘরের জন্য তাই আমাদের অনেক টান।এখন ফেসবুক টুইটার আর ইমেইল ইন্টারনেটের যুগে বাস্তবের ডাকঘর হারিয়ে যেতে বসেছে।তাহলে আমরা কেন আজ ডাকঘর নিয়ে আলোচনায় আসলাম? এর বড় একটি কারণ আছে।আমরা অন্যরকম এক ডাকঘর নিয়ে আজ শুনবো জানবো কথা বলবো।এই ডাকঘর চিঠি বিলি করেনা বরং বিলি করে আনন্দ আর ভালোবাসা।তাই ছোটদেরবন্ধু তাদেরকে সম্মান দেখিয়ে ডাকে ভালোবাসার ফেরীওয়ালা।মমতাহীন এই পৃথিবীর আনাচে কানাচে চলছে শিশু কিশোর কিশোরী হত্যা নিযার্তন।যেন সবাই ভালোবাসতে ভুলে গেছে।
ফিলিস্তিন,ইরাক,চেচনিয়া,সিরিয়ায় আমরা দেখেছি অসংখ্য শিশু কিশোরের অকালে হারিয়ে যাওয়া।যারা ছিল আমাদের পৃথিবীর ফুল স্বরুপ।কিছু খারাপ মানুষের কারণে তারা হারিয়ে গেছে।আমাদের চারপাশে আমরা অগণিত শিশু কিশোর কিশোরীকে দেখি পথে পথে ঘোরে।ওদের থাকার যায়গা নেই,দুবেলা দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা নেই।দিন শেষে ওরা রাতে কোথায় ঘুমাবে কি খাবে তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই।আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ওদেরকে টোকাই বলে নয়তো পথশিশু বলে।কিন্তু আমরা সেই টোকাই ও পথশিশুদেরকে অন্য নামে চিনি।ছোটদেরবন্ধু তাহমিদ হোসাইন অন্ত জোর দাবী জানিয়েছে ওদেরকে কোন ভাবেই পথশিশু বলা যাবেনা বরং বলতে হবে সুবিধাবঞ্চিত শিশু।তার কথায় যুক্তি আছে। সে বলেছে ওরা পথে থাকে বলেই যদি ওদেরকে পথশিশু বলতে হয় তবে আপনার সন্তান ঘরে থাকে তাকে ঘর শিশু বলুন। এর বাইরে আমাদের আরেকটি নাম দিয়েছে অন্য একদল বন্ধু।তারা ওদেরকে নাম দিয়েছে নগরফুল।নগরফুল একটি সংগঠন।
এতো কিছু বলতে গিয়ে আমরা ডাকঘরকে পিছনে ফেলে এসেছি।এবার আসি ডাকঘরের কথায় যারা চিঠি বিলি না করে ভালোবাসা বিলি করে।ভালোবাসা ছড়িয়ে দেয় চারদিকে।এটি একটি সংগঠন। সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানোর এবং নূন্যতম অধিকার নিশ্চিতকরণের অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে “ডাকঘর”। এমন উদ্যোগে সকল মানুষ যেন অংশীদার হয় এই প্রত্যাশা রাখে “ডাকঘর”। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে মজার কিছু সময় কাটাতে গত ২০-০৫-২০১৮ তারিখ চট্টগ্রাম এর ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে ‘ইফতার বিতরণী’ অনুষ্ঠান করে ‘পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (১৫ তম ব্যাচ)’ এবং “ডাকঘর” সংগঠন।উক্ত আয়োজনে “নগরফুল” সংগঠন এর কিছু সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।সকলের উপস্থিতি এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান টি সম্পন্ন হয়। বাচ্চারা ছড়া,কবিতা,গান,কৌতুক,ধাঁধাসহ নানা ধরনের খেলায় অংশগ্রহণ করে। পরিশেষে ইফতার গ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।আমরা ছোটদেরবন্ধু পরিবারের পক্ষ থেকে ডাকঘরকে জানাই সাধুবাদ এবং ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।তাদের এ আয়োজন ছড়িয়ে পড়ুক সারা দেশে।সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই নগরফুলকে যাদের একাংশ শরীক হয়েছিল এই সুন্দর আয়োজনে।
ছোটদেরবন্ধু সব সময় চায় এই সব ভালোকাজের মানুষদের পাশে থাকতে এবং তাদের কথা সারা দেশ সারা বিশ্বে জানিয়ে দিতে।সুন্দর আগামীর স্বপ্নে বিভোর হয়ে এ অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে সেই প্রত্যাশা সবার কাছে।আপনার পাশে ছড়িয়ে থাকা সেই সব ভালোমানুষ সেই সব কিশোর কিশোরী মেধাবী এবং অবহেলীতদের কথা লিখে জানান আমাদেরকে। আমরা তা আন্তরিক ভাবে প্রচার করবো।পরিশেষে ডাকঘর এবং নগরফুলকে ধন্যবাদ দিয়ে জানাতে চাই আপনারা আপনাদের প্রতিটি আয়োজনের কথা ছবি সহ আমাদের লিখে জানান আমরা নিশ্চই ভালোবাসার সাথে সেটা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেব।সমাজের বিত্তবানদের উচিত ভালোকাজে পাশে থাকা।আসুন সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখি এবং সেই স্বপ্নকে সত্যি করি।
লেখাঃ জাজাফী
Comments are closed.